সিলেট ৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২৫
বছিলা নদীপাড়ে বসবাসকারী মানুষের জীবন ও জীবিকা বিনষ্টকারী ওয়াকওয়ে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ : ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর উপদেষ্টা এবং নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেছেন, “আজকে এই নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আমি সত্যি হতাশ হয়েছি। কিভাবে একজন ইঞ্জিনিয়ারের এমন ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা মাথায় আসে। এই জায়গায় বাচ্চারা দৌড়াতে পারবে না যেখানে মৃত্যু ঝুঁকি আছে। এমন নির্দেশ হাইকোর্ট কখনই দেয় নাই। হাইকোর্ট বলেছে নদীর পাড়ে সবুজায়ন অথবা ওয়াকওয়ে এমনভাবে নির্মান করতে হবে, যেন উদ্ধারকৃত নদীর জায়গা পুনরায় দখল করতে না পারে। এখানে এমনভাবে ওয়াকওয়ে তৈরী করেছে যেনো এটা একটা মৃত্যুফাঁদ। দ্রুত এ পরিকল্পনার পুনর্মূল্যায়ন করে মানুষের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরী করতে হবে, নদীকেও রক্ষা করতে হবে।”
বুড়িগঙ্গা নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের জীবন ও জীবিকা বিনষ্টকারী ওয়াকওয়ে অপসারণের দাবিতে বছিলায় অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি ২০২৫) দুপুর ২টায় ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং বছিলা এলাকাবাসীর উদ্যোগে দুপুর ২টায় বুড়িগঙ্গা নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের জীবন ও জীবিকা বিনষ্টকারী ওয়াকওয়ে অপসারণের দাবিতে বছিলায় এক মানবন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুরাতন প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন ওয়াকওয়ে এলাকায় ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং বছিলা এলাকাবাসীর উদ্যোগে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
ধরা’র সদস্য সচির শরীফ জামিলের সভাপতিত্বে এবং নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরা-এর উপদেষ্টা এবং নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরডিএ এর নির্বাহী পরিচালক মনির হোসেন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, মিশন গ্রীন বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি প্রমূখ।
এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন সাগরিকা, সাইফুল ইসলাম, বসিলা মসজিদের খতিব এনামুল হক, কবির হোসেন, শহিদুল ইসলাম, ইমরানুল হক ইমন, রনজিত, হাজী নূর মোহাম্মদ, মোহাম্মদ লাল। এছাড়াও পরিবেশকর্মী, সাংবাদিক, ধরা এবং বছিলা এলাকার নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় জনগণ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।
সভাপতির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, ২০০৯ সালে হাইকোর্ট নদী সীমানা নির্ধারনের জন্য যে রায় দিয়েছিল তারই প্রেক্ষাপটে রায়ের তৃতীয় ধাপে সবুজায়ন কিংবা ওয়াকওয়ে নির্মান করতে বলা হয়েছে। কিন্তু ত্রুটিপুর্ন সীমানায় ওয়াকওয়ে নির্মাণের কারণে বিরাট অংশের নদী ও প্লাবন অঞ্চলের জায়গা দখল বাণিজ্য হয়েছে। যেভাবে নদীর সাথে পাড় ও ঢালকে বিচ্ছিন্ন করে ওয়াকওয়ে নির্মান করা হয়েছে, তাতে নদীপাড়ের মানুষের যে শুধু জীবন, জীবিকা ও গবাদিপশুকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তা নয়, বিপুল পরিমাণ দুর্নীতিও হয়েছে। এই দেশে অত্যাচার এবং দূর্নীতি কেবল রাজনৈতিক নেতারাই করেছেন তা নয়, প্রশাসন, পেশাজীবী, ব্যবসায়ি এমনকি পরিবেশবাদী এবং স্থানীয় মানুষেরও একাংশ করেছে। সবাইকে চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন।
রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, নদীর পাড়ে এভাবে বাধ দেয়া বেআইনি। এটা ভেঙে নদীকে মানুষের ব্যাবহারের সুযোগ করে দিতে হবে।
বাসিলার বাসিন্দারা জানান এখানে তাদের একসময় নিত্য দিনের কাজের সাথে নদীর যোগাযোগ ছিল। কিন্তু এখন তাদের মাঝে কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে দেয়া হয়েছে। নদীর পাড়ে হিন্দু পল্লী সেখানে পূজার সময় তারা এখন ঘাটে বিসর্জন দিতে পারে না। বাচ্চাদের নদীর পাড়ে আসতে দিতে ভয় লাগে। হাস-মুরগির পালনে অনেক অসুবিধা। জেলে তাঁর নৌকা বাধার জায়গা খুঁজে পায়না। তারা অবিলম্বে এই ওয়াকওয়ের ফাঁদ থেকে মুক্তি চায়।
অন্যান্য বক্তাগণ অবিলম্বে নদীর ও মানুষের ব্যক্তিগত জায়গা দখলকারী এবং বুড়িগঙ্গা নদীপাড়ে বসবাসরত মানুষের জীবন ও জীবিকা বিনষ্টকারী ওয়াকওয়ে পুনর্মুল্যায়ন ও অপসারণের দাবি জানান।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D