শব্দ দূষণের রোগী এখন ঘরে ঘরে, আইন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিকার জরুরি

প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২

শব্দ দূষণের রোগী এখন ঘরে ঘরে, আইন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিকার জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ : “শব্দ দূষণের রোগী এখন ঘরে ঘরে। এখনই প্রতিকার জরুরী। রাত এবং দিনের শব্দের মাত্রা তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে সবাইকে গণহারে সচেতন করতে হবে। একই সঙ্গে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেও শব্দ দূষণকারীকে পরিবেশ আইন প্রয়োগ করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।”

ই কিউ এম এস কনসাল্টিং লিমিটেড এবং বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২) সকাল দশটায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে “শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প”-এর আওতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রকল্প সম্পর্কে সার্বিক ধারণা প্রদান করেন ক্যাপসের গবেষনা পরিচালক ও স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর প্রভাষক আবদুল্লাহ আল নাঈম।

পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে দেশের প্রতিটি জেলা শহরে শব্দ মাত্রা পরিমাপের বিষয়ে সমীক্ষা ও সচেতনতামূলক মতবিনিময় সভায় ফরিদপুর জেলা পরিবেশ কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এ এইচ এম রাশেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপক কুমার রায়।
বক্তব্য রাখেন ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার শাহ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা, ফরিদপুর জেলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসাদুর রহমান, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি জাহিদ রিপন, গ্লোবাল ল থিংকার্স সোসাইটি’র ফরিদপুরের সাধারণ সম্পাদক শাহিন ইসলাম মাহিন, ময়েজউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদ আল সিদ্দিকী, ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিদ্দিকুর রহমান, ফরিদপুর জেলায় স্কুলের ছাত্র হৃদয় শিকদার, দিবাকর গোস্বামী, মোঃ নাঈমুর রহমান মৃধা প্রমূখ।

ডাক্তার মোঃ শাহ আলম ভদ্র বলেন, শব্দ দূষণের রোগী এখন ঘরে ঘরে। বিশেষ করে যারা হার্ট অ্যাটাকের রোগী তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে শব্দ দূষণের কারণে। এই কারণে মাথাব্যথা, কানে কম শোনা সহ নানা রোগের উদ্রেক হয়। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ আইন যদি এখনই প্রয়োগ করে এর নিয়ন্ত্রণ না করা যায়, তাহলে এর ভয়াবহতা অনেক বেশি পরিমাণে মুখোমুখি হতে হবে।  মানুষের অনেক বেশি ভোগান্তি পোহাতে হবে।

জাহিদ রিপন বলেন, শব্দ দূষণের কারণে ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া আমার মেধাবী মেয়ে এখন শয্যাশায়ী। শব্দ দূষণের প্রভাবে আমার পুরো পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। শব্দের মাত্রা বেশি হলে পুলিশের মাধ্যমে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। হাইড্রোলিক হরেন আতশবাজি এগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে এবং একই সাথে অযথা হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণ করা অতীব জরুরী।

মোহাম্মদ মাহমুদ আল সিদ্দিকী বলেন, গাড়িচালকদেরকে সচেতন করতে হবে উচ্চহারে গান-বাজনা শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য সাধারণ মানুষকে আগে সচেতন করতে হবে। রাত এবং দিনের শব্দ তুলনা করে সচেতন করার বিষয়টি বিবেচনায় আনা জরুরি। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ব্যস্ত এলাকাগুলোর শব্দ দূষণের উৎস বের করে ঐ সকল এলাকায় জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান করতে হবে।
দিবাকর গোস্বামী বলেন, শব্দ ভালো তবে দূষণ ভালো নয়। দেশে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কিন্তু শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে করতে হবে। প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করে করতে হবে।

নাঈমুর রহমান মৃধা বলেন, পরিবেশের যে আইন রয়েছে তা আসলে বাস্তবায়ন নেই। সচেতনতা হয়না, প্রয়োগেরও ব্যবস্থা করতে হয়। শব্দ দূষণের মাধ্যমে বর্তমানে সামাজিক অস্থিরতা শুরু হয়েছে। এখনই এর প্রতিকার জরুরী।
বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের নেতৃত্বে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় পরিচালিত “শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প” সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, স্কুল ও কলেজ শিক্ষক, মসজিদের ইমামসহ স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে গতকাল বুধবার আলাদাভাবে মতবিনিময় করা হয়।