বিশ্ব বসতি দিবস আজ

প্রকাশিত: ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২১

বিশ্ব বসতি দিবস আজ

Manual6 Ad Code

ঢাকা, ০৪ অক্টোবর ২০২১ : আজ বিশ্ব বসতি দিবস। জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব বসতি দিবস পালন করা হয়। সংস্থাটির সাধারণ পরিষদ ১৯৮৫ সালে এ দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৮৬ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।

Manual6 Ad Code

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্ব বসতি দিবস পালন করা হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্টে মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বলে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য দেশ গঠনে পরিকল্পিত নগরায়নের বিকল্প নেই।
৪ অক্টোবর ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও বাংলাদেশে ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ পালনের উদ্যোগকে রাষ্ট্রপতি স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, এবছর বিশ্ব বসতি দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নগরীয় কর্মপন্থা প্রয়োগ করি কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি’। বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণের ফলে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উষ্ণতার যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চল। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবারের প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় পরিকল্পিত নগরায়নের পাশাপাশি গ্রীনহাউজ গ্যাসসমূহের নিঃসরণ কমানো অত্যন্ত জরুরী।
রাষ্ট্রপতি বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের পথ ধরে বাংলাদেশ আজ সারা-বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশের শহরগুলোও দ্রুত বদলে যাচ্ছে। শহর এলাকায় জনঘনত্ব যেমন বেড়েই চলেছে, তেমনি বেড়ে চলেছে যানবাহন, ভবন এবং যন্ত্রপাতি থেকে কার্বন নিঃসরণের মাত্রাও। মেগা শহরের পাশাপাশি জেলা, উপজেলায় পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আধুনিক যুগের বাস্তবতাকে সামনে রেখে সরকার ন্যাশনাল সোলার এনার্জি একশ্যন প্ল্যান : ২০২১-২০৪১’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও ঢাকা শহরে গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণের অন্যতম প্রভাবক ‘যানজট’ নিরসনে মেট্রোরেল প্রকল্প, জেলা-উপজেলা শহরে জলবায়ু-সহিষ্ণু ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এবং ঢাকা শহরে ‘আরবান রেজিল্যান্স’ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। অচিরেই বাংলাদেশে বিদ্যুতের কার্বনমুক্ত উৎস হিসাবে রূপপুরে পারমাণবিক শক্তির উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে।
আবদুল হামিদ বলেন, হাইড্রোকার্বন ভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তির মতো বিকল্প উৎসের সুষ্ঠু ব্যবহারে আরো উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি আশা করেন, এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলো সমন্বিত উদ্যোগ অব্যাহত রাখবে।
তিনি বিশ্ব বসতি দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Manual5 Ad Code

প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন-যাত্রার মানের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সরকার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
আজ ৪ অক্টোবর সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নদী ভাঙনে বাস্তুচ্যুত অসহায় ও বস্তিবাসীসহ দেশের গৃহহীন-ভূমিহীনদের ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’ এর মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদ এবং ১৮ক এর আলোকে নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবন যাত্রার মানের বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করছে। বাংলাদেশের কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না, ইনশাল্লাহ।”
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সুবিধা ৮ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে অনুশাসন দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে সরকারি চাকুরিজীবীদের আবাসন সুবিধা ইতোমধ্যে ২৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। চলমান প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়িত হলে ২০২৩ সালে এ আবাসন সুবিধা ২৮ শতাংশে উন্নীত হবে। এ সকল বহুতল আবাসন প্রকল্পে জমির ন্যূনতম দুই তৃতীয়াংশ স্থান উন্মুক্ত রাখা অথবা জলাধারের সংস্থান এবং টেকসই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে নাগরিক জীবনে কার্বন নিঃসরণ বহুলাংশে কমে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘নগরীয় কর্মপন্থা প্রয়োগ করি কার্বনমুক্ত বিশ্ব গড়ি’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিকল্পিত নগরায়ন ও সকলের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তাঁর গৃহীত পরিকল্পনারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি আবাসন প্রকল্পসমূহের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত সবুজ এলাকার সমন্বয়ে বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের প্রণীত ও প্রণয়নাধীন মহাপরিকল্পনাসমূহেও পরিবেশবান্ধব নগরায়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর জন্য প্রণয়নাধীন ভবিষ্যৎ মহাপরিকল্পনা- ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যান (২০১৬-৩৫) এ নগরীতে পরিকল্পিত বৃক্ষায়ন, টেকসই উন্নয়ন, দূষণরোধ, উন্নত প্রযুক্তিতে আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন পলিসি প্রদান করা হয়েছে, যা গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব নির্মাণ-সামগ্রী প্রস্তুত ও এর বহুল ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, “সকলের সার্বিক সহযোগিতায় বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে কার্বন নিঃসরণমুক্ত উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। এ লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।”
তিনি ‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০২১’ -এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

Manual1 Ad Code

সৈয়দ অামিরুজ্জামানের আহ্বান

Manual7 Ad Code

বিশ্ব বসতি দিবস উপলক্ষে সরকারের প্রতি অাহবান জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ ও বাসযোগ্য সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ গঠনে পরিকল্পিত নগরায়ন অভিমুখী মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যহীন সমাজ ও ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরী।”

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code