বিশ্ব বাঘ দিবস আজ

প্রকাশিত: ১:০০ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২৩

বিশ্ব বাঘ দিবস আজ

Manual3 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ জুলাই ২০২৩ : বিশ্ব বাঘ দিবস আজ। বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হয়।
২০১০ সালে রাশিয়ায় প্রথমবারের মতো বিশ্বজুড়ে বাঘ বিপন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে বাঘ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশ ১২ বছরের মধ্যে নিজ নিজ দেশে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছিল। এর মধ্যে নেপাল বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে। ভারত এবং ভুটানও দ্বিগুণের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও সেই লক্ষ্য থেকে দূরে আছে। বরং গত দেড় বছরে দেশে বাঘের মৃত্যু বেড়ে গেছে।
২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে বছরে বাঘের মৃত্যুর ঘটনা ছিল একটি করে। মানুষের পিটুনির শিকার হয়ে এবং চোরা শিকারিদের অস্ত্রের আঘাতে বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু হয়। গত দেড় বছরে বাঘ মারা গেছে তিনটি। গত বছর দুটি ও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে একটি বাঘ মারা যায়।
কেবল বাঘ হত্যা নয়, সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনাও গত দেড় বছরে বেড়ে গেছে। গত দেড় বছরে মোট পাঁচবার আগুন লেগেছে। এক দশক আগে দুই বা তিন বছরে একটি ঘটনা ঘটত।
বন বিভাগের তথ্যে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৩৫০টি। এরপর ১৯৮২ সালে জরিপে ৪২৫টি এবং এর দুই বছর পর ১৯৮৪ সালে সুন্দরবন দক্ষিণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার কথা জানানো হয়।
১৯৯২ সালে ৩৫৯টি বাঘ থাকার তথ্য জানায় বন বিভাগ। পরের বছর ১৯৯৩ সালে সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালিয়ে ধন বাহাদুর তামাং ৩৬২টি বাঘ রয়েছে বলে জানায়। ১৯৯৬-৯৭ সালে বাঘের সংখ্যা উল্লেখ করা হয় ৩৫০টি থেকে ৪০০টি। ২০০৪ সালের জরিপে বাঘের সংখ্যা পাওয়া যায় ৪৪০টি।
২০১৫ সালের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে দাঁড়ায় ১০৬টি। হঠাৎ করে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা ৪০০টি থেকে ১০৬টিতে এসে দাঁড়ালে সারাবিশ্বে হৈ চৈ পড়ে যায়। সর্বশেষ বাঘশুমারিতে সুন্দরবনে ১০৬ থেকে বেড়ে বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে।
বাঘের অস্তিত্ব হুমকীতে থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “বাঘের অস্তিত্ব রক্ষায় বাঘের অন্যতম প্রধান হুমকি চোরাশিকারিদের বাঘ হত্যা ও পাচার, বনের ভেতর দিয়ে লাগামহীনভাবে নৌচলাচল, সুন্দরবনের পাশে বৃহৎ আকারে শিল্প অবকাঠামো নির্মাণ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, লোকালয় সংলগ্ন খাল-নদী ভরাট এবং শিকার প্রাণী পাচার ইত্যাদি। সুন্দরবনে বাঘের শিকার প্রাণীর মধ্যে চিত্রা হরিণ, শূকর ও বানর রয়েছে। বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হলে শিকার প্রাণীর (হরিণ) সংখ্যা বাড়াতে হবে। এখনই সকলকে আমাদের জাতীয় প্রাণী বাঘ সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় এ বিপন্ন প্রাণীটি আমাদের দেশ থেকে অচিরেই হারিয়ে যাবে।”

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code