খুলনার ৩শ’ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জাতীয় কৃষক সমিতির

প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২২

খুলনার ৩শ’ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ জাতীয় কৃষক সমিতির

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ : জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড আমিনুল ইসলাম গোলাপ আজ বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর ২০২২) এক বিবৃতিতে বলেন, খুলনার দাকোপের বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি সবাইকে কৃষিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ১ ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রেখে সেখানে একটা তরকারি গাছ বা মরিচ গাছ হলেও রোপণের তাগিদ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য ও কৃষিক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন নীতি জনমনে আশার সঞ্চার করলেও বিভিন্ন প্রকল্পে যেভাবে কৃষিজমি গ্রাস করা হচ্ছে, তা আশঙ্কাজনক। কৃষিজমি ধ্বংসের এ প্রক্রিয়ায় সামিল হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। সম্প্রতি মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ পশুর নদ ড্রেজিং করতে ‘মোংলা বন্দর ইনারবার ড্রেজিং’ নামে একটি প্রকল্প নিয়েছে। এ প্রকল্পের জন্য পশুর নদে ড্রেজিং করা মাটি ফেলার জন্য ১ হাজার একর জমি হুকুম দখলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে খুলনার দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি, উর্বর কৃষিজমি। বানিশান্তা, আমতলা, ভোজনখালী, খাজুরা ও ঢাংমারী-এ ৫ গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার তাদের জীবন ও জীবিকার জন্য সম্পূর্ণরূপে এ কৃষি জমির ওপর নিভর্রশীল। এ জমিতে ড্রেজিংয়ের মাটি ফেললে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হবে হাজারেরও বেশি সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০২২ সালের শুরুতে খুলনা জেলা প্রশাসন বানিশান্তা এলাকার ২৫০ জন কৃষিজমির মালিককে হুকুম দখলের নোটিশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলে এলাকার কৃষিজমির মালিকরাসহ অন্য কিষান-কিষানিরা আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসককে লিখিত অভিযোগ দেন। তারও আগে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর বানিশান্তা ইউনিয়ন ভূমি অফিস জানিয়ে দেয় যে বানিশান্তায় মাটি ভরাট করা হলে জনরোষের আশঙ্কা রয়েছে। কিষান-কিষানির সব অভিযোগ ও মতামত উপেক্ষা করে বানিশান্তার ৩০০ একর কৃষিজমি হুকুম দখলের প্রক্রিয়া শেষ করেন খুলনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জনগণকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নয়, তাদের যৌক্তিক দাবিকে মেনে নিয়েই ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার সংকটকে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। এলাকার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক, আন্দোলনরত কিষাণ-কিষাণি ও নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ নিয়ে অকৃষি জমি রয়েছে এমন বিকল্প স্থান যেন ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার জন্য বেছে নেওয়া হয়।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে খুলনার দাকোপের বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্ত বাতিল করার আহবান জানান।

খুলনার দাকোপের বানিশান্তা ইউনিয়নের ৩০০ একর তিন ফসলি জমিতে ড্রেজিংয়ের বালু ফেলার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, সাপ্তাহিক নতুন কথার বিশেষ প্রতিনিধি, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান বলেন, ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার সংকট নিরসনে এলাকার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক, আন্দোলনরত কিষাণ-কিষাণি ও নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ নিয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এরজন্য অকৃষি জমি রয়েছে এমন বিকল্প স্থান যেন ড্রেজিংয়ের মাটি ফেলার জন্য বেছে নেওয়া হয়।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ