সিলেট ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২২
প্রধানমন্ত্রী বললেন, “আপনি ভাতা নেন, একলা এভাবে কতদিন চলবেন..”
রমা বললেন, “ছেলে দিয়েছি, স্বামী দিয়েছি, সম্ভ্রম দিয়েছি। তার তো ক্ষতিপূরণ হবে না। ভাতা নিয়ে কি করব!?”
ধর্ষিতা হওয়ায় যুদ্ধের পর ওঁকে একঘরে করে দেয়া হয়। অথচ তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর।
নিজের হাতে বই লিখতেন, সে বই ছাপাতেন, ফেরিওয়ালার মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই ফেরি করতেন, পয়সা যা হতো তাই দিয়ে একলা মানুষটার জীবন চলতো। এই মানুষটির বাড়ি আদতে একটি খড়ের চালার কুঁড়েঘর। যার আশপাশের বাসিন্দা কুকুর, বেড়াল, কাক, পেঁচা।
জুতো পরতেন না রমা। লোকজন জিজ্ঞেস করলে বলতেন, “এই মাটিতে আমার ছেলেরা ঘুমায়, জুতো পরে ওদের বুকের রক্তের ওপর পাড়া দিয়ে হাঁটব কি করে !”
এই রমা আমাদের যুদ্ধজননী। ৪৫টা বছর যিনি খালি পায়ে রৌদ্রতপ্ত পিচঢালা পথে হেঁটে বেড়িয়েছেন। নিজের চোখের সামনে সন্তানদের মৃত্যু দেখেছেন যিনি, যিনি দুচোখে দেখেছেন পাকিস্তানের দোসররা মানুষের ঘরবাড়ি দাউদাউ করে জ্বালিয়ে দিতে।
এদেশ থেকে তাঁর নেয়ার কিচ্ছু নেই, দেবার ছিল। দিয়ে গেছেন। মৃত্যুতে তাঁর লজ্জায় ডুবিয়ে দিয়ে গেছেন গোটা জাতিকে ।
ভেবেছিলেন বই বেচা পয়সায় একটা অনাথ আশ্রম করবেন, সে আশা আর পূর্ণ হলো কই!
এমন কতো রমা চৌধুরী এখনো যুদ্ধ করেন, এখনো খালি পায়ে হেঁটে বেড়ান, কত আজাদের মা সাফিয়া বেগমরা ভাত খান না শতবছর, কত জাহানারা ইমাম আগলে রাখেন রুমিদের মেডেল-ট্রফি।
এঁদের যুদ্ধের কাছে বারবার হেরে যায় বাংলাদেশ, সে হারায় দুঃখ নেই, আছে লজ্জা, আছে গর্ব, আছে প্রেরণা।
মাটিতেই তো ছিলেন আজীবন। কবরে থাকতে অসুবিধে হবে না মায়ের। স্রষ্টা আমাদের মতো নির্মম নন।
৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত আর ২ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া আমার এই সোনার বাংলাদেশ।
বিজয়ের মাসে শ্রদ্ধা ভরে স্বরন করছি সেই সব বীর শহীদদের । যেখানে থাকুন ভালো থাকুন মা, রমা চৌধুরী 🖤🖤
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D