সিলেট ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
বিশেষ প্রতিনিধি | পটুয়াখালী, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ : জলবায়ু ন্যায়বিচারের জন্য সমগ্র এশিয়া মহাদেশে “এশিয়া ডে অফ অ্যাকশন টু এন্ড কোল” কর্মসূচীর অংশ হিসাবে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪) অন্য ৯টি দেশের সাথে বাংলাদেশের উপকুলে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সন্নিহিত এলাকাসমূহে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করা, বাংলাদেশে কয়লাদূষণ থেকে নদী ও জলাশয় রক্ষার সাথে সাথে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের দাবি জানানো হয়। কর্মসূচিসমূহের মধ্যে ছিল কোহেলিয়া, পায়রা, পশুর এবং রাবনাবাদ নদীতে নৌ র্যালি এবং মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, তালতলিতে অবস্থিত বরিশাল পাওয়া প্ল্যান্ট, রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের দাবিতে মোংলায় এবং পটুয়াখালী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সামনে মানববন্ধন।
এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক (এইএন), এবং গ্লোবাল ফাইট টু ইন্ড ফসিল ফুয়েল যৌথভাবে এশিয়াব্যাপী এই কর্মসূচির আয়োজন করে। বাংলাদেশে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, স্থানীয় সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসী যৌথভাবে এসকল কর্মসূচীর আয়োজন করে। স্থানীয় আয়োজক সংগঠনসমূহের মধ্যে আমরা কলাপাড়াবাসী, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, সেভ নেচার সেভ লাইফ, উপকূলীয় মুক্ত রোভার স্কাউটস, স্কাউটস গ্রুপ, কোহেলিয়া মৎসজীবী সমিতি, মহেশখালী উপকূলীয় মৎসজীবী সমিতি এবং পায়রা নদী ইলিশ রক্ষা কমিটি উল্লেখযোগ্য।
শুক্রবার নিম্নচাপের প্রভাবে সংঘটিত ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে শত শত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
কর্মসূচী উপলক্ষে এপিএমডিডি’র সমন্বয়কারী লিডি ন্যাকপিল বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে নতুন কয়লা প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ছে এবং বিদ্যমান কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলো বন্ধের কার্যক্রম খুব ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন দেশের সরকার ও কর্পোরেশনগুলোকে অনুরোধ করছি, যেন তারা নতুন কয়লা প্রকল্পের সম্প্রসারণ অবিলম্বে বন্ধ করে এবং এশিয়ার বিদ্যমান কয়লা প্ল্যান্টগুলো দ্রুত বন্ধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো জলবায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আমাদের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভূমি, পানি এবং বায়ুকে দূষিত করেছে এবং প্রাচ্যের বৈষম্যকে আরও তীব্র করেছে।
ধরা’র সদস্য সচিব এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো স্থানীয় পরিবেশ এবং জনগণের জীবিকা হুমকির মুখে ফেলছে। একটি নদীবিধৌত পলিভুমি দ্বারা গঠিত ঘন বসতির বাংলাদেশে কয়লাদূষণ ফসল উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্যের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি আরো বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে নানা অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমরা তাদের ধন্যবাদের সাথে সাথে নোংরা কয়লার ব্যবহার বন্ধ করতে ‘নো কোল পলিসি’ গ্রহণ করার আহ্বান জানাই।
উপকূলের ৪ টি “পাওয়ার হাব” সংলগ্ন এলাকাসমূহে অনুষ্ঠিত সকল কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্থানীয় মানুষ তাদের দাবির পক্ষে আওয়াজ তোলেন। বক্তাগণ বলেন, কয়লা প্রকল্পের কারণে নদীতে মাছের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে, যা স্থানীয় জেলেদের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে নদীর পানিতে দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে জীববৈচিত্র্য ও জলজ সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে।
বক্তাগণ আরো বলেন, নদীর পানির মান খারাপ হওয়ার পাশাপাশি এলাকায় নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কয়লা প্রকল্পের কারণে তারা চরম দুর্দশার মধ্যে রয়েছেন। এসময় পটুয়াখালী পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা যায় যা জনমনে শঙ্কা তৈরি করে।
অংশগ্রহণকারীগণ প্রতিবাদী শ্লোগান সম্বলিত নানা রঙের ব্যানার প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। তারা অবিলম্বে বাংলাদেশের সকল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের দাবি জানান।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি