চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা

প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২৩

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা

Manual8 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ : বাংলাদেশ ব্যাংক আজ রবিবার (১৫ জানুয়ারি ২০২৩) চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) দ্বিতীয়ার্ধের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ মুদ্রানীতি (এমপিএস) ঘোষণা করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে এমপিএস ঘোষণাকালে গভর্নর ড. আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, এ মেয়াদের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতি ও ঋণ কর্মসূচি মুদ্রাস্ফীতি ও বিনিময় হারের চাপ রোধ, কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি লাভে সহায়তা, অর্থনীতির উৎপাদনশীল ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী কর্মকান্ডে প্রয়োজনীয় তহবিলের প্রবাহ নিশ্চিত করতে সতর্কতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতিগত অবস্থান বজায় রাখবে।
নতুন নীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১৪.১ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে এবং পাবলিক ক্রেডিট প্রবৃদ্ধির সীমা জুনে আগের সর্বোচ্চ সীমা ৩৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৭.৭ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।
তালুকদার বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের শূন্য কোভিড নীতি, ইউরোপে জ্বালানি ঘাটতি, যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষণশীলতা এবং উন্নয়নশীল দেশে ঋণের বোঝা আকাশচুম্বী হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতি জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষ করে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও রাশিয়ায় কোভিড-১৯ সংক্রমনের নতুন ঢেউ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় উদ্বেগ। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয় এবং প্রধানত বাহ্যিক ধকলের কারণে গত কয়েক মাসে মুদ্রাস্ফীতি, তারল্য ও বিনিময় হারের ক্ষেত্রে চাপের সম্মুখীন হয়েছে। উচ্চ এনপিএল অনুপাত এবং ব্যাংক ও এনবিএফআইগুলোতে সুশাসনের সমস্যাও অর্থনীতির আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগের বিষয়।’
তিনি বলেন, এসব চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বেশকিছু নীতিগত উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে বাজারে বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রির মাধ্যমে পরিমাণগত কঠোরতার মধ্যে নীতিগত সুদের হার বাড়ানো; ব্যাংক ও এনবিএফআইগুলোর জন্য রেপো এবং তারল্য সহায়তা সুবিধাসমূহ অব্যাহত রাখা এবং কঠোর তারল্য অবস্থা কাটাতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা প্রদান; বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা; রপ্তানি ও রেমিট্যান্স উৎসাহিত করতে সুবিধা বৃদ্ধি করা; এবং এনপিএল ও সুশাসন সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক ব্যাংক ও এনবিএফআইগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া।
তালুকদার আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তার বর্তমান নীতিগত অবস্থানের অংশ হিসেবে পলিসি রেট ২৫ বেসিস পয়েন্ট, রেপো রেট ৫.৭৫ শতাংশ থেকে ৬.০০ শতাংশ এবং রিভার্স রেপো রেট ৪.০০ শতাংশ থেকে ৪.২৫ শতাংশে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থনীতির বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে প্রয়োজনীয় তহবিল প্রদানের মাধ্যমে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি আমদানি-প্রতিস্থাপক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে উন্নীত করার এবং বিনিময় হারের চাপ কমাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষা এবং আমদানিকৃত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য অ-প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি রোধ করার চেষ্টা করে।’
তিনি জানান, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমানতের ফ্লোর রেট সম্পূর্ণ অপসারণের সাথে সাথে গ্রাহক ঋণের ক্ষেত্রে ঋণের হারের সীমা ৩.০০ শতাংশ পয়েন্ট পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ক্রেডিট কার্ড ঋণের জন্য কোন ঊর্ধ্বসীমা নেই।
তিনি বলেন, একটি উপযুক্ত অর্থনৈতিক অবস্থার উপস্থিতিতে অবশিষ্ট ঋণ হারের সীমা তুলে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এই অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাজার-ভিত্তিক, নমনীয় ও একীভূত বিনিময় হার ব্যবস্থার (২.০০ শতাংশ পরিবর্তনের মধ্যে) দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code