শ্রম অধিদপ্তরের মিটিং প্রসঙ্গে

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২২

শ্রম অধিদপ্তরের মিটিং প্রসঙ্গে

রাজু নুনিয়া |

গতকাল বুধবার (১৭ই আগষ্ট ২০২২) ঢাকায় শ্রম অধিদপ্তরে চা শ্রমিকদের সাথে মালিকপক্ষ ও সরকারপক্ষের মিটিংয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলাম। শুধু কনফিডেনশিয়াল মিটিং ব্যতীত। মিটিংয়ে অনেক রং তামাশা, অভিনয় এবং রাজনীতি ও কুটনীতি দেখলাম। যাইহোক এইসব এর ডিটেইলসে আমি আর যাচ্ছি না।

তবে আমি যা অনুভব করলাম তা যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত আকারে নিচে তুলে ধরলাম,

১। আমাদের নেতৃবৃন্দের আরো দক্ষ হওয়া দরকার কথাবার্তায়, সাংগঠনিকভাবে এবং টেকনিক্যালি।

২। শ্রম আইনগুলো উনাদের পয়েন্ট টু পয়েন্ট, বিশেষ করে বৈষম্যগুলো আত্মস্থ করা দরকার।

৩। যখন শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে ছিলাম তখন আমার একটা কথা উনাদের দেখে প্রায়ই মনে হচ্ছিল উনারা যেন হীনম্মন্যতায় ভুগছেন এবং ভয় পাচ্ছেন। যেন উনারে নিজেকে সেখানে মানিয়ে নিতে পারছেন না।

৪। কোন একটা চুক্তি কিংবা মিটিংয়ের পূর্বে আপনাদের নিজেদের একটা প্রিপারেশন যেমন, সম্ভাব্য কি কি চ্যালেঞ্জ আপনারা ফেইস করবেন এবং এর সম্ভাব্য সমাধান কি হবে বা দরকষাকষির সময় আপনাদের স্ট্রং পয়েন্টগুলো কি হবে, তা আগে থেকে ঠিক করা এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা, যা আপনাদের ছিল বলে মনে হয় নি।

৫। সচেতন চা ছাত্র যুবক যারা উপস্থিত ছিল তাদের প্রায়শই চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা এভয়েড করার চেষ্টা করেছেন (কয়েকজন ব্যতীত)। কিন্তু কেন বুঝলাম না, ছাত্রযুবক তো আপনাদের স্বার্থে ও সহযোগিতার জন্যই উপস্থিত ছিল।

৬। সচেতন ছাত্র যুবক যারা ছিলেন তারা আবেগাপ্লুত হয়ে যা তা না বলে বরং বক্তব্য আরো গুছানো ও মার্জিত হওয়া উচিত ছিল। আর একটি কথা মাথায় রাখা উচিত, নিজেকে জাহির না করে বরং চা শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থটি মাথায় রাখা।

৮। প্রেস ব্রিফিংয়ের পর চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ এবং চা ছাত্র যুবকদের উচিত ছিল শান্তিপূর্ণভাবে বসে মতামত বিনিময় করা এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করা। কারন এ আন্দোলনে ছাত্রদের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। কিন্তু তা না করে উনারা দুপক্ষই যা করলেন তা কাম্য ছিল না।

৭। প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় দেশের নামি দামি সব মিডিয়া উপস্থিত ছিল, এবং তারা ঢালাওভাবে সব প্রচার করেছেন, সেই হিসেবে চা শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে রামভজন বাবু যখন কথা বলছিলেন তখন উনার উচিত ছিল মালিকপক্ষের সবগুলো যুক্তির খন্ডায়ন করা। কিন্তু যথেষ্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হয়েও তিনি তা করেন নি, যা খুবই দুঃখজনক ছিল। কারণ এতে চা শ্রমিকদের সম্পর্কে নেগেটিভ ভিউ তৈরি হবে।

আর একটি বিষয় আমার বোধগম্য হয় নি যা তা হলো, উনি মজুরি বিষয়ে যখন ৩০০ টাকাতেই অটল থাকছেন তাহলে আলোচনা এবং প্রেস ব্রিফিংয়ের সময়ই পরিষ্কার জানিয়ে দিতেন যে, ৩০০ টাকার কম আমরা মানছি না। উল্টো আপনি ডিসিশন জানানোর জন্য আর একদিন সময় নিলেন। তার কি আদৌ কোন দরকার ছিলো ??

বি.দ্র. উপরের মতামতগুলো আমার একান্ত মতামত। তাই এই বিষয়ে আমাকে কেউ বিজ্ঞ বা পন্ডিত মনে করবেন না।
ধন্যবাদ। ❤️

আন্দোলন চলছে এবং চলবে দাবি না মানা পর্যন্ত।
জয় হোক মেহনতি চা শ্রমিকদের। 🙏।
#
রাজু নুনিয়া
সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উৎস

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ