ছাতনী গণহত্যা দিবস আজ

প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৪

ছাতনী গণহত্যা দিবস আজ

Manual1 Ad Code

ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন | নাটোর, ০৪ জুন ২০২৪ : নাটোরের ছাতনী বধ্যভূমির স্মৃতি ফলক ৩৭০ ব্যক্তির নির্মম হত্যার নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আজ ৪ জুন ছাতনী গণহত্যার ৫৩ বছর পূর্ণ হয়েছে।

গণহত্যায় শহীদ ব্যক্তিবর্গের পরিবারের সদস্যরা এ হত্যাকান্ডের বিচার এবং নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।

Manual3 Ad Code

একাত্তরের ৪ জুন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি রেড লেটার ডে। এ দিন ছাতনীতে ঘটে মুক্তিযুদ্ধে নাটোর জেলার সবচে’ বড় হত্যাকান্ড। সেদিন নাটোর শহর ও শহরতলীর বেশ কয়েকটি গ্রাম এবং রাজশাহীর তাহেরপুরের ৩৭০ জন নিরীহ মানুষকে জবাই করে হত্যা করা হয়।

কুখ্যাত রাজাকার আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় সকাল থেকে শুরু হয় হত্যাযজ্ঞ। আগের দিন ছাতনী, বনবেলঘড়িয়া, বড়গাছা, গোকুলপুর, পন্ডিতগ্রাম, শিবপুর, ভাটপাড়া, হাড়িগাছা, রঘুনাথপুর এলাকার শতশত মানুষকে ধরে এনে স্মৃতি ফলক সংলগ্ন বাগানে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। এ এলাকার বাসিন্দা নজর মো. সরকার দুদু বলেন, সামনে তেবাড়িয়া হাটে যাওয়ার পথে রাজশাহীর তাহেরপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকা থেকে অনেক মানুষ এখানে আটক হন এবং তাদেরকেও জবাই করা হয়। জবাই করা হলেও প্রাণে বেঁচে যান সৌভাগ্যবান তিনজন। এরা হচ্ছেন লকুব উদ্দিন সরকার, হাজী কালা মুন্সী এবং আব্দুল জব্বার শাহ্। কয়েক বছর হচ্ছে জীবিত থাকা তিনজনই মারা গেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আমজাদ হোসেন জানান, পাশের আখ ক্ষেতে নারীদের সম্ভ্রমহানীর ঘটনা ঘটানো হয়। এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার মনির উদ্দিন সরকার প্রতিবাদ করায় তাকেও জবাই করে হত্যা করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভের মূল ফটকে ডাঃ আব্দুল হামিদ, জসিম উদ্দিন শাহ, মনোয়ার হোসেন মনু, নরেশ ঠাকুর প্রমুখসহ ৬৪ জনের নামের তালিকা থাকলেও হত্যা করা হয় ৩৭০ জনকে। ১৯৭৩ সালে সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরী এ স্থানে একটি স্মৃতি ফলক নির্মাণ কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নতুন করে স্মৃতি ফলকের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে কয়েক দফায় অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ স্মৃতি ফলকের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।

Manual6 Ad Code

প্রতি বছর ৪ জুন স্মৃতি ফলক প্রাঙ্গনে স্থানীয় উদ্যোগে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেছে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।

ছাতনীকে গণহত্যার ক্ষেত্র হিসাবে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখ বলেন, পাশেই তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেতা শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর বাড়ি হওয়ার আক্রোশেই সম্ভবত এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল। শহীদ আছির উদ্দিন শেখের ছেলে জয়নাল আবেদীন আত্মদানকারী ব্যক্তিদের মূল্যায়নের দাবি জানিয়ে বলেন, নিহত এবং তাদের পরিবারবর্গকে শহীদ পরিবার হিসেবে তালিকাভূক্ত করা উচিৎ।

Manual5 Ad Code

শহীদ মনির উদ্দিন সরকারের ছেলে দুলাল সরকার এ গণহত্যার বিচার দাবি করে বলেন, তবেই শহীদদের আত্মা শান্তি পাবে।

 

Manual3 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ