বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২৫

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

Manual7 Ad Code

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিবেদক | ঢাকা, ১০ জানুয়ারি ২০২৫ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ।

Manual2 Ad Code

পাকিস্তানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী বেলা ১টা ৪১ মিনিটে জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন।

দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করেছে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাঁকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসাবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধুকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।

দশ তারিখ সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তাঁর এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’

Manual1 Ad Code

বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন, সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।

Manual3 Ad Code

বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার।

১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে।

১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা কার্যকর হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর।

Manual2 Ad Code

আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এক বিবৃতিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে আয়োজিত সমাবেশসহ সব কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীসহ সংগঠনের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code