সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী অাজ

প্রকাশিত: ২:০৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২

সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী অাজ

Manual2 Ad Code

ঢাকা, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২২: মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্ণেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী অাজ।
লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, সেনা কর্মকর্তা ও লেখক ছিলেন।
শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে আহ্বায়ক করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, সাংবাদিক, কবি, সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন পেশাজীবীদের নিয়ে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।
তিনি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা পরিষদে প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২০ সালের ০৫ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে রাজধানীর সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

আবু ওসমান চৌধুরী ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার মদনেরগাঁও গ্রামের চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আব্দুল আজিজ চৌধুরী এবং মায়ের নাম মাজেদা খাতুন। নিজ গ্রাম মদনেরগাঁওয়ের ফ্রি প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪৫ সালে পার্শবর্তী গ্রামে মানিকরাজ জুনিয়র হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে ১৯৫১ সালে প্রথম বিভাগে এসএসসি পাশ করেন। পরে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি ভর্তি হন তিনি। কিন্তু ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ, শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক নানা সমস্যার কারণে ঢাকা কলেজে এইচএসসি সম্পন্ন করতে পারেন নি তিনি। পরে ১৯৫৪ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৫৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে তিনি বিএ পাস করেন।

Manual3 Ad Code

কর্মজীবন

Manual3 Ad Code

১৯৫৭ সালে আবু ওসমান ঢাকা বিমানবন্দরে ‘বিমানবন্দর অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। এই পদের প্রশিক্ষণে থাকাকালীনই তিনি সেনাবাহিনীতে কমিশনের জন্য প্রদত্ত পরীক্ষায় পাস করায় আন্তবাহিনী নির্বাচন বোর্ডে উপস্থিত হবার জন্য আহ্বান পান। ১৯৫৮ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি তত্‍কালীন পশ্চিম পাকিস্তানের কোহাটে অবস্থিত অফিসার্স ট্রেনিং স্কুলে (ওটিএস) যোগ দেন। সেখানে ৯ মাসের কঠিন প্রশিক্ষণের পর ১৯৫৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি মেজর পদে পদন্নতি লাভ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

Manual7 Ad Code

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আবু ওসমান চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মেজর পদে কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট-এর সংবাদ পেয়ে ২৬শে মার্চ সকালে বেলা ১১টায় তিনি চুয়াডাঙ্গার ঘাঁটিতে পৌঁছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সৈন্য যোগ দেন। এর আগে ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে সে রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ পশ্চিমাংসের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন। মে মাসের শেষার্ধে প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনকে দুই ভাগ করে ৮নং ও ৯নং সেক্টরদ্বয় গঠন করেন এবং ৮ নং সেক্টরের দায়িত্বে আবু ওসমানকে নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিকভাবে সে সময় ওই সেক্টরের অপারেশন এলাকা ছিল কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর ও পটুয়াখালী জেলা। মে মাসের শেষে অপারেশন এলাকা সংকুচিত করে কুষ্টিয়া ও যশোর, খুলনা জেলা সদর, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ নিয়ে এই এলাকা পুনর্গঠন করা হয়। এই সেক্টরের প্রধান ছিলেন আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর এম এ মঞ্জুর।

Manual1 Ad Code

প্রকাশিত গ্রন্থ

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১), এক নজরে ফরিদগঞ্জ (১৯৯০), সময়ের অভিব্যক্তি (১৯৯৬)
সোনালী ভোরের প্রত্যাশা (১৯৯৬), বঙ্গবন্ধু: শতাব্দীর মহানায়ক (১৯৯৬)।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ