সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০
|| সমর অাধ্য || অাগরতলা (ভারত), ২৫ জুন ২০২০ : কবি প্রবীর সরকারের আমন্ত্রণে আজ বই নিয়ে চর্চার দ্বিতীয় দিনে বেছে নিলাম দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের “ক্ষুদে শয়তানের রাজত্ব “।
অনেকেই পড়েছেন বইটি। পঞ্চাশ বছর আগেকার বই নতুন করে ১৯৯২ সালে দ্বিতীয় সংস্করণ হিসেবে ছাপিয়েছিল অনুষ্টুপ। তারপর তৃথীয় সংস্করণ ২০০৮ সালে। সেটিই নতুন করে পড়লাম আাবার।
পশ্চিম বঙ্গের বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মী অধ্যাপক অরুণাভ মিশ্রের একটা লেখা সম্প্রতি ইচ্ছাটা চাগিয়ে দিল। মার্ক্সবাদী পথ – মে,২০২০ সংখ্যাটি প্যান্ডেমিক বিষয়ে অনলাইন সংখ্যা। তাতে তাঁর ‘পুঁজি,পরিবেশ ও করোনা মহামারী ‘ শীর্ষক নিবন্ধে উদ্ধৃতি আাছে বইটি থেকে। ” আহা, সে-সব কথা পরে শোনা যাবে! ” জগু অধৈর্য্যের মতো বলল, ” আগে বলুন এ সব ক্ষুদে জানোয়ারদের চেহারা কী রকম ? ” আমাদের চারপাশে যে অষ্টপ্রহর অসংখ্য জীবাণু ( ভাইরাসকে কি জীবাণু বলা চলে? দিলীপ চৌধুরী ইদানিং জীবজগতের বৈজ্ঞানিক নাম নিয়ে বেশ ভালো কাজ করছেন। দূরাভাষে তাঁর মত বীজাণু বলাটাই যুক্তি সম্মত) আাছে তাদের কথাই জানতে চায় সে। ” ওঃ, সে নানান রকম চেহারা,” ভদ্দরলোক বলে চলল, ” কারোর চেহারা সরু সূতোর মত লম্বা, কেউ কেউ ঠিক ফুলের মতো গোল, এমনকি মাঝখানে যেনো পাপড়ির দাগ! কারুর গা লোমে ভরতি, কারুর মাথায় শুধু একটা ঝুঁটি। আবার কেউ কেউ একেবারে বেয়াড়া রকমের তেকোনা, কারুর বা দু-দিকে দুটো লেজ। কেউ কেউ দঙ্গল পাকিয়ে, একজোট হয়ে ; কেউ কেউ আবার পরস্পরের লেজ আঁকড়ে ধরে সরু চেনের মতো ঝোলে। এই রকম নানান ধরনের সব চেহারা। দেখতে দেখতে তাক লেগে যায়। ”
তবে ওদের ঠেকাবারও বন্দোবস্হ আছে মানুষের শরীরে। যদি ওদের কোনটাকে ঠেকাবার বন্দোবস্ত শরীরে না থাকে তবেই মুশকিল। যেমনটা এখন দেখছি করোনার ক্ষেত্রে।
শত্রুপুরীতে তাই সাবধান থাকতে হবে। যেমনটা এখন বলছি আমরা বার বার সাবান জল দিয়ে হাত-পা ধোওয়া, মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদির কথা। দেবীপ্রসাদ লিখেছেন, এরকম জানোয়ারও আছে যাদের শরীরের মধ্যে ক্ষুদে শয়তানের আড্ডা, অথচ বোঝা যায় না। যাই হোক, শয়তানের দাপট বাড়লে, মহামারী শুরু হলে বৈজ্ঞানিকের দল মাথা খাটিয়ে আমাদের শরীরে তাদের যুজবার ক্ষমতা তেরী করেন। অনেকটা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। এর নাম টিকা। ক্ষুূূদে শয়তানদের সঙ্গে লড়াই করার উপায়। এই মুহূর্তে পৃথিবী জুড়ে নভেল করোনা ভাইরাসকে রোখার জন্য বিজ্ঞানীরা এমন খোঁজেই ব্যস্ত আছেন। তবে দেবীপ্রসাদ বাবুর সময়ে বসন্ত, যক্ষা ইত্যাদির ক্ষেত্রে যেমন করে তার চেয়ে এখন বিজ্ঞানটা আরও উন্নত জৈবপ্রযুক্তিবিদ্যার উন্নতিতে।
তবে মনে রাখতে হবে, জীবাণুরা সকলেই কিন্তু শত্রু নয়। বন্ধুও। শত্রুর বিরুদ্ধে যেমন লড়াই করতে হবে, যারা বন্ধু তাদের আদর করে পুষতেহবে।
দারুণ বই। ছোটদের জন্য। লেখকের ভাষায় ‘কচি বই ‘। কিন্তু বড়োদের জন্যও নয় কি ? মাত্র সাতাত্তর পৃষ্ঠার বই। দাম ৬৫ টাকা। আগরতলাতেও পাওয়া যায়। জ্ঞান বিচিত্রা- বুক ওয়ার্ল্ড স্টলে।
কেন এমন বই লিখলেন দেবীপ্রসাদ ? তাঁর নিজেরই ভাষায়, “…… তখন শিশু সাহিত্য বলে যা বাজার মাত করে রেখেছিল তার অনেকটাই আমার বিচারে মেটেই সুস্হ মন গড়ে তুলতে সাহায্য করে না। অনেকটাই তার অন্ধকার আর সেই অন্ধকারে রকমারি দৈত্য দানা ওৎ পেতে আছে। হয়তো কিশোর পাঠকদের কাছে ওসব লেখা রুচিকর। কিন্তু স্বাস্থ্যকর মোটেই নয়। ” এ বোধ থেকেই প্রথমে কিশোর পাঠ্য মাসিক পত্রিকা ‘ রংমশাল ‘ – এ প্রথম লেখা। তারপর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর বই আাকারে।
আজও কত প্রাসঙ্গিক !
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D