সিলেটে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি, খোলা হয়েছে ৬৫৬ আশ্রয়কেন্দ্র

প্রকাশিত: ৫:০৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২৪

সিলেটে সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি, খোলা হয়েছে ৬৫৬ আশ্রয়কেন্দ্র

Manual7 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | সিলেট, ১৯ জুন ২০২৪ : মেঘালয় থেকে নামা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টিতে সিলেটের নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

Manual6 Ad Code

আজ বুধবার (১৯ জুন ২০২৪) দুপুর পর্যন্ত সিলেট জেলায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিলেটে আগামী তিনদিন ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলার সবকটি উপজেলা ও সিটি করপোরেশনের বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ৬৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সুরমা, কুশিয়ারা, গোয়াইন, সারি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে সুরমার সিলেট পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার অমলশীদ পয়েন্টে ৫৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৯ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার, গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারার শেওলা পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, নদীর পানি বাড়ায় সিলেট শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অভিজাত এলাকা হিসেবে পরিচিত ২২ নম্বর ওয়ার্ডের উপশহরের সবকটি ব্লকে সড়ক ডুবে গেছে, বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকে পড়েছে।

Manual4 Ad Code

এছাড়া নগরের ১০, ১৪, ১৫, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৮, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরের তালতলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের নিচতলায় পানি ঢুকে পড়েছে। এ অবস্থায় সিটি করপোরেশনের সব কর্মকর্তা কর্মচারির ছুটি বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।

বরইকান্দিতে অবস্থিত বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢোকার উপক্রম হলে সিটি করপোরেশনের অনুরোধে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। নদীর তীরে বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ সৃষ্টি করে উপকেন্দ্রটির সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশনে মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, সিলেট নগরে বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতায় সিটি করপোরেশনের সেচ্ছাসেবক টিম কাজ করছে। সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Manual4 Ad Code

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানান, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১০৭.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বুধবার সকাল পর্যন্ত সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার ১০৬টি ইউনিয়নের ১,৫৪৮ গ্রাম, একটি পৌরসভা, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩টি এরই মধ্যে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি আরও জানান, বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় পানিবন্দি লোকদের উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়গুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগ ও ইউনিয়নগুলোতে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলার নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Manual1 Ad Code

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code