শ্রীমঙ্গলের ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে দুর্গন্ধময় ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের দাবীতে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ২:৩২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২৪

শ্রীমঙ্গলের ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে দুর্গন্ধময় ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের দাবীতে মানববন্ধন

Manual7 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ০১ ডিসেম্বর ২০২৪ : শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ, দি বাডস রেসিডেনসিয়্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও গাউসিয়া শফিকিয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসা-এই তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও দুর্গন্ধময় আবর্জনার স্তূপ অপসারণসহ পৌরসভার ময়লার ভাগাড় অন্যত্র স্থানাস্তরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।

রোববার (১ ডিসেম্বর ২০২৪) দুপুরে শ্রীমঙ্গল সরকারী কলেজ, দি বাডস্ রেসিডেসিয়্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন আয়োজন করেন। মানববন্ধনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারণ অংশ নেয়।

Manual2 Ad Code

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ আগামী ২০ দিনের মধ্যে ময়লার ভাগাড় স্থানান্তর না হলে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় এলাকাবাসী আবারও সম্মিলিতভাবে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Manual2 Ad Code

তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। এবং তিনি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে জানান।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতা জাকারিয়া, উৎস, নুরুল আমিন ও নাফিজাসহ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও বিভিন্ন ধরণের আশ্বাসবাণী শুনিয়েছিলেন তারা কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। অনেকে কথা দিলেও সরানো হয়নি ময়লার ভাগাড়।

এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এটা দীর্ঘদিনের দাবি। বিভিন্ন সময় ডিসিসহ স্থানীয় কর্মকর্তারা বিভিন্ন আশ্বাস দিলেও আজ পর্যন্ত সেটা স্থানান্তরিত হয়নি। তাই শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। তিনি দ্রুত এর সমাধান চান।

Manual4 Ad Code

তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্মুখে ও একটি জনবহুল এলাকায় প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে পুরো উপজেলা শহরের সব ময়লা-আবর্জনা। এতে দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। এতদিন ময়লার ভাগাড় সরানোর দাবি নিয়ে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। তবে দুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোসা. শাহিনা আক্তার।

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য আমরা শহরতলী জেটি রোড এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করেছি। কিন্তু ওই এলাকার এক ব্যক্তি মামলা করে ভাগাড়ের কাজ করতে দেয়নি। এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা রয়েছে। মামলার জটিলতার কারণে আমরা ভাগাড় সরাতে পারছি না।’

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্রশাসক মোসা. শাহিনা আক্তার বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় সরাতে জটিলতা কোথায় তাই সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ময়লার ভাগার স্থানান্তরের জন্য যেসব করণীয় রয়েছে, তা আমরা করছি। তবে আমাদের সময় দিতে হবে।”

Manual8 Ad Code

এর আগে ২০১৮ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লার ভাগাড় অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনে নেমেছিল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার হাজারো শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী। সে সময় জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও শিক্ষার্থীদের দাবি ছয় বছরেও পূরণ হয়নি।

এ আন্দোলনের সাথে প্রথম থেকেই যুক্ত থাকা এবং বর্তমানেও পুনরায় একাত্মতা ঘোষণা করে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, ‘৯০-এর মহান গণঅভ্যুত্থানের সংগঠক কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গলের দীর্ঘদিনের সমস্যা হলো কলেজ সড়কের পাশে অবস্থিত পৌরসভার ময়লার ভাগার। এই ভাগাড়ের উৎকট দুর্গন্ধের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় এলাকাবাসী। ময়লার ভাগাড়টির পাশেই ৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ময়লার অসহনীয় গন্ধ ভাগাড় ছাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছার কারণে দুর্গন্ধে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যকর শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এর অপসরণ জরুরী। এছাড়াও এলাকার পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার প্রয়োজনে বিকল্প হিসেবে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার রিসাইক্লিং প্রকল্প গ্রহণ করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী করছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code