মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান ড. ইয়াসমিন লারির

প্রকাশিত: ৮:০৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৪, ২০২৫

মানবিক বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান ড. ইয়াসমিন লারির

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ : পাকিস্তানের প্রথম মহিলা স্থপতি ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্মত মানবতাবাদী ড. ইয়াসমিন লারি মানবজাতির জন্য এমন একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন – যেখানে স্থায়িত্ব ও মানবতা একসাথে অবস্থান করবে।

ইয়াসমিন লারি আজ শনিবার (৪ জানুয়ারি ২০২৫) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পৃথিবী বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও: স্থাপত্যকে কার্বনমুক্ত, উপনিবেশমুক্ত ও গণতান্ত্রিক করো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

তিনি তার বক্তব্যে স্থাপত্যকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, অসমতা প্রতিরোধ ও দুর্বল সমাজকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার একটি বলিষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘স্থাপত্যকে কার্বনমুক্ত, উপনিবেশমুক্ত ও গণতন্ত্রীকরণ করার মাধ্যমে আমরা এমন একটি ভবিষ্যত গড়ে তুলতে পারি, যেখানে স্থায়িত্ব ও মানবতা একসঙ্গে চলে।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে স্থাপত্য বিভাগ নিয়মিতভাবে ‘অঙ্গন লেকচার সিরিজ’ আয়োজন করে, যেখানে শিক্ষার্থীরা স্থাপত্য ও ডিজাইনের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণার গল্প ও নতুন ধারণা সম্পর্কে জানতে পারে। এ সিরিজের ১৫০তম পর্বের এ আয়োজনে বক্তৃতা দেন ড. ইয়াসমিন লারি।

অঙ্গন লেকচার সিরিজ হলো স্থাপত্য ও ডিজাইনের নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ ও অনুশীলনকারীদের উদ্ভাবনী ধারণা বিনিময় এবং পরবর্তী প্রজন্মের স্থপতিদের অনুপ্রাণিত করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম।

ইয়াসমিন বলেন, ‘স্থপতি ও স্থাপত্য কেবল ভবন তৈরির বিষয় নয়। এটি টেকসই সমাধান তৈরি করে, যা এই গ্রহের জন্য সহায়ক, যা সমাজকে ক্ষমতায়িত করে এবং এটি সমাজে সাম্য প্রতিষ্ঠার একটি উপায়।’

ইয়াসমিন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় স্থাপত্যের রূপান্তরমূলক ভূমিকা, সাম্যতা উৎসাহিত করা ও পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলোতে সক্ষমতা তৈরি করার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, ‘স্থাপত্য নিছক কাঠামো তৈরির বিষয় নয়, এটি আমাদের এ বিশ্বকে সুন্দর করে এবং সম্প্রদায়গুলোকে সক্ষম করে সকলের মাঝে সাম্যতা নিয়ে আসে।’

পরে বিভাগের চেয়ারপারসন জয়নব ফারুকী আলীর সঞ্চালনায় শিক্ষার্থী, অনুষদ সদস্য ও স্থপতিদের সমন্বয়ে উপস্থিত দর্শকরা আলোচনায় অংশ নেন।

ড. ইয়াসমিন লারি এক সপ্তাহব্যাপী শীতকালীন স্কুলও পরিচালনা করেন। যেখানে স্থাপত্যের শিক্ষার্থীরা একটি জিরো-কার্বন বাঁশের বিল্ডিং তৈরি করে। এটি একটি পূর্বনির্ধারিত কাঠামো- যেটি দুর্যোগ পুনর্বাসন ভবন হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

তিনি প্রধান প্যানেলিস্ট হিসাবে একটি মাল্টি-ডিসিপ্লিনারি অধিবেশনে অংশ নেন।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে লারি তার ‘বেয়ারফুট সোশ্যাল আর্কিটেকচার দর্শনের’ মাধ্যমে বিপর্যয়-স্থিতিস্থাপক ও কার্বনমুক্ত আবাসন সমাধান ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন।

তিনি তার এই প্রচেষ্টায় বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছেন। তিনি ২০২৩ সালে ‘রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ব্রিটিশ আর্কিটেক্টস’ থেকে রয়্যাল গোল্ড মেডেল ও ২০২০ সালে জেন ড্রিও (ব্রিটিশ আর্কিটেক্ট) পুরস্কার পান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ