যারা নিজেকে নিয়ে হতাশ, আমার এই লেখাটা তাদের জন্য

প্রকাশিত: ৮:৩৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০২০

যারা নিজেকে নিয়ে হতাশ, আমার এই লেখাটা তাদের জন্য

Manual5 Ad Code

|| শিউলী আফরোজা || যাত্রাবাড়ী (ঢাকা), ০৫ অাগস্ট ২০২০ : যারা নিজেকে নিয়ে হতাশ, আমার এই লেখাটা তাদের জন্য। আশাকরি ভালো লাগবে।

Manual8 Ad Code

সুধা চন্দনের জন্ম ১৯৬৫ সালে, ভারতে। তিনি একজন জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রী এবং ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী। মাত্র ১৭ বছর বয়সে সড়ক দূর্ঘটনার জন্য তার পা কেটে ফেলতে হয়।
একজন নৃত্যশিল্পীর জন্য পাই তার সব। তাই যখন সুধার পা কেটে ফেলা হলো, তখন প্রথমে তার মনে হলো , তিনি কোনো জীবন্ত লাশ। তার মন কখনোই মানতে রাজী ছিলো না যে, সে আর নাচতে পারবে না।
পরে তিনি চিকিৎসকদের সহায়তায় প্রসথেটিক্স তথা নকল পা লাগিয়ে নেন। সময়টা তখন আশির দশক, সেইসময় কৃত্রিম পা নিয়ে নরমাল হাঁটা -চলাই ছিলো নরক যন্ত্রনা। সেখানে নাচ তো অবাস্তব কিছু। কিন্তু তিনি অসম্ভব নাচ ভালোবাসতেন এবং সবসময় তিনি নাচতেই চেয়েছিলেন। তিনি নকল পা নিয়ে নাচ প্র্যাকটিস করতেন, ১ম ১ম পা ফেললেই রক্তে ভেসে যেতো চারপাশ। ভীষন রকম কষ্ট হতো।
কিন্তু ইচ্ছা শক্তি যার অদম্য, কোনো বৈরী পরিবেশই তাকে থামাতে পারে না।
২ বছর তিনি এমন অমানুষিক পরিশ্রম করে অবশেষে তার নাচের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। হাজার হাজার মানুষের সামনে তিনি নাচ পরিবেশন করেন। সবাই মুগ্ধ হোন তার সেই পারফরমেন্সে।শুধু ভারত নয়, বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী হিসেবে সুপরিচিত।পরবর্তীতে এই নাচকে পুঁজি করে তিনি হয়ে উঠেন ভারতের নামি দামী সিরিয়াল  তারকা। এছাড়াও রয়েছে অসংখ্য পুরষ্কার ।
তার জীবনী ভারতের ৮-১০ বছর বয়সী শিশুদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত আছে।

আমার কাছে সুধা চন্দনের জীবন কাহিনী জেনে যা মনে হলো-
•আমরা খুব কম পরিশ্রম করেই তার খুব ভালো একটা রেজাল্ট চাই। এবং রেজাল্ট মনের মতো না হলে আমরা হতাশ হয়ে যাই। কিন্তু আমরা যেই ফল প্রত্যাশী, তা অর্জনের যোগ্যতা আমাদের আছে কিনা তা দেখি না।
•অন্যের সুখ দেখে আমাদের দুঃখ লাগে। মনে হয় ‘ আহারে ও এতো ইনকাম করে, আমার ইনকাম নাই কেন?’ কিন্তু সেই ও যে কি ভীষন পরিশ্রম করে তা আমাদের চোখে পড়ে না।
•অনেকেই বলেন, সাপোর্ট পান না। তাই ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও কিছু করতে পারেন না, দিন দিন হতাশায় ডুবে যাচ্ছেন। কিন্তু সুধা চন্দনের জীবনী পড়ে আমি ভীষন ভাবে বুঝলাম, মানুষ নিজেই নিজের সবচেয়ে বড় সাপোর্ট। মনে করেন, ‘আপনি ভাত খাবেন, কিন্তু আপনার নিজ হাতে খেতে চাচ্ছেন না, আরেকজন আপনাকে ভাতটা খুব সুন্দর ভাবে মাখিয়ে মুখে ঢুকিয়ে দিবে ঠিকই, কিন্তু চিবিয়ে গিলে পেটে পাঠানোর দ্বায়িত্বটা কিন্তু আপনার নিজেকেই নিতে হবে।’
তেমনি সুধা চন্দনকে মানসিক সাপোর্ট তার পরিবার, ডাক্তার, বন্ধু সবাই দিয়েছিলেন, কিন্তু কষ্টকর শারীরিক জার্নিটা তার একার ছিলো। কষ্টের ভাগটা কিন্তু কেউ নিতে পারেন নি।
•আরে পাশের বাসার ভাবী অনলাইন বিজনেস করে, আমার বান্ধবী করে, আমি যদি না করি আমার মান -ইজ্জত থাকবে না। এই মনোভাব নিয়ে অনেকেই ব্যবসায় নামেন, কিন্তু তাদের জানা নেই, কোন কাপড় কি রকম। এই কাজটার প্রতি নেই ভালোবাসা। ফলাফল – কয়দিন পর ব্যবসা বন্ধ।
সুধা চন্দন নিজের নাচকে ভীষন ভালোবাসতেন। অসম্ভব ডেডিকেশন ছিলো নাচের প্রতি, তাই তিনি অবাস্তব একটা ব্যাপারকে বাস্তবে পরিনত করতে পেরেছেন। তাই অন্যদের না দেখে, নিজেকে জানুন, নিজে কি ভালোবাসেন তা খুঁজে বের করুন। তখনই পাবেন আত্নতৃপ্তি।
#
শিউলী আফরোজা। ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে।

Owner: Uzayer’s creation-Dream in your hands.

Manual2 Ad Code

?লেখাটি লিখতে আমি সাহায্য নিয়েছি গুগল এবং ইউটিউবে সুধা চন্দনের বিভিন্ন সাক্ষাতকার দেখে।

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code