রাখী দাশ পুরকায়স্থ : সমাজ প্রগতির এক আভাময় সত্তা

প্রকাশিত: ১২:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩

রাখী দাশ পুরকায়স্থ : সমাজ প্রগতির এক আভাময় সত্তা

সাইদুর রহমান |

রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন স্বনামেই খ্যাত। তাঁর মহতী জীবনবোধ তৈরি হয়েছিল মাটি ও মানুষের মুক্তি সংগ্রামের গন্ধ মেখে। রাষ্ট্রভাষা বাংলা রক্ষার প্রত্যয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যখন জাতীয়তাবাদী চেতনা নতুন আঙ্গিকে দানা বাধছে, ঠিক সেসময় ১৯৫২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাখী দাশ পুরকায়স্থের জন্ম। পিতা বিরজা মোহন দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন উদার মুক্তবুদ্ধির মানুষ, সিলেটের খ্যাতনামা আইনজীবী। মা ঊষা রানী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন সংস্কারমনা প্রগতিশীল চেতনার বাতিঘর। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের সাক্ষাৎ শিষ্য। পিতা-মাতা দু’জনেই ছিলেন সমকাল অগ্রবর্তী দেশব্রতী মানুষ। মূলত আলো ঝলমলে পারিবারিক পরিবেশের কারণে শৈশব-কৈশোরেই রাখী দাশ পুরকায়স্থ’র মনে স্বদেশ চেতনা পুষ্ট হয়েছিল। শুধু তিনি নন, তাঁর সবগুলো ভাইবোনই প্রাগ্রসর চেতনায় বেড়ে উঠেছেন। বড় বোন ড. নিবেদিতা দাশ পুরকায়স্থ তো বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে যাওয়া এক বর্ণিল আলোকছটা।

রাখী দাশ পুরকায়স্থ’র একটি সমৃদ্ধ ভাবনার জগৎ ছিল। সেই ভাবনা শক্তি দিয়েই তিনি নিজের জীবনের গতিপথ নির্দিষ্ট করে নিয়েছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন নিবেদিতপ্রাণ সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী। তবে সমকালীন সমাজ এবং শাসকগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁর জীবনের এই ক্ষেত্রটি পলিময় ছিল না। সিলেট মহিলা কলেজে পড়াকালীন সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার কারণে বড় বোন নিবেদিতা-সহ রাখী দাশ পুরকায়স্থ’কে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিয়ে বের করে দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা দু’বোন চলে যান কুমিল্লা মহিলা কলেজে। এই কলেজে এসে রাখী দাশ’র জীবনে যুক্ত হয় নতুন মাত্রা। সেলিনা বানুর মতো শিক্ষাবিদ ও অসাধারণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্য এবং শহীদুল্লাহ কায়সার ও শিরিন বানু মিতিল প্রমুখের সাথে সখ্যতার মধ্য দিয়ে তিনি আরো অধিক রাজনীতি সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়েন।

১৯৬৯ সালে কুমিল্লা মহিলা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে তিনি বিএসসি-তে ভর্তি হন ঢাকার ইডেন গার্লস কলেজে। ১৯৭০ সালে রাখী দাশ পুরকায়স্থ ইডেন গার্লস কলেজ ছাত্রী সংসদে ম্যাগাজিন সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসের অংশ হয়ে পড়েন। এরপর ১৯৭২ সালে ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেল থেকে ভিপি নির্বাচিত হয়ে তুমুলভাবে আলোচনায় চলে আসেন।

রাখী দাশ পুরকায়স্থ মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতিপর্বে ছাত্রদের সংগঠিতকরণ কার্যক্রম এবং নারী ব্রিগেডের অস্ত্রচালনা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভারতে যেয়ে বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে দায়িত্ব পালন করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর ইডেন কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৩ সালে ডাকসু নির্বাচনে শামসুন্নাহার হল সংসদে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেল থেকে বৈরি পরিবেশেও বিপুল ভোটে ভিপি নির্বাচিত হন। এ যেন হার না মানা এক নারীর জয়রথ।

১৯৭৪ সালে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আরেক রাজনীতিমগ্ন মানুষ পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সাথে। ষাটের দামাল দশকের তুমুল প্রভাবশালী ছাত্রনেতা তখন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পাটি’ (ন্যাপ)-এর সাধারণ সম্পাদক। তিনি তখন সারাদেশে এক নামে পরিচিত তরুণ জাতীয় নেতা। রাজনীতির এই শুদ্ধতম পুরুষের সাথে যৌথজীবন শুরুর মধ্য দিয়ে রাখী দাশ পুরকায়স্থ আরেক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করলেন। জীবন-জীবিকা নির্বাহের চ্যালেঞ্জ। একজন সার্বক্ষণিক রাজনীতিকের ভরণ-পোষণ ও যাবতীয় সংসার চালানোর জন্য তিনি নিজের রাজনৈতিক জীবনের ইতি টেনে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন। কিছুদিন দু’টি এনজিও-তে চাকরি করে ১৯৮০ সালে সরকারের স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। স্রোতের বিপরীতে উজান বাওয়া মানুষ হিসেবে তিনি সরকারি চাকরি জীবনে সর্বোচ্চ সততা ও সাহসিকতার প্রমাণ রেখেছেন। বাংলাদেশের কৃষি নিয়ে, কৃষকের উন্নয়ন নিয়ে তিনি ভেবেছেন গভীর অন্তর্বীক্ষণে। তিনি মনে করতেন- গ্রামের উন্নয়ন ছাড়া, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন ছাড়া দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই মানসিকতায় প্রায় ৩০ বছর সরকারি চাকরি করে যুগ্ম সচিব পদমর্যাদা নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এরপর আইনজীবী হিসেবে শুরু করেন নতুন জীবন। সে এক বিরাট কাহিনি।

পিতা বিরজা মোহন দাশ পুরকায়স্থের স্বপ্ন-আকাঙ্খা ছিল তাঁর সন্তানদের কেউ একজন আইনজীবী হোক। এটা রাখী দাশ পুরকায়স্থ জানতেন। কিন্তু ভাইবোনদের কেউ পিতার এই স্বপ্ন পূরণ না করার কারণে তিনি নিজেই শেষ বয়সে আইনজীবী হয়েছিলেন। পিতার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি সমাজের নির্যাতিত ও বিপন্ন মানুষকে আইনি সহায়তা প্রদানের ইচ্ছেও তাঁকে আইনজীবী হবার ক্ষেত্রে প্রেরণা যুগিয়েছিল। কিন্তু মরণব্যাধি তাঁর বড়মাপের আইনজীবী হবার জীবনপথ রুদ্ধ করে দেয়।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের পূর্বেই রাখী দাশ পুরকায়স্থ ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদে সম্পৃক্ত হয়ে নারীমুক্তি আন্দোলনে নিবেদিত হন। তিনি প্রায় সাড়ে ৪ দশক মহিলা পরিষদের বিভিন্ন সাংগঠনিক পর্যায়ে কাজ করেছেন। সংগঠনটিকে সারাদেশের নারী সমাজের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অনন্য। রাখী দাশ পুরকায়স্থ সাংগঠনিক ও নীতি-কৌশল প্রণয়নে দুর্দান্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সংগঠনটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন এবং এই পদে থাকা অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।

নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর সমানাধিকার এবং সর্বোপরি সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হলে সমাজ আগাবে না- এই মর্মবোধে জীবনের সবটুকু প্রচেষ্টা দিয়ে তিনি লড়েছেন নারী সমাজের অগ্রগতি নিশ্চিত করার সংগ্রামে। সারা দেশ ছুটে বেড়িয়েছেন। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তিনি নারী উন্নয়নের নীতি-কৌশল প্রণয়নে কাজ করেছেন। নারীকে আপন শক্তিতে জেগে উঠার পরিবেশ ও প্রতিবেশ নির্মাণে তিনি সর্বদা ব্যাপৃত ছিলেন।

রাখী দাশ পুরকায়স্থের জীবন দর্শনের প্রধানতম দিক ছিল অসাম্প্রদায়িকতা ও মানুষের কল্যাণ সাধন। তাঁর মানস চেতনার পুরোটা জায়গাজুড়ে ছিল সামাজিক সাম্য ও মানবাধিকার। একটি উদার গণতান্ত্রিক সমতাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন জীবনের প্রথমভাগে; সেখানেই তিনি অবিচলভাবে স্থির ছিলেন। কর্মজীবনে নানারকম সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি সুবিধামুখী হননি। যেমনটি হননি তাঁর স্বামী বরেণ্য রাজনীতিক পঙ্কজ ভট্টাচার্য।

সংখ্যালঘু ও আদিবাসী মানুষের জন্য রাখী দাশ পুরকায়স্থ ছিলেন অত্যন্ত সংবেদনশীল। পাহাড়ে-সমতলে যেখানেই তারা নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছে, আপন জন্মমাটি হতে উপড়ে পড়েছে- সেখানেই তিনি ছুটে গেছেন। তাদের সাথে পায়ে পা-মিলিয়ে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন।

তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। বিএডিসি-তে চাকরিকালে ‘কৃষি সমাচার’ নামে একটি পত্রিকায় যুক্ত থেকে কাজ করেছেন। এছাড়াও ‘চিহ্ন’ নামে একটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশনা ও সম্পাদনা করেছেন। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতার কারণে সেটা বেশিদিন অব্যাহত রাখতে পারেননি।

রাখী দাশ পুরকায়স্থ এই শ্যামল বাংলার আলো-হাওয়া-প্রকৃতিকে জীবনের মতোই ভালোবাসতেন। মননের খরাপীড়িত এই মরচে পড়া সময়েও তিনি মুগ্ধ হতেন আমাদের অপরূপ বিল-ঝিল-নদী, পল্লী ও প্রকৃতির ঘ্রাণে।

তিনি জীবনবাদী মানুষ ছিলেন। হতাশা, ভেঙ্গে পড়া, নুইয়ে পড়া তাঁর ধাতে ছিল না। তিনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন- জীবন মানেই সংগ্রাম, জীবন মানেই সকল প্রতিকুলতা ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। গিয়েছেনও তাই। এক মৃত্যু ছাড়া তিনি কোথাও হারেননি।

মৃত্যুর বছর দেড়েক আগে রাখী দাশ পুরকায়স্থ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ঢাকা-দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও সুস্থ না হওয়ায় শেষবার আসামের গৌহাটির এ্যাপোলো হাসপাতালে গিয়েছিলেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সুস্থ হয়ে ফিরলেন না। চলে গেলেন অনন্তের পথে। তাঁর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোকবাণী দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ হাহাকার করেছেন। আমরা সকলেই তাঁর সদা হাসিমাখা মুখটি শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সম্ভব হয়নি। সর্বনাশা করোনার কারণে তাঁকে গৌহাটিতেই দাহ করতে হলো। গৌহাটির সেই চিতার আচ এদেশের অগুনতি মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে- যারা তাঁর সহকর্মী ছিলেন, ছিলেন অনুরাগী-শুভানুধ্যায়ী। নির্জন চিতার অদূরে দাঁড়িয়ে পঙ্কজ ভট্টাচার্য উদাস-অপলক দৃষ্টিতে দেখলেন তাঁর ৪৬ বছরের জীবন সাথীর আগুনে পুড়ে হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে আকাশে মিলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। যাপিত জীবনের অসংখ্য স্বপ্ন ও স্মৃতি তিনি বুকভাঙা কষ্টে অনুভব করলেন। রাজনীতির ঝুঁকিপূর্ণ অনিশ্চিত জীবনের কত অভাব-অনটন, কত টানাপোড়েন– সব ঘটনা তাঁর নিঃসঙ্গ একাকী জীবনে পথরভারী হয়ে উঠল।

পঙ্কজ ভট্টাচার্যের সহধর্মিনী হিসেবে রাখী দাশ পুরকায়স্থ’কে আমি বৌদি বলে ডাকতাম। বাইশ বছরের পরিচিত জীবনে তাঁর সাথে আমারও দেখা-সাক্ষাৎ, আলাপ-আলোচনার সামান্য কিছু স্মৃতি আছে। শেষবার দেখা পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে। বন্ধু রিয়াজুল হক মিন্টুর সাথে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। ঘন্টাখানেক থাকার পর আমি রুম থেকে বের হলে তিনি আবার ডাকলেন। তারপর কথা বলে বিদায় দিলেন, বিদায় নিলেন। বললেন, তোমাদের দাদাকে (পঙ্কজ’দা) সাথে নিয়ে রাস্তা পার করে একটা রিকশায় তুলে দিও। আমরা দু’জন তা-ই করলাম। এটাই শেষ দেখা, শেষ স্মৃতি।

রাখী দাশ পুরকায়স্থ সমাজ ও নারী প্রগতির যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, সে সংগ্রামের দীর্ঘপথ বাকি থাকতেই এক অচেনা ঝড়ো হাওয়ায় পথের বাঁকে হারিয়ে গেলেন। তাঁর এই হারিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে এদেশের বাম-প্রগতিশীল রাজনীতির প্রাণপুরুষ পঙ্কজ ভট্টাচার্যের ব্যক্তি জীবনের নিদারুণ ক্ষতির সমান্তরালে আমাদের জাতীয় জীবনেও অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হলো। ক্ষতিগ্রস্থ হলো বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। কারণ রাখী দাশ পুরকায়স্থের মতো মানুষ সচরাচর তৈরি হচ্ছেন না এই ভোগবাদী সমাজে। সর্বত্রই আজ রুচিশীল মানুষের সংকট। সাহসী ও সৃষ্টিশীল মানুষের অভাব।

সমাজ প্রগতির আভাময় সত্তা- রাখী দাশ পুরকায়স্থ ২০২০ সালের ৬ এপ্রিল ৬৮ বছর বয়সে জীবনের সমাপ্তি টেনেছেন। তাঁর জীবনজোড়া কর্মকাণ্ড নিশ্চয়ই আমাদের পথ দেখাবে, প্রেরণা যোগাবে।
রাখী বৌদি’র কর্মমুখর জীবনস্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি!

লেখক: নির্বাহী পরিচালক, রোড সেফটি ফাউন্ডেশন, সম্পাদক, সড়ক বার্তা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ