সিলেট ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক | কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার), ২৭ অাগস্ট ২০২২ : চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরীর দাবীতে অান্দোলনের সমর্থনে দেওড়াছড়া চা বাগানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা শাখার পক্ষ থেকে পুনরায় সংহতি প্রকাশ ও খাদ্য সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের দেওড়াছড়া চা বাগানের অান্দোলনরত ক্ষুধার্ত চা শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণসহ সংহতি সমাবেশ করা হয়। শনিবার (২৭ অাগস্ট ২০২২) দুপুর সাড়ে ১২টায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ কর্মসুচীর উদ্বোধন করেন ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড সিকান্দর আলী।
জেলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক তাপস ঘোষের সঞ্চালনায় চা শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির এই আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অারও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথার বিশেষ প্রতিনিধি, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান; বাংলাদেশ যুবমৈত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি কমড়েড আব্দুল আহাদ মিনার, জেলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক তাপস ঘোষ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী আলফাজ হোসেন, জেলা পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড আফরোজ আলী, জেলা যুব মৈত্রীর আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বুলবুল, দেওড়াছড়া চা বাগানের ওয়ার্ড সদস্য সিতাংশু কর্মকার, বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি সুবোধ কুর্মী প্রমুখ।
মজুরী বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবীনামা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ চা শ্রমিকদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের প্রতি পুন:সমর্থন ও একাত্মতা প্রকাশ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথার বিশেষ প্রতিনিধি, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন উপযোগী যৌক্তিক মজুরি নির্ধারণের আহবান জানিয়েছেন।
সামান্য কিছু সুযোগ-সুবিধাসহ দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে আট ঘন্টা, কখনো-বা আরো অধিক সময় ধরে কাজের বিপরীতে এই সামান্য পারিশ্রমিক শোষণ-বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি। মজুরী বৃদ্ধিসহ অন্যান্য দাবীনামা নিয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের জন্য চলমান দরকষাকষির অালোচনার মাধ্যমে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাগান মালিকদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা পরিহার করতে হবে ও সরকারকেও চা-শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে ন্যায্য ও মানবিক উদ্যোগ নিতে হবে। একইসাথে, চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য প্রযোজ্য শ্রম আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য সম-পর্যায়ের খাতের সর্বনিম্ন মজুরি বিবেচনায় নিয়ে মর্যাদাপূর্ণ জীবন ধারণের উপযুক্ত ও চা-শ্রমিকদের নিকট গ্রহণযোগ্য ন্যায্য পারিশ্রমিক নির্ধারণে বাগান মালিক, বাংলাদেশীয় চা সংসদ, শ্রম অধিদপ্তর ও সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
প্রতি দুই বছর পরপর চা-শ্রমিক ও বাগান কর্তৃপক্ষের মধ্যে মজুরি সংক্রান্ত চুক্তি নবায়নের রীতি রয়েছে, যদিও অধিকাংশ ক্ষেত্রে মজুরি নির্ধারণে বাস্তবে একতরফাভাবে বাগান কর্তৃপক্ষই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তথাপি গত ১৯ মাস ধরে চা-শ্রমিকরা মজুরি চুক্তির বাইরে রয়েছে। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির এই সময় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মাত্র ২০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির প্রস্তাব চা-শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি অবজ্ঞা ও নিছক উপহাসমূলক অধিকার লঙ্ঘন ছাড়া আর কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলছেন, চা-শ্রমিকদের প্রাপ্ত আবাসনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নিয়েও একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, দেশের অন্য যে-কোনো খাতের তুলনায় চা শ্রমিকদের মজুরি সর্বনিম্ন ও শোষণ-বৈষম্যমূলক। অথচ সার্বিক বিবেচনায় এ খাতটি অর্থনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, এখন পর্যন্ত কোনো পরিসংখ্যান বা তথ্য-উপাত্ত দিয়েও কেউ বলতে পারেননি যে, চা-বাগানের মালিক পক্ষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা এমন কোনো অবস্থায় আছেন যে, যাদের অবদানের ওপর নির্ভর করে চা-শিল্প বিকাশমান, সেই শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদানে তারা অক্ষম। বরং এটি একটি লাভজনক বাণিজ্যিক খাত। অন্যদিকে চা-শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরিসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দায়িত্ব শুধু মালিকপক্ষের মর্জির ওপর ছেড়ে দেয়া ঠিক নয়। চা শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে চলমান আন্দোলনের যৌক্তিকতা অনুধাবনের পাশাপাশি সমতাভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে চা শ্রমিকদের নিকট গ্রহণযোগ্য মজুরি নির্ধারণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, দেশের “ন্যূনতম মজুরি বোর্ড” অন্যান্য খাতের ন্যূনতম মজুরি যেখানে কয়েক গুণ বেশি নির্ধারণ করেছে, সেখানে কোন অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে শ্রম মন্ত্রণালয়ের “গাইড লাইন” উপেক্ষা করে বারবার চা বাগান মালিক পক্ষের নির্ধারণ করা ন্যূনতম মজুরির হার বহাল রেখে শ্রম মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D