স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস কাল

প্রকাশিত: ২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৪

স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০৯ অক্টোবর ২০২৪ : আগামীকাল সারাদেশে ‘স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস’। এ দিবসটি পালন করবে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম।

প্রতিবছরের মতো এবারো ১০ অক্টোবর স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস। এবছরের প্রতিবাদ্য ‘স্তন ক্যান্সার নিয়ে কাউকে যেন একা লড়তে না হয়’। এ ছাড়া বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী ০১ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতার মাস হিসেবেও পালন করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন এনজিও এই সচেতনতা কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

সাধারণ মানুষের মধ্যে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণ এসব কার্যক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। ঢাকা ও সারা দেশের জেলা-উপজেলায় গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও সহজ বাংলায় প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ লিফলেট বিতরণ করা হয়। গোলাপি ফিতা স্তন ক্যান্সার সচেতনতার একটি আন্তর্জাতিক প্রতীক। গোলাপি ফিতা এবং সাধারণভাবে গোলাপি রং, স্তন ক্যান্সার ব্র্যান্ডের সঙ্গে পরিধানকারী বা প্রচারকারীকে চিহ্নিত করে এবং স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নৈতিক সমর্থন প্রকাশ করে।

জাতীয় স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাসে গোলাপি ফিতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান একজন ব্যবসায়ী ও জনহিতৈষী এভেলিন লাউডার ১৯৯৯ সালে পিঙ্ক রিবন সিম্বলটি তৈরি করেন। বিশ্বের সব মেয়ের মধ্যে পিঙ্ক রিবনের সাহায্যে ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য তিনি সম্পূর্ণ নিজের পরিকল্পনায় এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

গ্লোবোক্যান এর তথ্য অনুযায়ী, নীরব ঘাতক স্তন ক্যান্সার। প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় তেরো হাজার নারী নতুন করে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। মারা যান প্রায় আট হাজার। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব, নারীদের সংকোচবোধ আর দেরীতে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এর কারণ। বাংলাদেশে সার্বিকভাবে ক্যান্সার নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল ও ব্যয়বহুল। স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ, প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় ও ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর কোন জাতীয় কর্মকৌশল, কর্মপরিকল্পনা ও কর্মসূচি নেই।
২০১৩ সালে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করার বিষয়ে কর্মসূচি শুরু করে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরাম।
গত দশ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফোরামের উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি ও সুরক্ষা, সূচনায় নির্ণয় ও স্ক্রিনিং এর উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সবার সচেতনতা তৈরি করা সড়ক শোভাযাত্রার লক্ষ্য।

গত কয়েক বছরে উন্নত চিকিৎসা ও প্রযুক্তিগত সুবিধা প্রাথমিকভাবে স্তন ক্যান্সার শনাক্তকরণ ছাড়াও এর চিকিৎসা এবং এ সম্পর্কিত মৃত্যু হ্রাস করেছে। দেশে প্রতি বছরই ক্যান্সার আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। বিষয়টি উদ্বেগের এবং দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্যও অশনিসংকেত। নানা ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও অনেক বেশি।
এই ক্যান্সারে মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রতি বছর গড়ে নতুন করে প্রায় গড়ে ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে ৬ থেকে ৭ হাজারেরও বেশি নারীর মৃত্যু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যান্সার দ্রুত শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের পাশাপাশি সুচিকিৎসা গ্রহণ করলে এ ক্যান্সারে আক্রান্ত শতকরা ৯৫ ভাগ রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

 

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ