সিলেট ২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক | মৌলভীবাজার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ : পাহাড়ে বনায়ন নিয়ে বাঙালি-খাসিয়াদের দ্বন্দ্ব নিরসনে জেলার সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের নিয়ে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২১) বেলা ১১টায় কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের মুনিপুরী একাডেমিতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলা সমাবেশে বাঙালি ও খাসিয়াদের কড়া বার্তা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
আইনশৃঙ্খলা অবনতি হবে এমন কিছু করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলেও সতর্ক করেন তারা। সেইসঙ্গে সামাজিক বনায়ন সঠিকভাবে বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন একটি কমিটিও ঘোষণা করেন।
হামলা-পাল্টা হামলা, মামলা-পাল্টা মামলার নিন্দা জানিয়ে সভায় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। জাতির পিতার অস্প্রাদায়িক রাষ্ট্র গঠনে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাতে বিশ্বাসী নই। আমরা সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। উপজেলা প্রশাসন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে, এদের সিদ্ধান্ত আপনাদের মানতে হবে।
চলমান দ্বন্দ্ব নিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ১০৫ নং দাগের মোট জায়গার ১৪৫ একর নিয়ে মামলা চলমান। মামলা চলমান জায়গা নিয়ে কোনো কথা নেই। বাকি ১৪১ একরের ছোটকালাইগিরি ১০ হেক্টর (২৫ একর) জায়গায় সামাজিক বনায়ন চলবে। খাসিয়ারা কোনো বাধা দিতে পারবে না। আর খাসিয়াদের সমতলে আসার পথে বাঙালিরা বাধা দিতে পারবে না। এমন কিছু হলে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সামাজিক বনায়ন চলবে।
সামাজিক বনায়নের উপকারভোগী বাছাইয়ে বনবিভাগকেও কড়া সর্তক করেন ডিসি। ডিসি বলেন, কুলাউড়ার ইউএনও, সার্কেল এসপি, ওসি, স্থানীয় চেয়ারম্যান, রেঞ্জার, উপজাতি প্রতিনিধি বাবলী তালাং ও সামাজিক বনায়নের প্রতিনিধি ইসরাইল চলমান সামাজিক বনায়নের ভালো-মন্দ সিদ্ধান্ত দেবেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, এই বন রাষ্ট্রের, এই বন বনবিভাগের। বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে, মালিকানা দেয়া হয়নি। আমরা রাষ্ট্রের বিধির আলোকেই দায়িত্ব পালন করবো। অতি উপকারভোগী হয়ে খাসিয়াদের ওপর হামলা সহ্য করা হবে না। সব নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের দায়িত্ব।
পুলিশ সুপার খাসিয়া জনগোষ্ঠীর উদ্দ্যেশে বলেন, পান চাষে রাষ্ট্র কি পাচ্ছে? রাষ্ট্রের কাছ থেকে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন, কিন্তু রাষ্ট্রকে কয় টাকা রাজস্ব দিচ্ছেন? আইন হাতে তুলে নিলে বড় ভুল হবে। উপজেলার বিষয় আন্তর্জাতিক ইস্যু না বানিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করবেন। যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে চলবেন, রাষ্ট্র আপনাদের পাশে থাকবে। তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
বনবিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কুলাউড়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চলে আগে বাঁশ ছিলো। সেই বাঁশের পরিবর্তে এখন আছে পান। এখন আর বাঁশ নেই। মহালও নেই। ৪টি বাঁশমহাল বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সামাজিক বনায়নেও আসছে বাধা। তবে সরকার ‘সিলেট বনবিভাগে পুনঃবনায়ন অবকাঠামো উন্নয়ন’ নামে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যার কার্যক্রম শুরু হবে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য দেন কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাউসার দস্তগীর। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কুলাউড়ার উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়, কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক, পৃথিমপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবাব আলী বাখর খান, বনবিভাগের পক্ষে রেঞ্জ অফিসার রিয়াজ উদ্দিন, খাসিয়াদের পক্ষে ফ্লোরা বাবলী তালাং ও উপকারভোগীদের পক্ষে হারিছ আলী।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D