বৃটিশ বিরোধী প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম…!!

প্রকাশিত: ৪:০৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২০

বৃটিশ বিরোধী প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম…!!

|| মনিদীপা চক্রবর্তী দীপা || কলকাতা (ভারত), ০১ জুলাই ২০২০ : সাঁওতালদের ১৮৫৫ সালে এই লড়াই শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং বিহারের ভাগলপুর জেলায়।  এই লড়াই ছিল অধিকার আদায়ের জন্য। ১৭৯৩ এর ‘ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ‘ এর পর থেকেই অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল গরীব এই জনগোষ্ঠীর উপর। তাই এই সংগ্রাম ছিলো ইংরেজদের শাসন – শোষণ,  সুদখোর মহাজন ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিদহু, কানহো, চাঁদ প্রমুখ! ****

মহেশ দারোগার মুন্ডুটা কেটে হাতে ঝুলিয়ে নিয়ে মিছিল এগোচ্ছিলো৷ দিঘি থানার দুজন কনস্টেবলসহ ১৭জন ‘দিকু’কে হত্যা করে মিছিল এগিয়ে যাচ্ছিল। পরাধীন ভারতে ওটাই  ছিল প্রথম দীর্ঘ পদযাত্রা৷ ভাগনাডিহি থেকে কলকাতা৷ একালের লংমার্চ৷  ব্রিটিশদের দেওয়া হিসাবেই সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৩০হাজার৷ ভূমিজ কুড়মী, কড়া, মুন্ডা, মাহালি, খেড়িয়া, কামার, কুমোর, তাঁতী কে থাকে নি? নেতৃত্বে ছিলেন সিধু কানহো,  চাঁদ ভৈঁরো সহ খেরওয়াল বীরহড়’রা৷ দাবী ছিল- কোম্পানীর শাসনের নামে শোষন বন্ধ করো৷ দেশী জমিদার মহাজনী শোষন বন্ধ করো৷ ছোটনাগপুর মালভূমি তথা জঙ্গলমহল থেকে বহিরাগতরা বহিষ্কৃত হও৷

শাল ডালএর আমন্ত্রণে খেরওয়াল হড় আর খরখইস্যা মানুষে সেদিন ভরে গিয়েছিল ভাগনাডিহির মাঠ৷ ব্রিটিশ শাসনে সেটাই ছিল ব্রিটিশ বিরোধী সর্ববৃহৎ জনসমাবেশ৷  আওয়াজ উঠেছিল  হুল     হু- – ল        হু- – -ল ৷
অর্থাৎ বিদ্রোহ৷ সাঁওতাল বিদ্রোহ৷
১৮৫৫ আজকের দিন ৩০শে জুন সেই বিদ্রোহের দিন৷

চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম গেরিলা সংগ্রাম৷ ১৮৫৫এর সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র সংগ্রাম৷ আর এই বিদ্রোহকে দমন করতে এদেশে প্রথম জারি করা হয়েছিল সামরিক আইন(১৮০৪,১০নং রেগুলেশন ৩ধারা)৷

রিজলি হান্টারদের মতে ঐ বিদ্রোহের এক বছর সময়কালে ১৫থেকে ২০ হাজার বিদ্রোহী ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হাতে প্রাণ হারিয়েছিল৷ বেসরকারী মতে আরো বেশী৷  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এটাও একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছে ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিদ্রোহ৷

আজ  হুল দিবস৷ আজ সেই খেরওয়াল বীরহড়’দের বীরত্বকে  সম্মান জানানোর দিন৷ তাদের অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করার জন্য শপথ নেওয়ার দিন!
‘হুলমাহা জিতকার’! ✊✊
মহান হুল দিবস জিন্দাবাদ ✊

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ