ডব্লিউটিও’র ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুরু

প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৪

ডব্লিউটিও’র ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন শুরু

Manual2 Ad Code

এস এম রাশিদুল ইসলাম | আবুধাবি (সংযুক্ত আরব আমিরাত), ২৬ ফেব্রুযারি ২০২৪ : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন আজ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে শুরু হয়েছে। যেখানে ১৬৪টি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন।

আবুধাবির যুবরাজ এবং নির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ খালেদ বিন মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সোমবার সকালে আবুধাবি জাতীয় প্রদর্শনী কেন্দ্রে চার দিনব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ড. থানি বিন আহমেদ আল জাইউদির সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ওকোনজো আইওলা বক্তব্য দেন।

উদ্বোধনী অধিবেশনে পূর্ব আফ্রিকার দেশ কোমোরোস এবং এশিয়ার দেশ পূর্ব তিমুরকে ডব্লিউটিওতে যোগদানের অনুমোদন দেওয়া হয়। ফলে এই দু’টি দেশ সংস্থার নতুন সদস্যপদ লাভ করলো।

Manual6 Ad Code

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এবারের সম্মেলনে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত ও অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে।

Manual6 Ad Code

উদ্বোধনী অধিবেশনের বক্তব্যে ডব্লিউটিও মহাপরিচালক ওকোনজো আইওলা স্বল্পন্নোত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তোরণকারি দেশগুলোর জন্য শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়ার বিষয়ে এবারের সম্মেলনে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, আশা করছি-এলডিসি উত্তোরণ প্রক্রিয়া যেন মসৃন হয়। সেজন্য ডব্লিউটিও’র সদস্য দেশগুলো এ ধরনের বাণিজ্য সুবিধার সময় বাড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক সমর্থন দেবে।

এ বিষয়ে পরে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘এলডিসি উত্তোরণের পরে আরও তিন বছর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে ধারনা করছি।’

তিনি বলেন, এলডিসি উত্তোরণের পরেও কৃষি ও মৎস্যখাতে ভর্তুকি এবং মেধাস্বত্ত সুবিধা বহাল রাখা এবং ই-কমার্সের বিষয়ে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছি।

Manual8 Ad Code

উল্লেখ্য, এলডিসিভুক্ত দেশগুলো উত্তোরণের পরে অন্তত ৬ বছর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা যেন বহাল থাকে তার অনুমোদন চাইছে। বেসরকারিখাতের প্রতিনিধি হিসেবে সম্মেলনে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ পোশাক প্রন্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, আমরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ২০২৬ সালের পর অন্তত ৬ বছর যেন শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা বহাল থাকে এমন সিদ্ধান্তের প্রত্যাশা করছি।

এক প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ কোন কয়েকপক্ষীয় (প্লুরিল্যাটারাল) চুক্তিতে সম্পৃক্ত হবে না। কেননা এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর একটা সিদ্ধান্ত রয়েছে যে-কোন কয়েকপক্ষীয় চুক্তিতে আপাতত সমর্থন না করা। তাই আমরা এলডিসির দেশ হিসেবে এ ধরনের চুক্তিকে সমর্থন দিচ্ছি না।

উল্লেখ্য,গতকাল ডব্লিউটিওর সদস্যভুক্ত ১২৩টি দেশ ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসালিটেশন ফর ডেভলপমেন্ট (আইএফডি) এর চুক্তি নিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে এবং তারা কয়েকপক্ষীয় চুক্তি হিসেবে এবারের সম্মেলনে এর অনুমোদন চাইছে।

সম্মেলনে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডব্লিউটিওর সর্বশেষ ১২তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর টেকসই এবং মসৃন উত্তোরণের উদ্যোগকে সমর্থন করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে গতবছর ২৩ অক্টোবর ডব্লিউটিওর সাধারণ পরিষদের সভায় শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা দেওয়ার জন্য সদস্য দেশগুলোকে আহবান জানানো হয়। কিন্ত কেবল তা সদস্যদেশগুলোর সদিচ্ছার উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং কোন সুনির্দিষ্ট সময় সেখানে উল্লেখ করা হয়নি। এবারের সম্মেলনে যদি এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, তাহলে সেটাই হবে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ভাল। যদিও ওই প্রস্তাবে উত্তোরণকারি এলডিসিদের অন্যান্য দাবির কোন উল্লেখ নেই।

তিনি মনে করেন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর টেকসই উত্তোরণের জন্য একটি সহায়তা প্যাকেজ গ্রহণ করলে সেটাই হবে ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলেনের বাংলাদেশের জন্য একটা ইতিবাচক ফলাফল।

Manual5 Ad Code

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code