পাচারকৃত অর্থকে আইনী বৈধতা দেওয়ায় পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে: ওয়ার্কার্স পার্টি

প্রকাশিত: ১১:১২ পূর্বাহ্ণ, জুন ১১, ২০২২

পাচারকৃত অর্থকে আইনী বৈধতা দেওয়ায় পাচারকারীরা আরও উৎসাহিত হবে: ওয়ার্কার্স পার্টি

Manual8 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১১ জুন ২০২২ : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো ২০২২-২৩-অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়ায় আজ শনিবার (১১ জুন ২০২২) দেয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, কোভিড উত্তরকালে উন্নয়নের ধারায় ফিরলেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে নিষ্পিষ্ট নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তের সেই উন্নয়নে যে জায়গা নাই বাজেটে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। মূল্যস্ফীতি ৬.৯ ভাগ থেকে কিভাবে ৫.২৯ ভাগে ফিরিয়ে আনা হবে তার কোন নির্দেশনা নাই। মোটা চালের দাম না বাড়লেও গরিবের চালের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করা হয়েছে। ব্যবসা বান্ধব বাজেট বানাতে আরেকদফা কর্পোরেট কর কমানো হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তি তিন লাখের সীমা বৃদ্ধি করা হয় নাই। বাজেটে সম্পদ কর আহরণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলেও, মধ্যবিত্তকে আরও কি করে বেশি বেশি করের আওতায় আনা যায় সেই কথাই বলেছেন অর্থমন্ত্রী। আর যেখানে বিদেশে পাচার করা অর্থ আইনগত দন্ডনীয়, সেই অর্থ ফিরিয়ে এনে জব্দ করার দাবি উঠেছে, সেই লক্ষ্যে দুদকসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট কাজ করছে, সেখানে সেই বিদেশে পাচার করা অর্থ ও তার দ্বারা অর্জিত সম্পদকে আইনী বৈধতা দিতে প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। ঋণ খেলাপী অর্থ ফিরিয়ে আনতে এই অর্থমন্ত্রী যে ছাড় দিয়েছিলেন তাতে খেলাপী ঋণ আরও বেড়েছে। এখন পাচারকৃত অর্থকে বিদেশে পাচার করা আইনী বৈধতা দেওয়ায় তাতে ঐ অর্থ পাচার আরও উৎসাহিত হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কমরেড কামরুল অাহসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাজেট আরেকবার প্রমাণ করল বাংলাদেশের অর্থনীতি-রাজনীতি ক্ষুদ্র ধনিকগোষ্ঠী সামরিক-বেসামরিক আমলাগোষ্ঠীর কর্তৃত্বাধীন চলে গেছে। বাজেট তাদের স্বার্থই দেখেছে, জনগণের নয়। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে ঠিকই। কিন্তু সেই উন্নয়নের পিছনে মূল শক্তি যে কৃষক, প্রবাসী শ্রমিক, গার্মেন্টস শ্রমিক, নারী ও মধ্যউদ্যোক্তা তারা অতীতের মত এবারও বাজেট সুবিধার বাইরে থাকবে। এদিকে মুখ না ফিরালেও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বাহাবা আপাততঃ পাওয়া যাবে ঠিকই, কিন্তু এই উন্নয়ন টেকসই হবে না। এসডিজির ‘কাউকে পিছনে ফেলে নয়’ (Nobody is to be left behind) গল্পকথা হয়ে থাকবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাজেটের ব্যয় মেটাতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণের ব্যাংক ঋণের উপর অতি নির্ভরতার ফলে ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ হবে না। ফলে কর্মসংস্থানের যে কথা বলা হয়েছে তা অন্তঃ সারশূন্য, আপ্তবাক্য হিসেবে থাকবে।
বাজেটে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, কোভিডকালীন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে যেখানে স্বাস্থ্যখাতে আরও বরাদ্দ দেয়ার প্রয়োজন, সেখানে টাকার হিসেবে বরাদ্দ বাড়লেও, বাজেটের অনুপাত হিসেবে তা একেবারেই নগন্য। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই বরাদ্দেই সন্তুষ্ট। কারণ এই বরাদ্দ ব্যয় করার সক্ষমতাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নাই, বরং দুর্নীতির মহোৎসব আছে সেখানে। শিক্ষাখাতে বরাদ্দে জিডিপির অনুপাত সেই দুই শতাংশেরই নিচে। আর কোভিডের কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে বাধ্যগতভাবেই ডিজিটালাইজেশন প্রসার ঘটেছিল, এখন ল্যাপটপের দাম বাড়িয়ে তাকেও বাধাগ্রস্ত করা হলো। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে অর্থ বেড়েছে, তবে তা মূলত পেনশনের টাকা। প্রতিবন্ধী ছাড়া অন্যদের ভাতা বৃদ্ধি পায়নি। অন্যদিকে ‘মেডিটেশনে’র মতো মানসিক প্রশান্তি ও বৃদ্ধির পদ্ধতির উপর আবার মুসকের আক্রমণ চালান হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code