শ্রীমঙ্গলে চা বাগান পঞ্চায়েত, নারী ও কিশোরীদের জীবন দক্ষতা ও আইজিএ প্রশিক্ষণ শুরু

প্রকাশিত: ১:০৩ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৩

শ্রীমঙ্গলে চা বাগান পঞ্চায়েত, নারী ও কিশোরীদের জীবন দক্ষতা ও আইজিএ প্রশিক্ষণ শুরু

বিশেষ প্রতিনিধি | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ২০ জুন ২০২৩ : শ্রীমঙ্গলে ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের লিডার প্রকল্পের সহযোগিতায় চা বাগানের পঞ্চায়েত, নারী ও কিশোরীদের জন্য জীবন দক্ষতা ও আইজিএ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
অক্সফ্যাম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহায়তায় এবং ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সর উদ্যোগে লিডারশীপ এমবডি এসোসিয়েশন ডিমানডিং টু এনশিওর রাইটস (লিডার) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে গত রবিবার (১৮ জুন ২০২৩) তারিখে শুরু করা হয়। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫টি চা বাগানে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান এই প্রকল্পের সমন্বয়কারী পারভেজ কৈরী।
প্রাথমিকভাবে শ্রীমঙ্গলে পাচঁটি চা বাগানে উক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হয়। শ্রীমঙ্গলের সাতঁগাও চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটিসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কিশোর কিশোরীদের জন্য এই প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের শ্রীমঙ্গল প্রকল্প অফিসে চা বাগানের পঞ্চায়েত, নারী চা শ্রমিক ও কিশোরীদের প্রশিক্ষণে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ এ কন্দ, সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালীর সভাপতি বিজয় হাজরা।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমটি পরিচালনা করেন লিডার প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা প্রভাষ নায়েক।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুন ২০২৩) তারিখে সাতঁগাও চা বাগানের চা শ্রমিক নারী ও কিশোরীদের মধ্যে লাইফ স্কিল এবং আইজিএ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আইজিএ প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি পরিচালনা করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অসীম কুমার কর। উক্ত প্রশিক্ষণে সাতঁগাও চা বাগানের ২৫ জন অংশগ্রহণ করেন।

অক্সফ্যাম ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর পারভেজ কৈরী বলেন, প্রকল্পটি অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি প্রকল্প। প্রকল্পটির লক্ষ্য হলো লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধে চা বাগানের নারী শ্রমিক ও কিশোরী মেয়েদের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটানো এবং দায়িত্ব বাহককে জবাবদিহি করা। এর উদ্দেশ্যে হলো নারী শ্রমিক ও কিশোরী মেয়েদের জন্য মতামত প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করা, যাতে তারা সম্মিরিতভাবে তাদের অধিকার রক্ষার জন্য মতামত প্রদান করতে পারে;
২. চা বাগানের নারী শ্রমিক এবং কিশোরীদের জীবন দক্ষতা বৃদ্ধিও মাধ্যমে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে এবং নিজেদের উন্নয়নে প্রয়োগ করতে পারবে; চাবাগানের নারী শ্রমিকরা উপযুক্ত নেতৃত্ব ও দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটির উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে কয়েকটি কাজ হলো সক্ষমতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা, আমরা পারবো-নারী ও কিশোরী সংঘ গঠন, কমিউনটির চা বাগানের নারী শ্রমিক এবং কিশোরী দলে নিয়মিত মাসিক সভা আয়োজন, চাবাগানের নারী ও কিশোরী মেয়েদের জন্য জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন, জেন্ডার টক বা নারী পুরুষের বৈষম্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, সমঝোতা, যোগাযোগ এবং নেতৃত্ব উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান, জেন্ডার বিষয়ে সচেতনতাবৃদ্ধির জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, সরকারি কর্তৃপক্ষ, চা বাগান মালিক ও বাচাশ্রই এর মধ্যে ডায়ালগ সেশন আয়োজন করা, স্টেকহোল্ডারদের সাথে লার্নিং শেয়ারিং মিটিং আয়োজন করা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য যে, প্রকল্পটি সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার এবং সিলেট জেলার ২৫ টি চা বাগান নিয়ে কাজ করছে।
উক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমগুলো পর্যায়ক্রমে অন্যান্য চা বাগানগুলোতেও শুরু হবে বলে জানান প্রকল্প সমন্বয়কারী পারভেজ কৈরী।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ