রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে হকার পুনর্বাসন ও অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধের দাবিতে সংগ্রাম পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত: ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২১

রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে হকার পুনর্বাসন ও অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধের দাবিতে সংগ্রাম পরিষদের সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক || ঢাকা, ১৫ মার্চ ২০২১ : রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে হকার পুনর্বাসন, অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধ, হকার নেতাদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদ। আজ ১৫ মার্চ সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি আবুল হোসাইন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, সহ-সভাপতি আরিফ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইজুদ্দিন মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম এ খায়ের, কেন্দ্রী নেতা আব্দুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন, লাভলি ইয়াসমিন, বাহারানে সুলতান বাহার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ হকার সংগ্রাম পরিষদ নৌকার প্রার্থীর স্বপক্ষে সভা-সমাবেশ, মিটিং-মিছিল ও প্রচারপত্র বিলি করে নির্বাচনে জয়যুক্ত করার সকল ধরনের কাজ করেছে। নির্বাচনের সময়ে আমরা নৌকা প্রার্থীদের কাছে হকার পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছিলাম। তারা ওয়াদা করেছিল নির্বাচিত হলে হকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন। নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা দুই মেয়রের সাথে দেখা করে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়েছি। হকারদের ফুটপাতে অবৈধ চাঁদাবাজি বন্ধ, রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে নগর উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে হকার পুনর্বাসন। রাজস্ত আদায় করা হলে সিটি কর্পোরেশনের মোট রাজস্বের পরিমাণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। এ দিয়ে হকার পুনর্বাসন এবং নগর ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। এতে করে ঢাকা মহানগর সৌন্দর্য্য ও গতিশীল হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গত ১৫ জানুয়ারী ২০১৭ থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত করার নামে হকার উচ্ছেদের নিষ্ঠুর অভিযান শুরু করেছে। হকার উচ্ছেদের নামে তাদের মালামাল ধ্বংস, লুটপাট, ভাংচুর, লাটিপিটা ও হয়রানি-নির্যাতনের এক স্টীম রোলার চালানো হয়েছে। এতে করে হাজার হাজার হকার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। সিটি কর্পোরেশনের এই নিষ্ঠুর অভিযান মানবাধিকারের চরম লংঘন। সম্প্রতি নারায়নগঞ্জে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মামলা-হামলা ইত্যাদির মধ্যদিয়ে শহরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। আমরা এই মামলা-হামলা ও গ্রেফতার বন্ধ ও হকার পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছি।

নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগের শিকার হয়ে আমাদের সমাজের প্রান্তিক মানুষেরা কাজ হারিয়ে শহরে এসে ফুটপাতে হকারীর মাধ্যমে জীবিকার পথ বেছে নেন। হকাররা আতœকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব ও দারিদ্র দূরীকরণে যথেষ্ট ভূমিকা পালন করছে। যা প্রধানমন্ত্রীর দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। হকাররা দেশীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী সুলভ মূল্যে নাগরকিদের হাতে তুলে দেয়। এ কাজের মধ্য দিয়ে হাকাররা জাতীয় অর্থনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। হকার না থাকলে দেশের এই ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে এবং অর্থনীতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। এসকল বিবেচনায় হকাররা জাতীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। হকারদের এই অবদানের জাতীয় স্বীকৃতি চাই।

হকারদেরকে নগরের ঝঞ্জাল হিসাবে না দেখে, সম্পদ হিসাবে দেখলে সমস্যার অর্ধেকটা সমাধান হয়ে যায়। এটা দৃষ্টিভঙ্গী ব্যাপার। হকাররা নাগররিক সেবক ফলে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হলে নাগরিক সেবা ব্যহত হবে। হকার ও পথ বিক্রেতা নিয়ন্ত্রণের জন্য পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে আইন হয়েছে। ভারত সরকার প্রথমে জাতীয় নীতিমালা পরে ২০১৪ সালে হকার ও পথবিক্রেতা নিয়ন্ত্রণ আইন করে হকারদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। অমরা চাই ভারত সরকারের প্রণীত আইনটি বাংলাদেশ সরকার পর্যালোচনা করে তার ভিত্তিতে জাতীয় নীতিমালা ও আইন প্রণয়ন করে হকার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক। আমরা হকার ও পথবিক্রেতা নিয়ন্ত্রণের পক্ষে, তবে উচ্ছেদের বিপক্ষে।

কর্মসূচি: ১। ২১ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আলোচনা সভা এবং
২ | রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে হকার পুনর্বাসন ও অবৈধ চাঁদাবাজী বন্ধের দাবিতে ৩১ মার্চ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মাননীয় মেয়র বরাবরে স্মারকলিপি পেশ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ