অাগামী ১ নভেম্বর তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ২৩০ কিমি. দীর্ঘ মানববন্ধন

প্রকাশিত: ২:০৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০

অাগামী ১ নভেম্বর তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ২৩০ কিমি. দীর্ঘ মানববন্ধন

Manual2 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি || রংপুর ব্যুরো, ২৬ অক্টোবর ২০২০ : তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে, তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনায় মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন, ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং তিস্তা তীরবর্তী কর্মহীনদের জন্য প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন ও শিল্প কলকারখানায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের দাবীতে আগামী ১ নভেম্বর তিস্তা নদীর দুই পাড়ে প্রায় ২৩০ কিলোমিটারব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে। এতে রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলার নদী সংলগ্ন মানুষ অংশগ্রহণ করবেন।

Manual3 Ad Code

রংপুর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত পরামর্শ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ রংপুর বিভাগের নেতারা।
পরামর্শক সভায় সভাপতিত্ব করেন নজরুল ইসলাম হক্কানী এবং সঞ্চালন করেন শিক্ষক শফিয়ার রহমান। সভায় জেলা কমিউনিস্ট পার্টির প্রাক্তন সভাপতি শাহাদত হোসেন তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কাজ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
জেলা জাসদ সভাপতি সাখাওয়াত রাঙ্গা বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে এ অঞ্চলের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের জীবন ও জীবিকা অনেক উন্নত হবে। তাই প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে সজাগ থাকার জন্য তাগিদ দেন তিনি। বাসদ জেলা সমন্বয়ক আবদুল কুদ্দুস বলেন, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে দলবল নির্বিশেষে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি রশীদ বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে উত্তর জনপথের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন এ মেঘা প্রকল্প তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন, দল-বল নির্বিশেষে কেউ এই প্রকল্পের বিরোধিতা করবে না। প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক রফিক সরকার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, যদি কেউ প্রকল্পের বিরোধিতা করে এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তাহলে সবাইকে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ মহাপ্রকল্প গ্রহণ করায় সরকারকে অভিনন্দন জানান। তবে তিনি বলেন, এখনও মেঘা প্রকল্প সম্পর্কে আমরা অবগত নই। তবে নদী সংস্কারে অবশ্যই প্লাবন ভূমি থাকতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। সভার সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, তিস্তা নদী মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে আগামী ১ নভেম্বর তিস্তা নদীর দুই পাড়ে প্রায় ২৩০ কিলোমিটারব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হবে।
পরামর্শ সভা শেষে সংগঠনের পাঁচ জেলা রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট এবং গাইবান্ধা থেকে সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে নজরুল ইসলাম হক্কানীকে সভাপতি এবং শফিয়ার রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০৮ সদস্যবিশিষ্ট তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ রংপুর বিভাগের কার্যকর কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, তিস্তা নদীর বর্তমান নাব্য হ্রাস পেয়েছে। তাই তিস্তা নদীর প্রশস্ততা কোথাও ৮ কিলোমিটার কোথাও আবার ১২ কিলোমিটার। শুষ্ক মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে মরুভূমির মতো রূপ নেয়। এ পরিকল্পনায় তিস্তা নদীর গভীরতা বাড়াতে খনন কাজ করা হবে। নদীর গভীরতা আরও ১০ মিটার বৃদ্ধি করা হবে। সারা বছর নৌচলাচলের মতো পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এই সংরক্ষিত পানি দিয়ে নদী পারের পুনরুদ্ধার হওয়া লাখ লাখ হেক্টর জমিতে সেচ ব্যবস্থা করা যাবে। গড়ে উঠবে আধুনিক কৃষি খামার ব্যবস্থা। পুনর্বাসন করা হবে তিস্তা পাড়ের লাখ লাখ ভূমিহীন নদীভাঙা পরিবারকে। তিস্তা হয়ে উঠবে দেশের অর্থনীতিতে বড় সম্পদ। তিস্তায় ফিরে আসবে জীববৈচিত্র্য। মরু প্রক্রিয়ার হাত হতে রক্ষা পাবে তিস্তা পাড়ের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো। লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ