সিলেট ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২০
|| শোয়াইব জিবরান || ২৫ জুন ২০২০ : প্রতিটি মহামারীর পর আসে মন্দা, দুর্ভিক্ষ। দুর্ভিক্ষ মহামারীর চেয়ে আরও ভয়ংকর হয়। সে সময়ে মানুষ আরও হিংস্র অমানবিক হয়ে ওঠে। মহামারির পর এ দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তির উপায় কী? একটি উপায়ের কাহিনী আছে রামায়ণে। প্রাচীন ভারতবর্ষের সে বিপদ থেকে রক্ষার বাস্তবিক উপায় জেনেছিলেন, জনক রাজা। যার সাথে জড়িয়ে আছে সীতার নাম। শামীম আহমেদের বর্ণনায়-
”মিথিলা রাজ্যে অকাল মহামারীতে দেশ প্রায় উজাড়। খাঁ খাঁ করছে এক সময়ের সমৃদ্ধিশালী রাজ্য। এখানে ওখানে মৃতদেহ পড়ে আছে। চাষ আবাদ নেই। কে লাঙল দেবে? রাজা তো অস্ত্র ধারণ করেন, তাঁর পরিচয় হল তিনি দণ্ডনীতির দণ্ডমুণ্ডকর্তা। রাজা জনক দার্শনিক মানুষ, সাংখ্য-যোগ নিয়ে থাকেন। তিনি কোনও সমাধান খুঁজে না পেয়ে চলে গেলেন কুলগুরু শতানন্দের কাছে। শতানন্দ তাঁকে উপদেশ দিলেন, তুমি লক্ষ্মীর উপাসনা করো।
লক্ষ্মী কিন্তু অর্থের বা সম্পদের দেবী নন, তিনি সমৃদ্ধির দেবী। অর্থ-সম্পদ আর সমৃদ্ধি এক কথা নয়। সম্পদের দেবতা হলেন কুবের। ধোপা বা কুম্ভকারের বাহন যেমন গাধা, তেমনি কুবেরের বাহন হল মানুষ। সে গাধার মতোই মানুষকে দিয়ে সম্পদ বহন করায়, যে সম্পদের উপর গাধা, থুড়ি, মানুষের কোনও অধিকার নেই। লক্ষ্মী তা নন, তিনি মানুষকে সমৃদ্ধি দান করেন। শস্যের, ক্ষুধা নিবারণের, শান্তির আশ্রয়ের।
রাজর্ষি জনক লক্ষ্মীর আরাধনা করতে লাগলেন। যে সব মানুষের জীবন আছে, অতিমারীতে যাঁরা বেঁচে আছেন, তাঁদের জীবিকা কী হবে? এই আকুল প্রশ্নে দেবী লক্ষ্মী সাড়া দিলেন। তিনি বললেন, হে পিতা! আপনার রাজকোষ উজাড় করে আপনি নিজ হাতে লাঙল ধরুন। নিজের শ্রমে চাষ করুন, ফসল ফলান। যে রাজা প্রজার শ্রমে অংশীদার হন না তিনি কীসের রাজা! আপনি হল কর্ষণ করুন, শুধু সাংখ্য আর যোগ-চর্চা নয়। আপনার প্রজারা আবার সুখে সমৃদ্ধিতে রাজ্য আলোকিত করবে।
রাজা জনক হলকর্ষণ করেই পেয়েছিলেন লক্ষ্মীকে, যাঁকে আমরা সীতা বলে জানি।”
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D