মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অধিকাংশই শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলে না: ফরিদা আখতার

প্রকাশিত: ৫:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অধিকাংশই শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলে না: ফরিদা আখতার

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ : মানবাধিকারের জন্য যেসব সংগঠন কাজ করছে তাদের অধিকাংশই শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কথা বলে না। শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তা হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর ২০২৪) সিরডাপ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত ‘বৈশ্বিক মানদণ্ডের সমমান সম্পন্ন অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রম আইন এবং কৃষি ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির শ্রমিকদের আইনি স্বীকৃতি’ বিষয়ক জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

উপদেষ্টা বলেন, সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকার থাকতে হবে সর্বাগ্রে।

শ্রমিকদের জন্য কিছু হলেও যেন শুরু করতে পারি সে লক্ষ্যে কাজ করে যাব। গার্মেন্টস শ্রমিকসহ অনেক শ্রমিকের শোষণ আমরা চোখে দেখলেও কৃষি শ্রমিকের শোষণ আমরা চোখে দেখি না।

গত সরকার কৃষিতে আধুনিকায়নের ব্যাপারে জোরেশোরে কথা বললেও কৃষকের মজুরি বেশি বলে তারা হারভেস্টার মেশিন এনেছে। এর ফলে কৃষকরা বেকার হয়ে যাচ্ছে।
এমনকি আগাছা পরিষ্কারের জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা যে কী ভয়াবহ সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ফরিদা আখতার আরও বলেন, ক্যানসার রোগীদের মধ্যে ৬০ শতাংশ সরাসরি কৃষিকাজে জড়িত। কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, নারীরা কীটনাশক মেশাচ্ছে আর কৃষকরা তা স্প্রে করছে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাই প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ওপর গুরুত্বারোপ করা উচিৎ।

কৃষি আইনে কৃষক বলে কোনো শব্দ নাই। আছে কন্টাক্ট ফার্মার। কৃষি ফার্ম শ্রমিক নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ২০১৭ পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ নয় বরং শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে।

এ সময় দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কৃষিফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন ও ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা তাদের ১৩ দফা দাবিসহ একটি প্রস্তাবনা উপদেষ্টা ও শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধানের কাছে হস্তান্তর করেন।

শ্রম সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শ্রম কমিশনে কাজ করতে এসে অনেক কুৎসিত বিষয় সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। দেশের একটি বিশেষ মহল শ্রমিকদের মজুরি নানা কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে। শ্রম কমিশন কিছু সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দিবে।’

বৈশ্বিক মানদণ্ডের সমমান সম্পন্ন অন্তর্ভুক্তিমূলক শ্রম আইন এবং কৃষি ও অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির শ্রমিকদের আইনি স্বীকৃতি বিষয়ক জাতীয় সংলাপে বক্তারা কর্মচারী ও শ্রমিকদের বৈষম্য দূরীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা তথ্য প্রযুক্তির যুগে শ্রমিকদের তথ্য ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনার দাবি জানান।

বাংলাদেশ কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আজিজুল হকের সভাপতিত্বে সংলাপে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শামীম ইমাম, শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন, মোহাম্মদ আলী, বাকী বিল্লাহ, হাসিবুল ইসলাম, আলাউদ্দিন এবং দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কৃষি ফার্ম শ্রমিক ফেডারেশন ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।

শ্রমিক নেতারা তথ্য প্রযুক্তির যুগে শ্রমিকদের তথ্য ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে তাদের সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনার দাবি জানান।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ