এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই

প্রকাশিত: ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০

এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই

Manual2 Ad Code

ঢাকা, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ : এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আজ সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ মিনিটে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের জামাতা সুপ্রিমকোর্টের এডভোকেট শেখ মো. রিয়াজুল হক তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গত ২০ সেপ্টেম্বর এটর্নি জেনারেলের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। করোনামুক্ত হলেও তার শারিরীক অন্যান্য জটিলতা দেখা দেয়। পরে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ভোরে আইসিইউ’তে নেয়া হয়। সেখানে নিবির পরিচর্যায় ভেন্টিলেশন সাপোর্টে চিকিৎসা চলছিল তার।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে এটর্নি জেনারেল জ্বর অনুভব করেন। শুক্রবার ৪ সেপ্টেম্বর সকালে করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজেটিভ আসে। একইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তাকে সিএমএইচ-এ নেয়া হয়।
এটর্নি জেনারেল সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবে আলম ১৯৪৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মৌছামান্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও ১৯৬৯ সালে লোক প্রশাসনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন মাহবুবে আলম। ১৯৭৩ সালে তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে তালিকাভূক্ত হয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগে আইন পেশা পরিচালনার অনুমতি পান। ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন মাহবুবে আলম। এছাড়া তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লির ‘ইনস্টিটিউট অব কনস্টিটিশনাল অ্যান্ড পার্লামেন্টারি ষ্ট্রাডিজ’ থেকে সাংবিধানিক আইন ও সংসদীয় প্রতিষ্ঠান ও পদ্ধতি বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত রাষ্ট্রের অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহবুবে আলম। এরমধ্যে ১৯৯৩-৯৪ সালে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৫-২০০৬ মেয়াদে তিনি আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মাহবুবে আলম এটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর থেকে টানা ১২ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন। সেই সাথে পদাধিকার বলে তিনি আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত থাকা মাহবুবে আলম সংবিধানের ৫ম, ৭ম, ১৩তম ও ষোড়শ সংশোধনী মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী ছিলেন। এছাড়া তিনি বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলাসহ সর্বোচ্চ আদালতে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধ মামলার মতো ঐতিহাসিক অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মামলা সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করেছেন।
মাহবুবে আলম দেশে ও দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণ করেন। এরই অংশ হিসেবে ভারত, শ্রীলঙ্কা, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, হংকং, কোরিয়া ও তানজানিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশ সফর করেছেন মাহবুব আলম।

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আজ এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মরহুম মাহবুবে আলম বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা পরিচালনায় অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তিনি ছিলেন একজন প্রথম সারির যোদ্ধা। তার মৃত্যু বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে এক অপূরণীয় ক্ষতি।
রাষ্ট্রপতি মরহুম মাহবুবে আলমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
আজ এক শোকবার্তায় মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধান বিচারপতি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শোকাবার্তায় বলা হয়, মাহবুবে আলমের সাথে প্রধান বিচারপতি মাহমুদ হোসেনের দীর্ঘ ২৮ বছরের সুসম্পর্ক ছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে মাহবুবে আলম অত্যন্ত সততা ওনিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন আইনজীবী হিসেবে তিনি ছিলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তিনি অত্যন্ত গুণী, নির্লোভ এবং নির্মোহ ব্যক্তি ছিলেন। আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। আইন অঙ্গনে তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে দেশের আইন অঙ্গনে এক বিশাল শূন্যতা তৈরি হলো।

Manual1 Ad Code

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আজ এক শোক বার্তায় স্পিকার মাহবুবে আলমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া এবং চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীও গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ।
পৃথক শোক বার্তায় তাঁরা মরহুমের বিহেদী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। শোক বার্তায় তারা বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে জাতি একজন দেশ প্রেমিক আইনজ্ঞকে হারালো। আইন অঙ্গনে তার গৃরুত্বপূর্ণ অবদান দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
শোক প্রকাশ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অর্থ মন্ত্রী আ.হ.ম.মুস্তফা কামাল, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী স.ম.রেজাউল করিম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রী ইমরান আহমদ, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ,কে.এম. এনামুল হক শামীম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ এবং সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নহিদ।

ওয়ার্কার্স পার্টির শোক

Manual8 Ad Code

অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। নেতৃবৃন্দ বলেন, তার মৃত্যুতে আইন অঙ্গণে বড় ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তার দৃঢ় ভ‚মিকা দেশ স্মরণ রাখবে। আমারা তার পরিবারের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি।

Manual6 Ad Code

সৈয়দ অামিরুজ্জামানের শোক

অ্যাটর্নি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।

Manual7 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code