ইরান-রাশিয়া সামরিক সহযোগিতা জোরদারে অঙ্গীকারবদ্ধ

প্রকাশিত: ৪:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৮, ২০২৫

ইরান-রাশিয়া সামরিক সহযোগিতা জোরদারে অঙ্গীকারবদ্ধ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক | মস্কো (রাশিয়া), ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ : ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার ২০ বছর মেয়াদি বাণিজ্য ও সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করেছেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই নেতা বলেছেন, দুই দেশ সামরিক সহযোগিতা জোরদারে অঙ্গীকারবদ্ধ। শনিবার ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায়।

এই চুক্তি বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই নেতা মস্কো ও তেহরানের মধ্যে ‘বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পরিবহণ, লজিস্টিকস, মানবিক ক্ষেত্র এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় বর্তমান ইস্যুতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের বিষয়ে আলোচনা করেন।’

চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক ও রাজনৈতিক অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করবে বলেও আশা করা হচ্ছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আক্রমণের পর থেকে ইরানি শাসকদের সাথে মস্কোর সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। ইরান ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে ব্যবহৃত শাহেদ ড্রোন রাশিয়াকে সরবরাহ করেছে।

গত অক্টোবরে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেগেই ল্যাভরভ বলেছিলেন, রাশিয়া ‘অদূর ভবিষ্যতে’ ইরানের সাথে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি করবে। ডিসেম্বরে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানুয়ারির শেষ নাগাদ চুক্তিটি বন্ধ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন।

এই চুক্তির অধীনে উভয় পক্ষই আগ্রাসনের ক্ষেত্রে একে অপরকে সামরিকভাবে সমর্থন করতে সম্মত হয়েছিল।

গতকাল শুক্রবার মস্কোর ক্রেমলিন প্রাচীরের কাছে সেনা সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান।

এএফপি জানিয়েছে, শুক্রবার একটি বিশেষ ফ্লাইটে মস্কো পৌঁছান ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান। সফরে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর কৌশলগত চুক্তি সই করেন দুই নেতা।

এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসার পর এটা পেজেশকিয়ানের প্রথম ক্রেমলিন সফর। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো নিয়ে পুতিনের সাথে আলোচনা করেন।

ইরানের প্রেসিডেন্টের সফর নিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে তার দেশের যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সই হয়েছে তা বিশ্বকে আরো বেশি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত’ করবে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, বাণিজ্য ও সামরিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে বিজ্ঞান, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে ‘সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি’ হয়েছে।

ইরানের রাশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং প্রখ্যাত রাজনৈতিক বিজ্ঞানী অধ্যাপক রুহুল্লাহ মুদাব্বির বলেছেন, নতুন চুক্তি শুধু দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াবে না, বরং তাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো শক্তিশালী করবে। এই চুক্তিতে উভয় দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।