জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে রাজধানীসহ উপকূলীয় ৭ জেলার ১০ স্থানে সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি

প্রকাশিত: ২:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৫, ২০২৪

জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে রাজধানীসহ উপকূলীয় ৭ জেলার ১০ স্থানে সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি

Manual6 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ : হাজার হাজার মানুষ আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কপ- ২৯ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের কাছে একটি নতুন জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্য নির্ধারণ এবং জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে দ্রুত অবসর গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ কর্মে অংশগ্রহণ করেছে। আজারবাইজানের বাকুতে একত্রিত হওয়া প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে বিশ্বের ২৪টি দেশ ও ৩০টিরও বেশি শহর ও প্রদেশে ১৫০টিরও বেশি সমন্বিত গণ-কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই গণ-কর্মসূচির অংশ হিসাবে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর ২০২৪) সকাল ৯টায় ঢাকাসহ উপকূলীয় ৭ জেলার ১০টি স্থানে একযোগে সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

Manual1 Ad Code

সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে এই সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

Manual2 Ad Code

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, এশিয়ান পিপলস মুভমেন্ট অন ডেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এপিএমডিডি), এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক (এইএন), বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাবের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ এবং সাইকেল র‌্যালি।

Manual8 Ad Code

ধরা’র প্রচার সমন্বয়ক মামুন কবীরের সঞ্চালনায় এবং ধরা’র সংগঠন সমন্বয়ক ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে অতিথি হিসাবে ‍উপস্থিত ছিলেন ধরা’র নেতা ও রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ। এসময় আরো বক্তব্য দেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর গবেষণা প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, তুরাগ নদী মোর্চার নেতা লাল মিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাইক্লিং ক্লাবের সভাপতি মো. তাওহীদুর রহমান প্রমূখ।

ইবনুল সাঈদ রানা বলেন, আমরা যখন এখানে জলবায়ু ন্যায্যতার কথা বলছি তখন আমাদের কথাগুলো আজারবাইজানের বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনে পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর উন্নয়নের ফলাফল ভোগ করছি। আমরা আমাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হইনি, তোমাদের উন্নয়নের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ফলে তোমাদের দ্বারা হওয়া ক্ষতির পূরণ তোমাদেরকেই করতে হবে। আর তা ঋণ হিসেবে নয়, জলবায়ু তহবিলে নিঃশর্ত ক্ষতিপূরণ আমাদেরকে দিতে হবে।

রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, জলবায়ু অভিঘাতের সবচেয়ে বড়ো শিকার বাংলাদেশের জনগণ। উপকূলের মানুষের দিকে তাকিয়ে দেখুন তাদের কষ্ট। সেখানকার নারী, শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা পাচ্ছে না। সঙ্গে রয়েছে সুপেয় পানির তীব্র অভাব। তাদের ঘর-বাড়ি ভাঙছে। সমুদ্রে বিলিন হচ্ছে। বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে উদ্বাস্তু জীবন। আমরা এই অবস্থার অবসান চাই। এসবের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলো। তাদেরকে এর দায় নিতে হবে। ক্ষতিপুরণ দিতে হবে। এজন্য আমদের আওয়াজ তুলতে হবে যার যার অবস্থান থেকে।

ইকবাল ফারুক বলেন, আমরা বৈশ্বিক জলবায়ু ন্যায্যতার দাবি জানাই। জলবায়ু তহবিলে অর্থ দাবির পাশাপাশি কার্বন নির্গমন বন্ধের আহ্বানও জানাই। কারণ, কার্বন নির্গমন বন্ধ না হলে তহবিলের অর্থ দিয়ে খুব বেশি ক্ষতির পূরণ করা সম্ভব হবে না। বৈশ্বিক উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

মামুন কবীর বলেন, পৃথিবীর উত্তরের দেশগুলোর ২০০ বছর ধরে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো শিল্পোন্নয়নের ফল আমরা ভোগ করছি পৃথিবীর দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চলের দেশগুলো। পৃথিবীকে বাঁচাতে কার্বন নির্গমন কমাতে হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর করতে হবে আমাদের। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ করে জলবায়ু তহবিলে অর্থ প্রদান করতে হবে। কপ-২৯ কে ঘিরে আমরা বিশ্বনেতাদের কাছে জলবায়ু ন্যায্যতার আহ্বান জানাই। আমরা বার্ষিক কমপক্ষে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থ প্রদান এবং জলবায়ু ঋণের ক্ষতিপূরণের আহ্বান জানাই।

আমিনুল ইসলাম টুব্বুস বলেন, আমরা সাইকেল চালাই। আমরা পরিবেশ দূষণ করি না, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়াই না। আমরা নিরাপদে সাইকেল চালানোর জন্য সাইকেল লেন বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে বিনীত আহ্বান জানাই।

সমাবেশ শেষে জলবায়ু তহবিলে অর্থায়ন, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তর, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ ও গণহত্যা বন্ধ এবং জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে এক বর্ণাঢ্য সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

র‌্যালিটি শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শন করে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়।

Manual8 Ad Code

একই সময় দেশের উপকূল অঞ্চলগুলোতেও জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। বাগেরহাট জেলার মোংলা, কক্সবাজার জেলার পেকুয়া ও কুতুবদিয়া, পাবনার চাটমোহর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা, এবং বরগুনা জেলার তালতলী, পাথরঘাটা এবং বরগুনা সদর উপজেলায় জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে বিশ্ববাসীর সাথে একাত্মতা পোষণ করে সমাবেশ ও সাইকেল র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code