বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের আকৃতি

প্রকাশিত: ৩:০৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫

বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের আকৃতি

Manual3 Ad Code

বিজ্ঞান বিষয়ক প্রতিবেদক | আটলান্টা জর্জিয়া (যুক্তরাষ্ট্র), ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ : বিজ্ঞানীরা মাত্র কয়েক মাস আগেই নিশ্চিত করেছেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রভাগ সম্প্রতি উল্টো দিকে ঘুরতে শুরু করেছে। এখন আমাদের বাসযোগ্য এ গ্রহের একেবারের গভীরের রহস্য সম্পর্কে আরেক নতুন তথ্য উন্মোচন করলেন তাঁরা। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, পৃথিবীর কেন্দ্রের আকৃতি বদলে যাওয়ার বিষয়টিও তাঁরা শনাক্ত করেছেন।

পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ একেবারে মধ্যভাগের স্তরটি গরম, কঠিন ধাতব বলসদৃশ। এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে তরল ধাতবের বহিঃস্তর। গ্রহ বিজ্ঞানীরা কয়েক দশক ধরে অনুমান করছিলেন, সময়ের পরিক্রমায় পৃথিবীর ভেতরের কঠিন কেন্দ্রভাগ বিকৃত হয়েছে। তবে বর্তমানে প্রথমবারের মতো তাঁরা প্রমাণ পেয়েছেন, গত ২০ বছরে ভূ–কেন্দ্রের আকৃতিতে এ বিকৃতি ঘটেছে। ভূমিকম্পের তরঙ্গে ধরা পড়েছে এ বিকৃতির চিহ্ন।

Manual2 Ad Code

এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় ভূ-কেন্দ্রে গত কয়েক দশক ধরে চলা ঘূর্ণনের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। নতুন গবেষণায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি-অঘূর্ণয়নশীল পরিবর্তনের বিষয় উঠে এসেছে। এটি আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি মনে করি, এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের ঘূর্ণন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্ক আরও উসকে দেবে।

পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের ঘূর্ণন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্ক অবসানে ২০২৪ সালে এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের তথ্য–উপাত্ত ব্যবহার করেন। তাতে তাঁরা দেখেন, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র একসময় পৃথিবীর চেয়ে দ্রুতগতিতে ঘুরেছে। তবে ২০১০ সালের শুরুর দিকে কেন্দ্রের ঘূর্ণনের গতি মন্থর হয়ে আসে। এখন পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় উল্টো দিকে ঘুরছে এটি।

বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণালব্ধ তথ্য গতকাল সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) নেচার জিওসায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। নতুন ওই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার ক্ষেত্রে ১৯৯১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একই জায়গায় সংঘটিত ভূমিকম্পের তরঙ্গ সম্পর্কিত তথ্য ব্যবহার করেছেন তাঁরা।

Manual4 Ad Code

নতুন গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া বিজ্ঞানী ও ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার অধ্যাপক জন ভিদেল বলেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রভাগের ঘূর্ণন নিয়ে বিজ্ঞানীরা এর আগে যে কাজ করেছেন, তা ভূকম্পনজনিত তরঙ্গের উচ্চতার পার্থক্য ব্যাখ্যা করতে সহায়তা করেছে। এ পার্থক্যই সংজ্ঞায়িত করছে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ কেন্দ্রের উপরিভাগের পরিবর্তনকে।

Manual3 Ad Code

পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের ঘূর্ণন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্কের অবসানে ২০২৪ সালে এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভূমিকম্পের তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করেন। তাতে তাঁরা দেখেন, অভ্যন্তরীণ কেন্দ্র একসময় পৃথিবীর চেয়েও দ্রুতগতিতে ঘুরেছে। তবে ২০১০ সালের শুরুর দিকে ভূ-কেন্দ্রের ঘূর্ণনের গতি মন্থর হয়ে আসে। এখন পৃথিবীর অন্যান্য অংশের তুলনায় উল্টো দিকে ঘুরছে এটি।

গবেষকেরা জানান, ভূ–কেন্দ্রের আকৃতির পরিবর্তন পৃথিবীর গভীরে অবস্থিত শক্তিগুলোর সূত্র সম্পর্কে ইঙ্গিত দিতে পারে, যা আমাদের চৌম্বকমণ্ডলের শক্তির জোগান দেয়। চৌম্বকীয় শক্তির এ অদৃশ্য রেখা আমাদের গ্রহকে সৌর আবহাওয়া ও প্রাণঘাতী বিকিরণ থেকে রক্ষা করে।

নিউ জার্সির রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ইয়োশি মিয়াজাকি বলেন, এর আগে বিভিন্ন গবেষণায় ভূ–কেন্দ্রে গত কয়েক দশক ধরে চলা ঘূর্ণনের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। নতুন গবেষণায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি—অঘূর্ণয়নশীল পরিবর্তনের বিষয় উঠে এসেছে। এটি আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। আমি মনে করি, এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগের ঘূর্ণন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিতর্ককে আরও উসকে দেবে।

Manual5 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code