সিলেট ২০শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২১
করোনার সংক্রমণ ও করোনায় মৃত্যু দিন দিন
অপ্রত্যাশিত আর আশংকাজনক ভাবে বাড়ায়
প্রচণ্ড ভয় এবং শঙ্কায় দিনাবসান হলেও কিছু
কারনে বেসম্ভব সুখ ও স্বস্তি বোধ করছি। যেমন –
০১। ধর্মীয় বিষবাষ্প এখন অনেকটাই কম। যথা –
ক) অমুক তমুক পাপে করোনা হয়।
খ) অমুক তমুক ধর্মের লোকের করোনা হয়।
গ) ধর্মীয় রীতিনীতি কড়া ভাবে পালন করলে
বা প্রার্থনালয়ে গেলে করোনা হবে না।
ঘ) অমুক ধর্মের লোক তমুক ধর্মের লোকের
শেষকৃত্য কিংবা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদন
করার খবর প্রচার করা।
ঙ) তাবলীগ জামাতের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের
কিংবা ইসকনের সাধুসন্ন্যাসীদের করোনা
আক্রান্তের খবর মহাউৎসাহে প্রচার করা।
০২। অমুক তমুক খাবারে করোনা হয় বা বাড়ে
অমুক তমুক খাবারে করোনা হয় না বা কমে
এ জাতীয় উদ্ভট মনগড়া খবর এখন আর নেই।
০৩। অমুক তমুক দেশ বা আমাদের নিজ দেশের
অমুক তমুক লোক এসে করোনা সংক্রমণ
বাড়িয়ে দিচ্ছে। ঢাকা নারায়ণগঞ্জের লোক
কিভাবে এলো, কেমনে এলো, কোন দিক
দিয়ে ঢুকলো, প্রশাসন কি করে ? তাঁরা কি
নাকে তেল দিয়ে ঘুমায় ইত্যাকার অবান্তর
কথাবার্তা এখন আর শোনা যায় না।
০৪। সরকারকে বা বিভিন্ন সিস্টেমকে দোষারোপ
বা গালাগাল। উল্লেখ্য বিশ্বের সকল দেশের
সরকারকেই করোনা নিয়ে সমালোচনা শুনতে
হয়েছে। একমাত্র করোনার জন্মস্থান চীন ছাড়া।
চীন করোনার আতুরঘর হলেও তাঁদের কোন
খবর বিশ্ববাসী জানতে পারেনি। উপরন্তু চীন
নাকি করোনার কারনে অর্থনৈতিক ভাবে শক্ত
হয়েছে ও পঞ্চাশ বছর এগিয়ে গেছে।
০৫। সাধারণ সাবান দিয়ে হাত ধৌত করলে কি
করোনা ভাইরাস ধ্বংস হবে না হ্যান্ডওয়াস
লাগবে অথবা বিশ সেকেন্ডে কি ভাইরাস
মরবে এমন আউলফাউল কথা এবার শোনা
যাচ্ছে না।
০৬। মাস্ক এটা সঠিক আর ওটা বেঠিক এমন কোন
কথাও এখন নেই। N95 মাস্ক নিয়ে তো আর
কিচ্ছা কেলেঙ্কারির শেষ ছিলোনা।
০৭। কোন করোনা রোগী সনাক্ত হলে রোগীর
নাম, পরিচয়, সে কোথা থেকে এলো না
এলো এসব নিয়ে ফালতু মাথা ঘামাতে
এখন আর দেখা যায় না। সবার অবশ্যই
মনে আছে শ্রীমঙ্গল শাহীবাগ এলাকার
অল্পবয়সী একজনকে করোনা সন্দেহ হলে
তাঁর লাল পতাকাওয়ালা বাসাটি সবাই কি
পাইকারি হারে কপি পেষ্ট করেছিলাম।
০৮। করোনার উৎপত্তি, বিস্তার বা গতিপ্রকৃতি নিয়ে
এখন আর কোন খামাখা কথা শোনা যায় না।
০৯। লগডাউনে দিনগুলোতে ঘরে থাকা না থাকা
নিয়ে অমুক বাইরে আমি ঘরে এমন বুঝদারি
কথাবার্তাও এখন কম। তবে সাধারণ কর্মজীবী
শ্রমজীবী মানুষকে অহেতুক সমালোচনা শুনতে
হয়েছে তখন। এখনও সাধারন মানুষরাই বেশি
সমালোচনার শিকার হচ্ছেন। আমাদের জানা
উচিৎ কর্মজীবী শ্রমজীবী মানুষরা কখনই কিন্ত
বিনা প্রয়োজনে বাইরে থাকেন না। কঠোর শ্রমে
ক্লান্ত শ্রান্ত সকলেই সুযোগ পেলে ঘরে ঘুমায়।
আর বিত্তবান বা স্বচ্ছলরা লগডাউনেও বেহুদা
ঘুরে বেড়ায়। কখনও টাটাকা শাকসবজি কখনও
দেশি মাছ মোরগ না হয় মর্নিং ইভিনিং জগিং এর
উছিলায় বাইরে বের হবেই।
১০। সব চাইতে এখন স্বস্তিদায়ক স্বাস্থ্যখাত নিয়ে।
অযথা হইচই নেই। সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের বা
সেবা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রতি এমনিতেই
আমাদের প্রত্যাশার কোন অন্ত-অবধি নেই।
আর করোনাকালে সেই প্রত্যাশার পারদ যে
ঊর্ধ্বমুখী ছিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরাও যে PPE’র মান এবং
অপ্রতুলতা নিয়ে কত গোস্বা করেছিলেন,
তা সকলের জানা। PPE কে পাবে আর কে
পড়তে পাবরে তা নিয়ে বিভ্রান্তি বা বাদানুবাদ
ছিলো। PPE নিয়ে এখন আর কোন ক্যাঁচাল
নাই। চলুন এখন সবাই PPE গায়ে দিয়ে নাকে
তেল দিয়ে ঘুমাই
পাদটীকা : করোনা নিয়ে গুজব, কিচ্ছা কেলেঙ্কারি,
মতানৈক্যের কোন শেষ নেই। করোনা মানেই এক
বিভ্রান্তি। করোনার সংক্রমণ, প্রশমন আর আরোগ্য
লাভের মাথামুণ্ডু বুঝা দায়। অন্ততপক্ষে আমার জন্য।
করোনা যে কিভাবে ধরে আর কিভাবে ছাড়ে তা
বুঝা বড় দায়। দেখা গেছে এক শ্রেণীর মানুষরা
স্বাস্থ্যবিধির থোড়াই কেয়ার করে মাস্ক হাতধোয়ার
ধার ধারেনা, জনজটলায় জীবনকাটায় তাঁর কিন্ত
করোনা হচ্ছে না। আবার তিনমাস ছয়মাস ঘর থেকে
বের হননি, কঠিন স্বাস্থ্য বিধির মধ্যে থেকেও কেউ
কেউ করোনায় কুপোকাত।
সতর্কতা : সাবধানের মার নেই। স্বাস্থ্য সচেতনতাই
শেষ কথা। টিকার কোন বিকল্প নাই। করোনা বা
লগডাউন নিয়ে গত বছরে সরকার প্রশাসন
সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। বাদ বাকি আমাদের ইচ্ছা।
ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনও চলে এসেছে। ভ্যাকসিন নেয়া
বা না নেয়াও সকলের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
উপসংহার উপলব্ধি :
আছি করোনার করে করে,
দেখি করোনায় কিতা করে।
————————————————————-
ছবিটি সাম্প্রতিক শীত সিজনের,
করোনার ভয় ও ভেজালমুক্ত মনে
যখন খুব ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D