ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮ শতাংশ

প্রকাশিত: ৫:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি হবে ৬.৮ শতাংশ

Manual8 Ad Code

অর্থনীতি বিষয়ক প্রতিবেদক || ম্যানিলা (ফিলিপাইন), ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ : প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার কারণে বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা সংকুচিত হলেও সেই ধাক্কা সামলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে বলে প্রাক্কলণ করেছে সংস্থাটি।

Manual1 Ad Code

ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত এডিবির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের সেপ্টেম্বর আপডেটে এই পূর্বাভাস এসেছে।
তবে এই পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে মহামারীকেই সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বলে মনে করছে এডিবি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের গন্তব্য দেশগুলোতে মহামারীর সঙ্কট দীর্ঘায়িত হলে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে।

Manual2 Ad Code

এডিবি বলছে, উৎপাদনের গতি বাড়ায় এবং বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতা দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে এবং চলতি হিসাবের (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট) ঘাটতিকে জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখা যাবে।

তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই ধারা টেকসই করতে সামষ্টিক অর্থনীতির বিচক্ষণ ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা কর্মসূচির বাস্তবায়নে জোর দেয়ার পরামর্শও এসেছে প্রতিবেদনে।

বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মহামারীর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মহামারীর ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য খাতে বিপুল চাপের পরও সরকার যথাযথ প্রণোদনা ঘোষণা এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়িয়ে, দারিদ্র ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা নিয়ে অর্থনীতিকে ভালোই সামাল দিয়েছে।’

‘রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ে সাম্প্রতিক ইতিবাচক ধারা এবং বিদেশি তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বাস্তবায়নের ফলেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে’ বলে মনে করেন পারকাশ।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা বাংলাদেশ ২০১৯-২০ অর্থ বছরের জন্যও ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছিল। কিন্তু মহামারীর মধ্যে দুই মাসের লকডাউন আর বিশ্ব বাজারের স্থবিরতায় তা বড় ধাক্কা খায়।

মহামারীতে রপ্তানি আয় তলানিতে ঠেকায় এবং রেমিটেন্সে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় না বাড়ায় গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সরকারি হিসেবে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশে নেমে আসে, যদিও এই অংক আরও কম হওয়ার কথা বলে অনেক বিশ্লেষকের ধারণা।

Manual6 Ad Code

তবে এপ্রিল মাসের পর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো টাকার পরিমাণ আশাতীত হারে বাড়তে থাকায় শেষ পর্যন্ত রেমিটেন্সেও ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। গত অর্থবছরে দেশে আসা রেমিটেন্সের পরিমাণ এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ ডলার ছাড়িয়ে যায়।

২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৭ শতাংশ কম। তবে মহামারীর সঙ্কটে রপ্তানি আয় যতটা ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত পিরিস্থিতি ততটা খারাপ হয়নি।

বিবৃতিতে মনমোহন পারকাশ বলেন, ‘রেমিটেন্স ও রপ্তানি আয়ের উন্নতি দেখে আমরা উৎসাহ পাচ্ছি। আমরা আশা করছি, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই ধারা টেকসই হবে। আর তা করা গেলেই প্রাক্কলিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে।’

Manual4 Ad Code

‘সেই সঙ্গে করোনার টিকা যদি আগে পাওয়া যায় এবং মহামারীতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ওপর যে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, তা যদি অব্যাহত রাখা হয়, তা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই ধারাকে টেকসই করতে সহায়ক হবে’ বলেও মনে করছেন এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code