বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার হওয়ার পেছনের সংগ্রামের গল্প … !

প্রকাশিত: ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২৫

বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডার হওয়ার পেছনের সংগ্রামের গল্প … !

তাসনিমা ইফফাত তরী |

আমি সফল কেউ নই। অন্তত এখনো নই। তাই সফলতার গাঁথা আমাকে মানায় না। কিন্তু একটু নিজের মনটা হালকা করি?

আমি গত ৩ বছর ফেইসবুকে ছিলাম না। কারণ হীনমন্যতা। আমার চারপাশে সবাই কোথাও না কোথাও জয়েন করেছে কিন্তু আমি বসে আছি। সারাদিন Depressed, Frustrated থেকে কাটিয়েছি।

সকালে উঠে পড়তে বসতাম। পড়ার টেবিলে চোখের জল টপটপ করে পড়তো। BCS ছাড়া কোথাও এপ্লাই করিনি। এই BCSটা না হলে কী হবে আমার? আমার ৩টা বছর যে হারিয়ে যাচ্ছে!

বিশ্বাস করেন, এমন একটা রাত নেই যে কাঁদিনি। আল্লাহকে বলতাম “আল্লাহ আমার কপালে এতো কষ্ট কেন? আল্লাহ আমার একটা গতি করো”। আবার দিনের বেলা দরজা জানালা বন্ধ করে পড়তাম।

শেষদিকে Frustration এর চরম সীমায় পৌঁছে যাই। কারো সাথে কথা বলতাম না। খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। খালি পড়তাম আর কিছু মনে নেই। মা আড়ালে দাঁড়িয়ে কাঁদতো।

Result দেয়ার দিন ভাবলাম, আমিতো ফেল করবো, কোথায় পালাই? তারপর Result দিলো, আমি তখন কুরআন শরীফ পড়ছিলাম। বাকীটা সবাই জানেন। আলহামদুলিল্লাহ।

এক আত্মীয় আমাকে বলেছিলেন “না না ওর Foreign ক্যাডার হবে না। ওর দ্বারা সম্ভব না” আরো কত কী! কত মানুষের খোঁটা শুনেছি! কত কাছের মানুষের চেহারা পাল্টাতে দেখেছি!

মা সবসময় বলতো “তরী তুমি মুখে জবাব দিবা না, কর্মে জবাব দিবা। তোমার দিন আসবে ইনশাল্লাহ।”

এই কথাগুলো শেয়ার করলাম কারণ শুধু এটুকু বলার জন্য যে, মহান আল্লাহ তার বান্দাদের অনেক কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা নেন। ধৈর্য খুব খুব সুন্দর একটা জিনিস।

আরেকটি কথা। আমার বাবা মায়ের কোনো ছেলে নেই দেখে অনেকেই অনেক কথা বলেছে। আমার মা তাদেরকে শুনিয়ে দিয়েছে, “মেয়েদের কম ভাববেন না। মেয়েরাও মা বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।”

এবার কিছু কাজের কথায় বলা যাক; কীভাবে পড়েছি:

১) বিগত বছরের প্রশ্নগুলো প্রচুর analysis করতাম।

২) Written এর সময় খুব নোট করে গুছিয়ে পড়তাম। এতে Revise করতে খুব সুবিধা হতো।

৩) Data, Table, Diagram এর জন্য আলাদা খাতা ছিলো। Source সহ নোট করে ফেলতাম। এজন্য বেশি বেশি নেট সার্ফিং করতাম।
#
@ তাসনিমা ইফফাত (তরী)
পররাষ্ট্র ক্যাডার (৩৮ বিসিএস এ সুপারিশপ্রাপ্ত)
মেধাক্রম: ১১
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাবি।

#বিসিএস_পররাষ্ট্র