শ্রীমঙ্গলে ১০ সাংবাদিকসহ ৫৭ জনের নামে মামলা

প্রকাশিত: ১১:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৮, ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে ১০ সাংবাদিকসহ ৫৭ জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ১৮ নভেম্বর ২০২৪ : শ্রীমঙ্গলের ১০ সাংবাদিকসহ ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৪) শ্রীমঙ্গল থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী এই মামলার বাদী। মামলায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও আরটিভির মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি চৌধুরী ভাস্কর হোমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ১১ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ও আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে পিপিই (পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট) বিতরণ করা হয়। তারেক জিয়ার পিপিই বিতরণ করায় একই মাসের ২১ তারিখে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে এম ইদ্রিস আলীকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়। পরে সভা ডেকে প্রেসক্লাবের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এম ইদ্রিস আলীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। এরপর ইদ্রিস আলীকে শ্রীমঙ্গলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গত চার বছর ইদ্রিস আলীকে হত্যাচেষ্টা, মানহানি করার সময় এ ঘটনায় মামলার আসামীরা জড়িত ছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

মামলায় আসামী হওয়া সাংবাদিকেরা হলেন দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, দৈনিক যুগভেরী পত্রিকার প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন সোহেল, বাংলাদেশ বেতারের প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের ক্রীড়া সম্পাদক মামুন আহমেদ, সাপ্তাহিক চায়ের দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য সনেট দেব চৌধুরী, সাপ্তাহিক জয়যাত্রা পত্রিকার সম্পাদক ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এডভোকেট আজাদুর রহমান, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি চৌধুরী ভাস্কর হোম, একুশে টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিকুল চক্রবর্তী, দৈনিক খবরের কাগজ পত্রিকার হৃদয় দাশ শুভ এবং দৈনিক বাংলার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি এস কে দাশ সুমন।

মামলার বাদী ইদ্রিস আলী বলেন, ‘সে সময়ে আমার ওপরে অনেক অন্যায় অত্যাচার করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় আমি কোনো বিচার পাইনি। এখন যেহেতু বিচারব্যবস্থা ঠিক হয়েছে, তাই আমি মামলা করেছি।’

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ইদ্রিস আলীর মামলা রেকর্ড করেছি। এই ঘটনায় একজন আটক হয়েছে। বাকিরা পলাতক।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, যাঁরা আওয়ামী লীগের আমলে নির্যাতিত হয়েছেন, তাঁরা মামলা করছেন। অনেক সাংবাদিকও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মামলাগুলোয় যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ হয়রানিতে না পড়েন, সে বিষয়ে প্রশাসনকে গুরুত্ব দিতে বলেন তিনি।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ