বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে মাহবুব মোর্শেদের ‘বুনো ওল’ উপন্যাস পাঠ ও আলোচনা

প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২৪

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে মাহবুব মোর্শেদের ‘বুনো ওল’ উপন্যাস পাঠ ও আলোচনা

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৮ নভেম্বর ২০২৪ : ঔপন্যাসিক মাহবুব মোর্শেদের লিখনশৈলীর প্রশংসা করে রাজধানীতে এক আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, তার লেখায় শিক্ষণীয় অনেক উপাদান ও কৌশল রয়েছে, যেখান থেকে নবীন লেখকরা শিক্ষা নিতে পারেন।

মাহবুব মোর্শেদের ‘বুনো ওল’ উপন্যাসের পাঠ ও আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, লেখক সমাজের অনাচারকে নান্দনিক সৃজনশীলভাবে তুলে ধরেছেন।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর ২০২৪) বিকাল ৪টায় বই পর্যালোচনা প্ল্যাটফর্ম ‘অরুদ্ধ’ নগরীর বাংলা মোটরস্থ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনায় অংশ নেন সাহিত্যিক ও লেখক মশিউল আলম, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, ‘অরুদ্ধ’-এর আহ্বায়ক ইশরাত তানিয়া, জুবায়ের ইবনে কামাল ও কামরুল আহসান।

উপন্যাসের লেখক বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ উপস্থিত থেকে উপন্যাস সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

বইটির রচনাশৈলীর প্রশংসা করে বক্তারা বলেন, গল্পে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নারী-পুরুষের জৈবিক সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রায় ও সৃজনশীল ভঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়েছে।

এই উপন্যাসে পতিতা, ব্যবসায়ী, ডাকাত দলের নেতা, ঘুষখোর কর্মকর্তা, পুলিশ, মানব পাচারকারী, চোরাকারবারী, মাদক ব্যবসায়ী, ভাড়াটে খুনি, কবি, লেখক, কলেজ শিক্ষক এবং আরও অনেক বিষয় ও চরিত্র দারুণ দক্ষতায় চিত্রিত হয়েছে।

বক্তারা বলেন, উপন্যাসটি পড়ে পাঠকরা সহজেই বুঝতে পারবেন যে, এটি অনেক ছোট ছোট গল্পের সমাহার এবং সেগুলো একে অপরের সাথে সুচারু সেলাইয়ে গ্রন্থিত হয়ে ধীরে ধীরে একটি সম্পূর্ণ ও অর্থপূর্ণ উপন্যাসের অবয়ব লাভ করেছে।

পাঠকরা বুঝতে পারবেন, সমাজে যখন অনাচার থাকে তখন অশুভ চিন্তা ও কর্মকাণ্ড ক্রমাগত বেড়ে চলে।

পাঠক উপন্যাসে বর্ণিত অনেক অন্ধকার ও নেতিবাচক চরিত্র সম্পর্কে জেনে শুভ ও অশুভের মাঝে একটি আদর্শ মাপকাঠি পাবে বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।

তারা বলেন, বইটি পাঠককে চরিত্রগুলোর ঐতিহ্যগত নৈতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী ভূমিকার মুখোমুখি করার পাশাপাশি তাদের জীবনের বাস্তব অর্থ অনুধাবনে সাহায্য করবে।

আলোচকরা বলেন, উপন্যাসটিতে স্বার্থপরতা, লোভ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, হতাশা, অপ্রাপ্তি, একাকিত্ব ও রাজনৈতিক দৃশ্যকল্পের মতো বেশ কয়েকটি বিষয় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এবং ব্যঙ্গাত্মকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

বক্তারা বিশেষভাবে উপন্যাসের ‘সাপের কামড়’ বিষয়ের প্রশংসা করেন। সেখানে অত্যন্ত উদ্ভাবনী উপায়ে মাদকের চর্চা দেখানো হয়েছে।

উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মাধ্যমে মাহবুব মোর্শেদ রাজনীতিবিদদের নেতিবাচক রাজনৈতিক চর্চাকে তুলে ধরেছেন এবং এভাবেই ফ্যাসিবাদের সমালোচনা করেছেন বলে জানান বক্তারা।

কয়েকটি গল্পে, পাঠকরা দেখতে পাবেন কিভাবে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদরা সাধারণ মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের নিপীড়ন করে।

গল্প বলার সঠিক গতি, স্বতঃস্ফূর্ত কথনরীতি ও উপন্যাসের অনেক চরিত্রের অর্থবহ সংলাপ অনুভব করলে পাঠকরা বিরক্ত হবেন না বলেও মনে করেন আলোচকরা।

সবশেষে মাহবুব মোর্শেদ তার উপন্যাস নিয়ে এমন আলোচনার আয়োজন করার জন্য ‘অরুদ্ধ’ প্লাটফর্মকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, তিনি অনেক চেষ্টা করে উপন্যাসটি লিখেছেন কারণ তিনি সবার সামনে একটি ভাল গল্প উপস্থাপন করতে চেয়েছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ