সিলেট ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২০
ঢাকা, ০১ জুলাই ২০২০: করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে ‘লকডাউন’ তুলে নেওয়ার পর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করার প্রেক্ষাপটে খাতভিত্তিক গাইডলাইন তৈরি ও তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে।
বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সেন্টার ফর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সোসাইটির করা ওই গবেষণায় ধাপে ধাপে অর্থনীতি খুলে দেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে।
একইসঙ্গে করোনা ভাইরাসের কারণে ঝুঁকিতে থাকা জীবন-জীবিকার সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে চারটি ভাগে ভাগ করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপের সুপারিশ করা হয় ওই গবেষণা প্রতিবেদনে।
গবেষণা সম্পর্কে সেন্টার ফর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড সোসাইটির পরিচালক সাজিদ অমিত বলেন, “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হলেও খাতভিত্তিক কোনো গাইডলাইন আমরা দেখিনি। কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলেও তার বাস্তবায়নও হয়নি।
“এর মধ্যে পুনরায় শাটডাউনের কথা কেউ কেউ বলছেন। আমরা বলছি, অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে অর্থনীতি চালু রাখতে হবে। এবং কোন প্রক্রিয়ায় সেটা করা যেতে পারে, তার একটি পথরেখা আমরা দিয়েছি।”
গবেষকরা ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরায় চালু: ফ্রেমওয়ার্কের সন্ধানে’ শীর্ষক ওই গবেষণায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের করা অর্থনৈতিক তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের পাশাপাশি উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, বিশ্লেষক ও গবেষকসহ বিভিন্ন খাতের একশজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে।
চার ভাগে বিভক্ত অর্থনীতি খুলতে পারে তিন ধাপে
মহামারীকালে অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় বিভিন্ন খাতকে চার ভাগে বিভক্ত করেছেন গবেষকরা।
একইসঙ্গে এই খাতগুলোকে তিনটি ধাপে বিভক্ত করে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইনের ভিত্তিতে খোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এক্ষেত্রে ‘অধিক গুরুত্ব ও অধিক ঝুঁকি’ নিয়ে থাকা ‘অ্যালার্ট’ ভাগে তৈরি পোশাক ও অন্য রপ্তানিমুখী খাত, ব্যাংক, গণপরিবহন, বাজার, সেবা প্রভৃতি খাতকে রেখেছেন গবেষকরা।
ফার্মাসিউটিক্যালস ও মুদি দোকানের মতো খাতকে ‘অধিক গুরুত্ব ও কম ঝুঁকি’ হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে ‘অ্যালাউ’ ভাগে স্থান দেওয়া হয়েছে।
াা
‘অ্যাডভান্স’ খাত হিসাবে বিবেচিত অনলাইন লার্নিং, ই-কমার্স, রিয়েল এস্টেট খাতকে রাখা হয়েছে ‘কম গুরুত্ব ও কম ঝুঁকির‘ ভাগে। বুটিক, বই ঘর, ইলেকট্রনিক্স প্রভৃতিও রয়েছে এ খাতে।
বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ ও সংক্রমণের অধিক ঝুঁকি বিবেচনায় হোটেল, রেস্তোরাঁ ও শপিং মলকে ‘অ্যাভয়েড’ খাতে স্থান দিয়েছেন গবেষকরা।
অর্থনীতি চালুর ক্ষেত্রে ‘অ্যাভয়েড’ খাত বাদ দিয়ে প্রাথমিক ধাপে ‘অ্যালার্ট’, ’অ্যালাউ’ ও ’অ্যাডভান্স’ এই তিন খাত চালুর পরামর্শ এসেছে ইউল্যাবের গবেষণায়।
সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যালার্ট খাতের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি ও এর কঠোর বাস্তবায়নই হবে এক্ষেত্রে প্রধান কাজ। সংক্রমণ ঠেকাতে যে কোনো ধরনের কঠোর উদ্যোগ নিতে হবে।
দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য অনলাইন লার্নিং ও ই-কমার্স খাতকে বিকশিত করার সুযোগ হিসাবে গৃহবন্দিত্বের এ সময়কে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষণায় বলা হয়, অর্থনীতি চালুর দ্বিতীয় ধাপ আসবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে কমতে থাকার পর। এক্ষেত্রে ‘অ্যালার্ট’ খাত হিসাবে চিহ্নিত তৈরি পোশাক ও ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে বাধ্যবাধকতা কিছুটা কমানো যেতে পারে।
এ সময়ে রেস্তোরাঁ আর শপিংমলের মতো ‘অ্যাভয়েড’ খাত আংশিকভাবে খুলে দেওয়া হতে পারে বলে মত গবেষকদের।
গবেষকরা বলছেন, সব শেষে তৃতীয় ধাপ আসবে মহামারীকাল কেটে যাওয়া, অর্থাৎ কোভিড-১৯ এর কার্যকর প্রতিষেধক বা টিকা মানুষের কাছে পৌঁছানোর পর। সে সময় সবগুলো খাত স্বাভাবিকভাবে খুলে দেওয়া হবে। ওই সময়ের জন্য থাকবে সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা গাইডলাইন।
সিইএস পরিচালক সাজিদ অমিতের সঙ্গে গবেষক দলে ছিলেন ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাটিজের উপদেষ্টা অধ্যাপক ইমরান রহমান, সিইএসের গবেষণা সহযোগী অলিউর রহমান তারেক ও প্রকল্প সমন্বয়ক আহসান সেনান।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D