দলিত সম্প্রদায়ের ১০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবি ‘বিডিইঅারএম’-এর

প্রকাশিত: ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২১

দলিত সম্প্রদায়ের ১০ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতির দাবি ‘বিডিইঅারএম’-এর

ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৪ নভেম্বর ২০২১ : আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্মলাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ থেকে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা শেষ হয়েছিল ১৬ ই ডিসেম্বর ১৯৭১ এ যার পরিসমাপ্তির মাধ্যমে আমরা লাভ করি স্বাধীন বাংলাদেশ। মা মাটি আর মাতৃভূমি হচ্ছে মানুষের অত্যন্ত আরাধ্য । মানুষের যত অনুভুতি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর আর অনুপম অনুভূতি হচ্ছে ভালবাসা। সে ভালবাসার সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে দেশ মাতৃকার প্রতি ভালবাসা। আমাদের যে স্বাধীনতা যুদ্ধ তা হচ্ছে মাতৃভূমির জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের ইতিহাস। এটা অকুতোভয় সাহসের ইতিহাস। এ ইতিহাস মহান ত্যাগের ইতিহাস। মহান স্বাধীনতা বাঙ্গালী জাতীর শ্রেষ্ঠ অর্জন। ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত/সম্ভ্রম আত্মত্যাগ এর বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীন দেশ, স্বাধীন পতাকা। জাতি শ্রদ্ধাভরে আত্বোৎসর্গকারীদের স্মরণ করে। আত্বোৎসর্গকারীদের মধ্যে রয়েছে দলিত সম্প্রদায়ের ১০ জন সমাজকর্মী।

১৯৭১ সালের ২২শে নভেম্বর দলিত সম্প্রদায়ের ১০ জন সমাজকর্মীকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানা যায় পাকিন্তানি হানাদার বাহিনী হত্যা করেছে। তাদেরকে পাওয়া গেলো বধ্যভূমি রায়ের বাজারে। কিন্তু এই ১০জন এখনও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি। তাদের স্বীকৃতির দাবিকে একাধিক রাজনীতিবীদ, সরকারি কর্মকর্তা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সব কিছু এখনও প্রতিশ্রুতিতেই রয়ে গেছে, আলোর মুখ দেখেনি।

প্রতি বছর ২২ই নভেম্বর এই ১০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বিভিন্ন সংগঠন।

সোমবার (২২ই নভেম্বর ২০২১) সন্ধ্যা ৬টায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে সমমনা কিছু সংগঠন। এ সময় বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম), নাগরিক উদ্যোগ, দলিত নারী ফোরাম, হরিজন ঐক্য পরিষদ, হরিজন সেবক সমিতি, ওয়াারী সমাজ কল্যান যুব সংঘ প্রভৃতি সংগঠনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী এবং বিডিইআরএম-এর উপদেষ্টা জাকির হোসেন, বিডিইআরএম-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং দলিত নারী ফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক মনি রানী দাস, হরিজন ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণা লাল ও সাধারণ সম্পাদক নির্মল চন্দ্র দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক পান্নালাল বাঁশফোর, বিডিইআরএম-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কৈলাশ রবিদাস, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তামান্না সিং বাড়াইক প্রমূখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সনের ২২শে নভেম্বর কাল রাত্রিতে পাকহানাদার বাহিনীর হাতে মিরনজিল্লার দলিত জনগোষ্ঠী যে ১০ জন কৃতিসন্তান শহীদ হয়েছিলেন, তাদের স্বীতৃকি দিতে না পারা আমাদের জন্য লজ্জা, জাতির জন্য লজ্জার।

অনতিবিলম্বে তাদের মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভূক্তিসহ পরিবারগুলোকে আর্থিকভাবে পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানানো সরকারের প্রতি।