মেনন হত্যাচেষ্টার ২৮তম বার্ষিকীতে মৌলভীবাজারে ওয়ার্কার্স পার্টির অালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ৫:৪৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২০

মেনন হত্যাচেষ্টার ২৮তম বার্ষিকীতে মৌলভীবাজারে ওয়ার্কার্স পার্টির অালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

মৌলভীবাজার, ১৭ অাগস্ট ২০২০: কমরেড রাশেদ খান মেনন হত্যা প্রচেষ্টার ২৮তম বার্ষিকীতে ‘সন্ত্রাসবিরোধী দিবস’ পালন উপলক্ষে মৌলভীবাজারে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা শাখার উদ্যোগে এক অালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে মূল বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক তাপস কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অাফরোজ অালীর সঞালনায় অারও বক্তব্য দেন নজরুল ইসলাম, অাবু ছায়েদ, অাব্দুল অাওয়াল, অাব্দুর নূর চৌধুরী, দেওয়ান মাসুকুর রহমান, পরিতোষ সরকার ও মাহমুদ এইচ খান প্রমূখ।
মূল বক্তব্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান বলেন, “১৯৯২-এর ১৭ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্টি অফিসের সামনে কমরেড রাশেদ মেননকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলী করা হয়। মৃতবৎ কমরেড মেননকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর সিএমএইচ-এ লিভারে অপারেশন করা হয় এবং অবস্থার উন্নতি না হলে তাকে লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে পুনরায় অপারেশন করা হয়। পাঁচমাস লন্ডন ও ব্যাংককে চিকিৎসা
নেবার পর ১৯৯৩ এর ১০ জানুয়ারী বিমান বন্দরে বিপুল সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন। তবে এই ২৮ বছরেও তার ঐ হত্যাপ্রচেষ্টার বিচার হয়নি। আততায়ীরা অধরাই রয়ে গেছে। অন্যদিকে একই সময়কালে চুয়াডাঙার কুলবিলা গুচ্ছগ্রাম, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃবৃন্দকে হত্যা করা হয় যার বিচারও আজও হয়নি।
রাশেদ খান মেননের হত্যা প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐ সময়ে দেশব্যাপী যে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল তার জন্য পার্টি ও তিনি নিজে দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু দেশে সন্ত্রাস নির্মুল হয় নাই পক্ষান্তরে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড চলছে।জননিরাপত্তার স্বার্থেই এটা বন্ধ হওয়া দরকার।”

ক্রসফায়ার বা যে নামেই ডাকা হোক বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সন্ত্রাস বা মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না: মেনন

ঢাকা, ১৭ অাগস্ট ২০২০: ক্রসফায়ার বা যে নামেই ডাকা হোক, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড এযাবত সন্ত্রাস বা মাদক নিয়ন্ত্রণে কোন ভূমিকা পালন করতে পারেনি”। বরং রাষ্ট্রকে বিপদাপন্ন করেছে। মেজর সিনহার মৃত্যুতে রাষ্ট্রের দু’টি বাহিনীকে প্রায় পরস্পর মুখোমুখি দাড় করিয়ে দিয়েছিল। দুইবাহিনীর প্রধানকে নজিরবিহীন যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে সবাইকে আশ্বস্ত করতে হয়েছে। আর অন্যদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে দেড়শ’র উপর মানুষকে ক্রসফায়ার দেয়ার পরও গত সপ্তাহেই সেখান থেকে কয়েক লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব কারণেই মানুষের মৌলিক অধিকার হরণকারী এই অমানবিক আচরণকে এখনই বন্ধ করতে হবে। আজ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ‘সন্ত্রাসবিরোধী দিবস’-এর এক ভার্চুয়াল আলোচনায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি একথা বলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের এই দিনে সন্ধ্যায় পার্টি কার্যালয়ের সামনে রাশেদ খান মেননকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলী করা হয়েছিল। দেশে- বিদেশে চিকিৎসা ও দেশবাসীর ভালবাসা আর দোয়ায় তিনি জীবন ফিরে পান এবং এখনও মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করছেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘ক্রসফায়ার’-এর নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড সম্পকে আইনশৃংখলা
বাহিনীরা যে যুক্তি দিয়ে থাকেন তাই দেশের মানুষের শব্দভান্ডারে যুক্ত হয়েছে। এ ধরণের কথা বলে মানুষের দৃষ্টি বিভ্রান্ত করা যাবেনা। বরং এ নিয়ে মানুষের মধ্যে যে অনাস্থাবোধ সৃষ্টি হয়েছে তাকে দূর করতে হবে।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি বলেন, আটাশ বছর ধরে রাশেদ খান মেননকে হত্যা প্রচেষ্টার বিচার না হওয়া এ দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রচলিত রয়েছে তারই একটি দৃষ্টান্ত। খালেদা জিয়ার বিএনপি-জামাত জোট সরকার ‘অপরাশেন ক্লিন হার্ট’ হত্যাকে আইন করে দায়মুক্তি দিয়েছিলেন, আর এখন তারই অনুসরণে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডকে অঘোষিত দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে। তিনি এ ধরণের সব হত্যাকান্ডকে বিচারের আওতায় এনে দেশে আইনের শাসনকে দৃশ্যমান করার আহবান জানান।
ভার্চুয়াল আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড আনিসুর রহমান মল্লিক ও কমরেড ড. সুশান্ত দাস। সভা পরিচালনা করেন কমরেড নুর আহম্মদ বকুল।

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2723030891276610&id=100007091778939

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ