অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি ও মৃত্যুর হার বাড়ছে: ওয়েবিনারে বক্তারা

প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৪

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি ও মৃত্যুর হার বাড়ছে: ওয়েবিনারে বক্তারা

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৫ অক্টোবর ২০২৪ : “অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বিশেষ করে মাত্রাতিরিক্ত ট্রান্সফ্যাট ও লবণ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি এবং মৃত্যু ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা উচ্চ রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণযোগ্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের মতো বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।”

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর ২০২৪) গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “খাদ্যাভ্যাস ও উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি” শীর্ষক এক ওয়েবিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা।

আয়োজনটির সহযোগিতায় ছিল গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “উন্নত জীবন ও উন্নত ভবিষ্যতের জন্য খাদ্যের অধিকার”।

ওয়েবিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নাজমা শাহীন বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত লবণ ও ট্রান্সফ্যাট থাকে যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এসব খাদ্য গ্রহণে সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি) ড. মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, আমাদের দেশে খাদ্যে বিভিন্ন প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয় যা উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে বিএফএসএ সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে একযোগে কাজ করতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। উচ্চ রক্তচাপ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর এর বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, উচ্চ রক্তচাপ বিষয়ে নীতি পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচারণা প্রয়োজন।

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক এর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং কর্মসূচীর ম্যানেজার ডা. মধুরা চৌধুরী, বাংলাদেশ ফার্স্ট পত্রিকার ডেপুটি এডিটর মোর্শেদ নোমান এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।

এছাড়াও এই ওয়েবিনারে ভার্চুয়ালী যুক্ত হন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, জাতীয় কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান এবং দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকার প্রতিনিধি ভি.ডা: রাধা কান্ত দাশ সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা।

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “খাদ্যাভ্যাস ও উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি” শীর্ষক ওয়েবিনারের গুরুত্ব ও এর তাৎপর্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা, সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, জনগণের খাদ্যাভ্যাসে পরির্বতন আনা জরুরি। জাঙ্কফুড পরিহার করে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়ানো জরুরি। ‘মনে রাখতে হবে সুষম খাদ্য গ্রহণের সাথে কায়িক পরিশ্রম আমাদের দেহ-মনকে সুস্থ রাখবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে।”

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ