লেখাটি আমার ভালো লেগেছে, পড়ে দেখুন এবং ভেবে দেখুন

প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০২০

প্রকাশ রায়, প্যারিস (ফ্রান্স), ২৮ এপ্রিল ২০২০ : “ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন” এই তত্ত্ব আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে নিয়েছি। এই বিশ্বাসের মূল কারণ করোনা ভীতি। করোনা একটি নব আবিষ্কৃত ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী

Prokash Roy, Actor

ভাইরাস যার কোনো ঔষধ নেই। এই ভাইরাসের কারণে 31.03.2020 পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী 38721 জন মানুষ মারা গেছেন।

এখন এই তথ্যগুলি আমরা জানছি কীভাবে? বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স প্রচার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মৃতের লাইভ তথ্য দেওয়া হচ্ছে। নচেৎ এসব জানতেই পারতাম না।

এখন আমরা জানবো সেইসব বাস্তব তথ্য যা আগে এইভাবে জানানো হয়নি।

সংক্রমণ রোগের কারণে পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় 1 কোটি 70 লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় 14 লক্ষ 16 হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। টিবি একটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রামক ব্যাধি যার কারণে প্রতি বছর প্রায় 15 লক্ষ মানুষ মারা যান যার মধ্যে শুধু ভারতেই 5 লক্ষ মানুষ মারা যান। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীতে প্রতি মাসে প্রায় 1 লক্ষ 25 হাজার মানুষ টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। হেপাটাইটিস একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ যার কারণে প্রতিবছর প্রায় 14 লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে প্রায় 1 লক্ষ 16 হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। অর্থাৎ এই ব্যাধিগুলি বর্তমান করোনা ভাইরাসের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর 6 থেকে 7 লক্ষ মানুষ মারা যান যার মধ্যে শুধু আমেরিকাতে প্রায় 60 হাজার, ইতালিতে প্রায় 25 হাজার এবং ভারতবর্ষে প্রায় 1 লক্ষ 50 হাজার মানুষ মারা যান। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীতে প্রতি মাসে প্রায় 54 হাজারের অধিক মানুষ সাধারন ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন।

যেহেতু এই সব রোগগুলি সম্বন্ধে প্রতিনিয়ত আমাদের লাইভ তথ্য দেওয়া হয় না তাই আমরা এগুলি সম্পর্কে এতটা ভীত নই।

16 জন বিশেষ বৈজ্ঞানিক দ্বারা গঠিত UK এর ‘New & Emerging Respiratory Virus Threat Advisory Group’ নামক এ্যাডভাইজারী বোর্ড গত 19.03.2020 তারিখে জানিয়েছে যে COVID-19 সংক্রমণ কোনও High consequence infectious diseases (HCID) ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে না, যা প্রথমদিকে মনে করা হয়েছিল। অর্থাৎ এটা কোনও মারাত্মক ব্যাধি নয়, এটা তারা জানিয়ে দিয়েছেন।

সমস্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণা লব্ধ তথ্য থেকে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে COVID-19 করোনা আক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা সাধারণ ফ্লু ভাইরাসে আক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যার মতোই।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে COVID-19 এর কোনও ঔষধ নেই। একটু ভেবে দেখুন ঔষধ না থাকার পরেও COVID-19 এ আক্রান্ত 99.9% মানুষ সুস্থ হচ্ছেন। আর ঔষধ থাকার পরেও সংক্রামক টিবি রোগে প্রতি মাসে প্রায় 1 লক্ষ 25 হাজার মানুষ মারা যাচ্ছেন। কোনটি বেশী বিপদজনক?

99.9% সুস্থ হওয়ার তথ্যটি বিশ্বের 1 নম্বর মেডিসিন জার্নাল নামে পরিচিত New England Journal of Medicine এ প্রকাশিত হয়েছে। আসলে COVID-19 এ আক্রান্ত বহু মানুষের মধ্যে যাদের অবস্থা খুবই জটিল তাদেরই RT-PCR (Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction) টেস্ট করা হচ্ছে এবং সংক্রমিত রোগীর তালিকায় রেখে গণনা করে জানানো হচ্ছে। অর্থাৎ যত সংখক সংক্রমিত বলা হচ্ছে বাস্তবে তার বহুগুণ বেশি COVID-19 এ আক্রান্ত যারা অনেকে জানতেই পারেননি যে তারা সংক্রমিত হয়েছিলেন!

আমাদের চারপাশে বিভিন্ন প্রকারের অসংখ্য ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বর্তমান যারা আমাদের প্রতিনিয়ত সংক্রমিত করার চেষ্টা করছে আর আমাদের শরীর প্রতিনিয়ত তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে জন্ম থেকেই। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পালিয়ে নয় যুদ্ধ করেই আমরা বেঁচে আছি। সুতরাং আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার উপায় গুলির উপর গুরুত্ব দেওয়া উচিত, সেগুলি হলো :

1) পজিটিভ ও প্রোডাক্টিভ চিন্তাভাবনা ও কর্ম করা।
2) শরীরকে সক্রিয় রাখতে কর্মে নিযুক্ত থাকা ও ব্যায়াম করা।
3) নিয়মিত ভিটামিন সি, জিঙ্ক ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্মৃদ্ধ খাবার খাওয়া।

ভেবে দেখুন, আজ ইলেক্ট্রনিক প্রচার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের আতঙ্কিত করে নেগেটিভ প্রোগ্রামিং করছে যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকারক এবং ঘরে বন্দি থাকার কারণে শারিরীক শ্রম হচ্ছে না। এই কারণ গুলি আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে ফলে যে কোন ভাইরাস দ্বারা রোগগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা বাড়ছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে বা কারা বিশ্বজুড়ে এই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে এবং কেন?

নিজস্ব গবেষণাগারে করোনা ভাইরাস তৈরি করে তা বিশ্বজুড়ে ছড়ানোর জন্য আমেরিকা ও ইসরাইল যেমন চীনকে দায়ী করছে তেমনই আবার রাশিয়া, চীন ও ইরান একত্রে আমেরিকা কে দায়ী করছে। সত্যটা বোঝার জন্য আমাদের দেখতে হবে এতে কারা লাভবান হবে এবং কারা এটার মার্কেটিং করছে অর্থাৎ বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করছে।

2015 সালের 18ই মার্চ, ‘TED TALK’ কনফারেন্সে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যাবসায়ী বিল গেটস “The Next Outbreak” শিরোনামে এক ভিডিও প্রেজেন্টেশন দেন।

সেই কনফারেন্সে উপস্থিত বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর ব্যাবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন যে “পরবর্তী কয়েক দশকে যদি কোনও কিছু 1 কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটায়, তবে সেটা হবে উচ্চ সংক্রামক ভাইরাসের দ্বারা, যুদ্ধের দ্বারা নয়। আমরা পরমানবিক অস্ত্র-গুলির পিছনে অনেক বিনিয়োগ করেছি কিন্তু মহামারী বন্ধ করার জন্য কোনও সিস্টেমে আমরা খুব কমই বিনিয়োগ করেছি”।

তার বক্তব্য থেকে এটা পরিষ্কার যে যুদ্ধে ব্যবহৃত পরমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য তাদের মতো প্রথম শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করে থাকেন। অর্থাৎ বিশ্বের বৃহত্তর যুদ্ধগুলির পরিকল্পনা তারাই করে থাকেন। এবং এখানে তিনি ভবিষ্যতে মহামারীর জন্য বিনিয়োগ করতে ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করছেন।

এরপরই 2015 সালের 23শে জুলাই বিল গেটস ও কিছু এনজিওর ফান্ডে প্রতিষ্ঠিত “THE PIRBRIGHT INSTITUTE” এর পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস এর উপর পেটেন্ট নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয় যা 2018 সালের 20শে নভেম্বর অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। এই পেটেন্টে পরিষ্কার উল্লেখ আছে যে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত গবেষণা, করোনা ভাইরাস তৈরি, তার জেনেটিক মিউটেশন, এবং করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির একচ্ছত্র অধিকার তাদেরই থাকবে।

বিল গেটস Bill & Melinda Gates foundation নামক ভ্যাকসিন তৈরি করার একটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান। উক্ত ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে তিনি 2011 সালে ভারতে আসেন শিশুদের পোলিও টিকা দেওয়ার জন্য। তাঁর দেওয়া পোলিও ভ্যাকসিন এর প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়ায় ভারতের 47 হাজার শিশু স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল।

2016 সালে 20শে মে বিল গেটস ID2020 নামক এক প্রকল্প শুরু করেন । এই প্রকল্পে যে সমস্ত মানুষ ভ্যাকসিন নেবেন তাদের চিহ্নিত করার জন্য কোয়ান্টম ডট টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে শরীরের ভিতরে মাইক্রোচিপ প্রবেশ করিয়ে এক বিশেষ ধরনের ট্যাটু দেওয়া হবে যা তার ডিজিটাল সার্টিফিকেট হিসেবে গণ্য হবে!!!

করোনাভাইরাসের উপর পেটেন্ট অনুমোদিত হওয়ার পর 2018 সালের 20 শে নভেম্বর The New England Journal of Medicine ও Massachusetts Medical Society আয়োজিত মহামারী সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় বিল গেটস বলেন যে আগামীতে একটি নতুন মারণব্যাধি আসতে পারে যা 6 মাসের মধ্যে 3 কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটাবে।

18.09.2019 তারিখে WHO (World Health Organization) এবং World Bank নির্দেশনায় GPMB (Global Preparedness Monitoring Board) এর পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয় যে একটি ভাইরাসবাহী রেসপিরেটরি ব্যাধি বা ফ্লু গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা আছে যা 8 কোটি মানুষের মৃত্যু ঘটাবে এবং বিশ্বের 5% ইকোনোমি ধ্বংস করবে। আর তাতে ভারতের 2% GDP (অর্থাৎ 3.8 লক্ষ কোটি টাকা বা $53.5 বিলিয়ন) ক্ষতি হবে।

Covid-19 আবিষ্কার হওয়ার ঠিক 2 মাস আগে 18ই অক্টোবর 2019 তারিখে World Economic Forum, Johns Hopkins Center for Health Security এবং Bill & Melinda Foundation এর যৌথ উদ্যোগে নিউ ইয়র্কে “The Next Pandemic” শিরোনামে একটি হাই লেভেল ডকুমেন্টারি সিমুলেশন এক্সারসাইজ প্রদর্শিত হয়। এই প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন 15 জন প্রথম শ্রেণীর বিজনেস লিডার্স, পলিসি মেকার্স ও হেলথ এক্সপার্ট। এই সিমুলেশনে বিশেষ কম্পিউটার প্রোগ্রামের দ্বারা দেখানো হয় যে কীভাবে ‘Disease X’ নামক এক নতুন ব্যাধি একটি পশু মার্কেট থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে 18 মাসের মধ্যে 65 মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু ঘটাচ্ছে এবং গ্লোবাল GDP’র 11% পতন ঘটছে, স্টক মার্কেট 20%- 40% পড়ে যাচ্ছে।

এটা ছিল একটি ট্রেনিং এক্সারসাইজ সিমুলেশন যা সম্পূর্ণরূপে করোনাভাইরাস COVID-19 এর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে!

বিল গেটস সহ বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ যারা নিজেদেরকে ‘Globalist’ বলে দাবি করেন, তাঁরা বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়ন করে থাকেন। তাঁরা বিভিন্ন ‘সিক্রেট এজেন্ডা’ গুলির উপর কাজ করে থাকেন। তাঁরা WHO, GPMB এর মতো সংস্থাগুলি গঠন করেন ও সেগুলিতে বিনিয়োগ করেন। এই গ্লোবালিস্টরা পর্দার পিছনে থেকে তাঁদের কিছু পরিকল্পনা এই সমস্ত সংস্থাগুলোকে সামনে রেখে এগুলির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে থাকেন।

গ্লোবালিস্টদের পরিকল্পনামতো WHO সতর্কতা প্রচারের নামে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত লাইভ প্রচার করে বিশ্ববাসীর মনে আতঙ্ক তৈরি করছে। শুধু তাই নয় আগামীতে আরো কত মানুষ মরতে পারে তার কল্পিত তথ্য প্রকাশ করে আতঙ্কের গভীরতাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। মোবাইলে ভয়েস মেসেজ ও ইলেকট্রনিক্স প্রচার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত করোনা বিষয়ক সতর্কতা প্রচারের মাধ্যমে আমাদের মনের আতঙ্ককে আরো দৃঢ় করছে। এরপর এই সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য WHO যে সমস্ত নির্দেশিকা জারি করছে আমরা সেগুলিকে বাঁচার একমাত্র পথ মনে করে তা অনুসরণ করে চলেছি। WHO করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যা তথ্য দিচ্ছে এবং চিকিৎসা পদ্ধতি বলে দিচ্ছে গোটা বিশ্ব তা অন্ধ অনুসরণ করছে কারণ এই ভাইরাস বা এর চিকিৎসা সংক্রান্ত কোন তথ্য কারোর জানা নেই। এমনকী এই রোগ নির্ণয় করার জন্য একমাত্র উপায় হিসেবে PCR টেস্ট কিট গ্লোবালিস্টরাই সাপ্লাই দিচ্ছে। অর্থাৎ গোটা বিশ্ব একটা নির্দিষ্ট আদেশকে অনুসরণ করে চলেছে যা গ্লোবালিস্টদের অন্যতম লক্ষ্য ‘ONE WORLD ORDER’ প্রতিষ্ঠা করা, যার বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।

ডাবের জল ভীষণ উপকারী এটা জানার পরেও আমরা ডাবের পরিবর্তে ‘সফট ড্রিংকস’ নামক বিষপান করি। কারণ সফট ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনী প্রচার আছে, ডাবের জলের নেই। বিজ্ঞাপন এমন এক কৌশল যার মাধ্যমে মানুষকে ‘সফট ড্রিংকস’ নামক বিষ খাইয়ে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলি কোটি কোটি ডলার উপার্জন করছে আর ডাবের জল বিক্রেতা দারিদ্রতার সাথে লড়ছে।

প্রচারের দৌলতে আজ আমরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুভয়ে জীবন কাটাচ্ছি, মাস্ক পড়ে একে অপরকে সন্দেহের চোখে দেখছি, প্রত্যেকের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে চলছি, জীবনের অন্য সমস্ত সমস্যা ও উন্নতি চিন্তা ছেড়ে নিজেদের জীবন বাঁচানোর চিন্তায় নিমগ্ন হয়েছি। আমাদের এতদিনের চেনা পৃথিবী কেমন যেন অচেনা হয়ে গেছে, এ যেন এক অন্য গ্রহ, অচেনা সব মানুষ।

দৈনিক উপার্জনের উপর যাদের দিন চলে 21দিন বন্ধ থাকার ফলে তারা কঠিন জীবন সঙ্কটে পড়বে।
বর্তমানে যন্ত্রপ্রযুক্তি এতটাই উন্নত হয়েছে যে শ্রমজীবী মানুষের প্রয়োজন ফুরিয়েছে। তাই পৃথিবীর বোঝা কমাতে পরিকল্পিত ভাবে ওদের সংখ্যাটা ব্যাপকভাবে কমিয়ে ফেলা হবে আর আমরা তাতে প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানাবো কারণ আমরা নিজের নিজের প্রাণ বাঁচানোর চিন্তায় নিমগ্ন।

ভাইরাসের আতঙ্ক আমাদের চিন্তা ভাবনাকে এমনভাবে বদ্ধ করে দিয়েছে যে আগামীতে আমাদের জীবনের ভয়ঙ্কর দুর্দিন ও ভবিষ্যতে দুরবস্থার দিকগুলি ভাবতেই পারছি না।

21 দিন গোটা দেশে সমস্ত উৎপাদন ও উপার্জন বন্ধ থাকলে দেশজুড়ে চরম আর্থিক সঙ্কট দেখাদেবে। গ্লোবালিস্টদের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্টক মার্কেট 20%-60% পড়েগেলে বা GDP 11% পতন ঘটলে দেশে দেশে ব্যাংক ব্যাবস্থা ভেঙে পড়বে। ব্যাংকে মানুষের সঞ্চিত অর্থ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। দ্রব্য মূল্যের দাম অত্যাধিক বাড়বে ও টাকার মূল্য কমতে শুরু করবে, কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন হবে, জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এই চরম ক্ষতির জন্য মানুষ প্রতিবাদ করবে না বরং সমর্থন করবে কারণ তারা মনেকরবে জীবন বাঁচানোর এটাই একমাত্র পথ।

এই সঙ্কটের সময় প্রতিটি দেশ জনগণের ট্যাক্সের টাকায় উপার্জিত অর্থ থেকে করোনার জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেট পেস করবে। সেই বাজেটের একটা বড় অংশ গ্লোবাললিস্টদের দেওয়া হবে করোনার ভ্যাকসিন সহ অন্যান্য ঔষধ সরবরাহ করার জন্য। অর্থাৎ গ্লোবালিস্টরা কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে তাদের আর্থিক অবস্থা চাঙ্গা করে নেবে আর অন্যান্য দেশগুলি চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়ে এদের করুণার অপেক্ষায় থাকবে।

গ্লোবালিস্টরা তখন সমাধান হিসেবে বর্তমান আর্থিক ব্যবস্থা পরিবর্তন করে নতুন আর্থিক ব্যবস্থা অর্থাৎ ডিজিটাল কারেন্সি চালু করবে। যার মাধ্যমে এরা গোটা বিশ্বের অর্থব্যবস্থা কে নিয়ন্ত্রণ করবে যা এদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।
এই লক্ষ্যে তারা পরিকল্পিত মার্কেটিং করে চলেছে।
Dr. Tedros, WHO এর DG, কিছুদিন আগে বলেছেন যে আমাদের অবশ্যই ডিজিটাল মানির দিকে যেতে হবে কারণ কাগজের টাকা বা কয়েন এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে গ্লোবালিস্টগণ ডলারকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক লেনদেনের কারেন্সি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

OPEC চুক্তির আওতায় 1971 সাল থেকে সমস্ত তেল মার্কিন ডলারের মাধ্যমে লেনদেন করার পরিকল্পনার মাধ্যমে মার্কিন ডলারকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক মুদ্রায় পরিণত করা হয় এবং বিশ্বের অর্থনীতিতে আমেরিকার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

1999 সালে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল মজুতদার ইরাক এর সাদ্দাম হোসেন ডলারের পরিবর্তে ইউরোপিয়ান ইউরো কারেন্সিতে তেল লেনদেন শুরু করলে অ্যামেরিকান বিশেষজ্ঞরা উপহাস করে মন্তব্য করেছিলেন ইরাক তার জাতিকে ভিখারি পরিণত করতে চলেছে। কিন্তু পরবর্তী 2 বছরের মধ্যেই ইউরো ডলারের বিপরীতে বাড়তে শুরু করলে আমেরিকা চিন্তায় পড়ে যায়।

2001 সালে হঠাৎ করে অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পরলে ইরাকের সাদ্দাম হোসেন এটা করেছে বলে আমেরিকা অভিযোগ করে। এর উপর ভিত্তি করে 2003 সালে জৈব রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির মিথ্যা অভিযোগে ইরাক দখল করে সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসি দেওয়া হয়!

2009 সালে লিবিয়ার শাসক গাদ্দাফি মার্কিন ডলারের পরিবর্তে গোল্ড দিনার এর মাধ্যমে তেল লেনদেন শুরু করেন। এরপরই 2011 সালে ন্যাটো নেতৃত্বাধীন জোট এর মাধ্যমে লিবিয়ায় স্বাধীনতার নামে সামরিক হস্তক্ষেপ করে গদ্দাফিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়!

বর্তমান বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির অধিকারী হলো চীন এবং বিশ্বের বৃহত্তম এক্সপোর্টার ও ইম্পোর্টার যারা গোটা পৃথিবীর প্রয়োজনীয় দ্রব্যের 1/3 ভাগ দ্রব্য উৎপন্ন করে থাকে। অর্থাৎ গোটা বিশ্বের সিংহভাগ উৎপাদন বর্তমানে চীনের উপর নির্ভরশীল। চীন থেকে ভাইরাস ছড়ালে গোটা বিশ্বের ইকোনোমির উপরে চরম প্রভাব পড়বে এবং গোটা বিশ্বের অর্থনীতিকে সহজে ভেঙে দেওয়া সম্ভব হবে। তাই গ্লোবালিস্টরা করোনা ভাইরাসের গ্রাউন্ড হিসেবে চীনকে বেছে নিয়েছে।
তাই বাস্তবে দেখা গেছে চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রথম মাসে বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনা ভাইরাস প্রবেশ না করলেও তাদের স্টক মার্কেটের দ্রুত পতন ঘটেছিল।

চীন বর্তমানে ডলারের পরিবর্তে তাদের কারেন্সি ইউয়ান মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করার প্রস্তাব রেখেছে যার ফলে বিশ্বব্যাপী আমেরিকার অর্থনৈতিক কর্তৃত্বের স্থায়িত্বের উপরে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ফলে আমেরিকা গবেষণাগারে ভাইরাস তৈরি করে ছড়ানোর অভিযোগ এনে চীনকে বিশ্বের দরবারে খলনায়ক বানাতে চাইছে এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য বিশ্বকে প্রস্তুত করছে।

বর্তমান গ্লোবালিস্টরা ভাইরাসের আতঙ্ক তৈরি করে বিশ্বজুড়ে আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করছে এবং তার সমাধান হিসেবে প্রচলিত কারেন্সির পরিবর্তে ডিজিটাল কারেন্সি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিন লেনদেনের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করবে। ফলে বিশ্ব আর্থিক ব্যবস্থার উপর এদের নেতৃত্ব অনেক বেশী মজবুত হবে যার বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে।

প্রকাশ রায় : অভিনেতা ও সংস্কৃতি কর্মী, ফ্রান্স।