সিলেট ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:০০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৩
এস এম মজিবুর রহমান | শরীয়তপুর, ০২ জুলাই ২০২৩ : ২০১৮ সালে শরীয়তপুরে পদ্মার আগ্রাসী ভাঙনে নড়িয়া উপজেলার সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি পরিবারের সর্বস্ব খোয়ানোর যে চিত্র বিশ্ববাসী দেখেছিল তা যেন এখন কেবলই অতীত।
সময়ের পরিক্রমায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিরলস পরিশ্রমের ফসল নড়িয়া জয় বাংলা এভিনিউ এখন শরীয়তপুরের বিনোদন প্রেমীদের উচ্ছাসের নাম। শুধু ঈদ-পার্বন নয় এখন যে কোন উৎসবেই শরীয়তপুরের ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের এক নম্বর তালিকায় নদী ভিত্তিক এ পর্যটন কেন্দ্রটি।
নির্দিষ্ট সময়ে রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়ায় শরীয়তপুরবাসী এখন স্বপ্নে বিভোর পদ্মা সেতুর জিরো পয়েন্ট থেকে চাঁদুপুরের মোহনা পর্যন্ত পুরো ৩২ কিলোমিটার পদ্মা পাড়কে দেশের সবচাইতে বড় নদীভিত্তিক পর্যটন এলাকা রূপে দেখার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে গড়ে ওঠা দেশের সর্ব বৃহৎ এ নদী ভিত্তিক পর্যটন এলাকায় এখন শুধু পর্যটন ভিত্তিক বানিজ্যিক এলাকা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়নি সুযোগ তৈরি হয়েছে মানুষের কর্মসংস্থানেরও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদুল আজহার উৎসবে বৈরি আবহাওয়াও নড়িয়া জয় বাংলা এভিনিউতে জনসমুদ্রের বাঁধ সাধতে পারেনি। পরিণত হয়েছে উৎসবের মিলন মেলায়। সব বয়সের লোকই এখানে এসে পর্যটন সৌন্দর্যের সুধা পান করে তৃপ্ত হচ্ছেন। ভেসে যাচ্ছেন উচ্ছাসের হাওয়ায়।
ঈদ উৎসবে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা শরীয়তপুর সদরের সিবু মিত্র বলেন, পাঁচ বছর আগেও যেখানে এ বর্ষা মৌসুমে পদ্মার আগ্রাসনে সব হারানোদের আর্তনাদের সুর ধ্বনিত হতো সেখানে এখন প্রতিধ্বনিত হতে আনন্দ উল্লাসের সুর। ভাঙন আতংক এখন কেবলই ধূসর স্মৃতি।
জয়বাংলা এভিনিউ সংলগ্ন পদ্মা রিভার ভিউ রেষ্টুরেন্ট এন্ড পার্টি সেন্টারের স্বত্তাধিকারী আসাদুজ্জামান বিল্পব বলেন, ঈদ- উপলক্ষে উপচে পড়া পর্যটকদের সামাল দিতে এখানে গড়ে ওঠা ৪টি রেষ্টুরেন্ট যথেষ্ট নয়। ফলে আরো অনেকেই উদ্যোগ নিচ্ছেন। এছাড়াও জয় বাংলা এভিনিউকে ঘিরে কফিসপ, ফুচকা ও চটপটিসহ নানা মুখরোচক খাবারের ১৫টিরও বেশি ভ্রাম্যমাণ দোকান রয়েছে। এখানে পদ্মার ভাঙনে সর্বস্ব হারানোদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, বাস্তবায়িত ১০.২ কিলোমিটর পদ্মার ডান তীর রক্ষা বাঁধ এখন পদ্মার ভাঙন রোধের সীমানা ছাড়িয়ে পরিণত হয়েছে যে কোন উৎসবকে রাঙিয়ে তোলার স্থানে। বিনোদনের উপলক্ষকে আরো বাড়িয়ে দিতে পরিকল্পিত রক্ষা বাঁধের কাজ এগিয়ে চলছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে পারলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতুর জিরো পয়েন্ট থেকে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত স্থায়ী রক্ষা বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম মোবাইল ফোনে জানান, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শরীয়তপুরের পদ্মার ভাঙন রোধে আন্তরিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের ফসলই হচ্ছে শরীয়তপুরের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র আজকের নড়িয়া জয় বাংলা এডিনিউ। আমরা ইতিমধ্যে সখিপুরের উত্তরতারাবুনিয়া এলাকার ৫.৮ কিলোমিটার স্থায়ী রক্ষা বাধের কাজ শুরু করেছি। পদ্মা সেতুর জিরো পয়েন্ট থেকে চাঁদপুরের মোহনা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রক্ষা বাধের প্রস্তাবনা এখন একনেকে অপেক্ষমান। আশা করছি আগামী একনেকে এটি অনুমোদনের মধ্যদিয়ে বঙ্গকন্যা শরীয়তপুরের ভাঙন কবলিত পদ্মা পাড়ের পদ্মা সেতুর জিরো পয়েন্ট থেকে মেঘনার মোহনা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার এলাকাকেই নদীভিত্তিক পর্যটন এলাকায় পরিণত করবেন। এটি তখন আর বাংলাদেশেরই সবচাইতে দীর্ঘতম নদীভিত্তিক পর্যটন এলাকা হবে না, হবে বিশ্বের অন্যতম নদী ভিত্তিক পর্যটন এলাকা। যা শুধু ভাঙনই রোধ করবে না পাল্টে দিবে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাল-চিত্রও।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D