সিলেট ১লা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৫০ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৫
আওয়ামী লীগের ব্যাপারে আমার কোনো মোহ নেই,থাকার কথাও নয়। সবে কৈশোর পেরিয়েছি, রাজনৈতিক সক্রিয়তার প্রথম অধ্যায়েই এই দলের হাতে নিদারুণভাবে নিগৃহীত হয়েছিলাম। সৌভাগ্যের প্রশ্রয় ছিল, প্রাণে বেঁচে গেছি। কাজেই জনৈক সুহৃদ যখন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বার্তাটি জানালেন,আবেগ উদ্বেলিত হওয়ার কারণ ছিল না। এমন কিছু যে ঘটতে পারে সে লক্ষন আগেই নজরে এসেছিল। কিছুদিন যাবৎ সরকার ঘনিষ্ঠ মহল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে হল্লাচিল্লা করছিলেন। শেখ হাসিনার আশ্রয়দাতা প্রতিবেশী ভারত যখন যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত, বাংলাদেশের সরকারী মহল সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার অনুকূল সময় বলে বিবেচনা করেছেন। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়ার রাজনৈতিক ক্ষেত্র প্রস্তুতির মূল দায় দলীয় প্রধান ও পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাকে কেন্দ্র করে যে অশুভ চক্রটি গড়ে উঠেছিল তাদের। হেন অপরাধ নেই যা তারা করেননি। তাদের দুস্কর্মের তালিকা দীর্ঘ।
অথচ পাকিস্তানের পচিশ বছর কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রভাষা বাংলা, গণতন্ত্র, আঞ্চলিক বৈষম্যের অবসান ও স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার নিরাপোষ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই দলের উত্থান । মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা, যদিও যাত্রা পথে এক সময় শেখ মুজিবর রহমান প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। বাঙ্গালীর মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এই দলই চালকের আসনে ছিল। শেখ মুজিবর রহমান এ সময় পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জীবন কাটিয়েছেন। কিন্তু সংগ্রামে ছেদ পড়েনি। আওয়ামী লীগ একজন ব্যক্তি বা পরিবার বিশেষের দল, এ কথা সর্বৈব মিথ্যা। ব্যক্তি মুজিবের অনুপস্থিতিতে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ হাল ধরেছেন। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে, মুজিব মুক্তি পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের যা কিছু ইতিবাচক ভাবমুর্তি এর শেকড় এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসে প্রোথিত। এর উপর ভর করেই দলটি দাঁড়িয়ে ছিল। জনগণের সংগ্রামের ধারায় গণ দল হিসেবেই তা গড়ে উঠেছিল।
অগ্রজপ্রতীম ছফা ভাই বলেছিলেন, “আওয়ামী লীগ যখন হারে তখন বাংলাদেশ হেরে যায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ যখন জেতে, তা কেবল তাদের নিজেদের জন্য।“ তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সাথে যেহেতু আওয়ামী লীগের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত, সেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি আওয়ামী লীগের পরাজয়কে মুক্তিযুদ্ধের পরাজয় হিসেবে বিবেচনা করে। ধর্মবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তি মনে করে তাদের জিৎ হয়েছে। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত ছাঁচে ঢালাই করার তাদের এটাই মোক্ষম সুযোগ। পক্ষান্তরে ক্ষমতায় আসীন আওয়ামী লীগও ভুলে যায় সে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিনিধি, গণস্বার্থের পরিবর্তে দলগত সংকীর্ন স্বার্থকেই সে প্রাধান্য দেয়।
মুক্তিযুদ্ধ ছিল সমাজের সকল শ্রেনীর জনগণের বঞ্চনা ও দারিদ্র্য থেকে মুক্তি এবং স্বচ্ছল ও শান্তিপুর্ন জীবন যাপনের আশা আকাংখায় মরণপণ সংগ্রামের প্রতিফলন। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃ্ত্বকারী দল হিসেবে তৃনমুলের গরিব নিম্নবিত্ত দলিত মানুষের মধ্যেও সংগঠনটি প্রসারিত। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শোষক ও নিপীড়ক শ্রেনীর আধিপত্য সন্দেহাতীত। যদিও আওয়ামী লীগের ঘোষিত আদর্শ ধর্মনিরপেক্ষ বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র। কিন্তু নেতৃ্ত্বের অধিকাংশের কাছে তা কথার কথা, মুল্যহীন ফাঁপা শ্লোগান ।এই নেতাদের ব্যক্তিগত ভাবমানস ও আচরণ নিজ শ্রেনীর আশা আকাংখা ও মুল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত। এই স্ববিরোধীতা আওয়ামী লীগের চরিত্র। আওয়ামী লীগের ট্রাজেডির বীজও এই স্ববিরোধীতার মধ্যে নিহিত।
ক্ষমতার বাইরে আওয়ামী লীগের স্ববিরোধিতা অনেকটাই চাপা পড়ে থাকে। কারন সে তখন শ্রেনী বিশেষের নয়, আন্দোলনরত জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে সক্রিয়। কিন্তু ক্ষমতা হাতে পেলে তার চরিত্রের স্ববিরোধিতা ক্রমশঃ আত্মপ্রকাশ করে। সে লুণ্ঠনকারী শোষক ও নিপীড়ক রূপে দেখা দেয়। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পর শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারও এ স্ববিরোধিতা থেকে মুক্ত ছিল না। শেখ মুজিবর রহমান খেদের সাথে বলেছিলেন, ”আমার চারপাশে চাটার দল। আমি যা কিছু ভিক্ষা করে আনি, মানুষের কাছে তা পৌছায় না। চাটার দল খেয়ে নিঃশেষ করে ফেলে।“ সমস্যার ভারে জর্জরিত শেখ মুজিবর রহমান অবশেষে বাকশাল গঠনের মাধ্যমে এর সমাধান খুঁজেছিলেন। কিন্তু তা বুমেরাং এ রূপান্তরিত হয়। বাকশাল সর্বময় ক্ষমতা আত্মসাৎ ও আমৃত্যু ক্ষমতা ধরে রাখার কৌশল হিসেবে জনমনে প্রতিভাত হয়েছিল।
এরই সুযোগ নিয়ে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টের কাকভোরে সেনাবাহিনীর ক্ষুব্ধ উচ্চাভিলাষী কতিপয় সশস্ত্র ব্যাক্তি তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে নিষ্ঠুর নিয়তি রূপে আবির্ভুত হয়। ষড়যন্ত্রীদের এ কাজে উদ্বুদ্ধ ও সক্রিয় করার নেপথ্য প্রেরনাদাতার কৃ্তিত্ব অবশ্যই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের।
আওয়ামী লীগ এবং শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্ব যুগপৎ জাতীয় সংগ্রামের ধারায় বেড়ে উঠেছিল। কিন্তু তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে এ কথা খাটে না। হাসিনার নেতৃত্বের দাবী বংশানুক্রমিক উত্তরাধিকারে। পিতার রাজনৈতিক আদর্শ নয়, তাঁর ব্যাক্তিগত ভাবমুর্তি হাসিনার রাজনৈতিক পুঁজি। সন্দেহাতীতভাবে বাঙ্গালীর সাম্প্রতিক ইতিহাসে শেখ মুজিবর রহমানই প্রধান ব্যক্তিত্ব। কিন্তু সাফল্য ও ব্যর্থতায়, দোষ ও গুনে তিনি মানুষ। শেখ হাসিনা নিজ কর্তৃত্ব ও বংশানুক্রমিক নেতৃত্বের ধারাকে সংহত করার উদ্দেশ্যে শেখ মুজিবের ভাবমুর্তিতে দেবত্বের মহিমা আরোপ করেছেন। হাসিনা প্রচারণা চালিয়েছেন, শেখ মুজিব জাতির জনক, তিনিই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের একক চালিকা শক্তি। তিনি অনন্য, নির্ভুল, সমালোচনার উর্ধে।
অথচ উত্তরাধিকার সুত্রে বাংলদেশের বৃহত্তম গণ রাজনৈতিক সংগঠনটি হাতে পেয়েই শেখ হাসিনা নিজের কর্তৃত্বকে একচ্ছত্র করতে লোকান্তরিত পিতার রাজনৈতিক সহকর্মীদের একে একে বিদায় করেছেন। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উঠে আসা নেতা কর্মী নয়, তার পছন্দ ব্যক্তিগত অনুগামী ও বশংবদ,মাস্তান মাফিয়া অপরাধী চক্র, দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা,লুটেরা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। ফলে অন্তিম মুহুর্তে আশেপাশে সৎ পরামর্শ দেওয়ার মতো কাউকে দেখা গেল না। অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ যারা ছিলেন,সঙ্গদোষে তাদের ও স্বভাব পরিবর্তন হয়েছে। আদর্শ শিকেয় তুলে রেখে যে সব ‘পাকা বাম’ তার শাড়ির আঁচলে আশ্রয় নিয়েছিলেন ,সেই মেনন, ইনু দিলীপ প্রভৃতিরাও বন্দনা গীতেই অভ্যস্ত। বিষ বৃক্ষের চারাটি শেখ হাসিনা রোপন করেছিলেন। গাছের ফলও তাকেই গলাধকরন করতে হলো। বংশানুক্রমিক ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য তিনি স্বৈরশাসন রুপী দুর্গ প্রাকার তৈরী করে এর অভ্যন্তরে আশ্রয় নিয়েছিলেন । ভেবেছিলেন এতেই দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা । কিন্তু দেখা গেল তাতে নোনা ধরেছে । বিক্ষুব্ধ বিদ্রোহী জনতার এক ধাক্কায় তাসের ঘরের মতো হুড়মুড় করে তা ভেঙ্গে পড়ল। হাসিনা রেহানা শেষ মুহুর্তে পালিয়ে প্রাণ বাঁচালেন।
শেখ হাসিনা এবং তার দুর্নীতি ও দুস্কর্মের সহযোগীদের বিচারের দাবি স্বাভাবিক। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ অর্থ কাজে লাগিয়ে হাসিনা ও তার সহ-অভিযুক্তরা অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন কে যেন রাজনৈতিক পুনর্বাসনে ব্যবহার করতে না পারে ,সে ব্যবস্থাও বোধগম্য । কিন্তু বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবর রহমান,মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও উত্তরাধীকার সুত্রে নেতা স্বৈরতন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি সীমানা রেখা টানা উচিত। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের গণ চরিত্র খর্ব করে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করেছিলেন । তিনি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার হৃদ স্পন্দনের স্বাভাবিক ছন্দকে ব্যহত করেছেন। জনগণের সম্মতি নয়,তিনি হিংসা ও পেশি শক্তির বলে দেশের ক্ষমতায় আসীন ছিলেন। সত্য,আওয়ামী লীগই শেখ হাসিনাকে নেতৃত্ব গ্রহনে আমন্ত্রন জানিয়েছিল এবং দিন শেষে ভিন্নমতাবলম্বীরাও হার মেনে বশ্যতা স্বীকার করে ছিলেন। আওয়ামী লীগের শ্রেনীগত সীমাবদ্ধতা, বাংলাদেশের মূলধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতির নিচু মান ও গণসচেতনার অভাব এ জন্য দায়ী। কিন্তু আওয়ামী লীগ ই এ জাতীয় একমাত্র দল নয়। আশু ক্ষমতার দাবীদার অন্যান্য দলও একই ধারার অন্তর্ভুক্ত।
ইতিহাস,ঐতিহ্য ও বিদ্যমান বাস্তবতার কারণে দেশের জনগণের একটি বড় অংশের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্য ও প্রভাব বিদ্যমান। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতি এই গোষ্ঠীর ভোটারদের মধ্যে নিস্পৃহ ও বিচ্ছিন্নতার মনোভাব জন্ম দেবে। তাতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের বৈধতা ও গ্রহনযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার দরজা খোলা থাকবে। সংকট মুহুর্তে এই খোলা দরজা পথে ‘’অবাঞ্চিতদের অনুপ্রবেশে’’ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা। বিরোধী দল ও জোট কে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরিয়ে রাখার কৌশলগত খেলা আওয়ামী লীগের জন্য অধিকতর বিপদ ডেকে এনেছিল। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি কাঙ্ক্ষিত নয়। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক শান্তির পথে তা বিঘ্ন স্বরূপ। উল্লেখ্য দেশে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বাম রাজনৈতিক শক্তি কার্যত হীনবল। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় নীতির আনুকূল্য ও সমর্থন লাভ করে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী দলগুলি অনেক বেশি সংগঠিত ও শক্তিশালী। চুড়ান্ত বিচারে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা,জাতীয় প্রগতি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এই শক্তির উত্থান বিপজ্জনক হুমকি।
অভিযুক্ত, বিচারাধীন ও নির্বাসিত শেখ হাসিনা সম্ভবত তার অনুপস্থিতে আওয়ামী লীগের নির্বাাচনে অংশ গ্রহণের সম্ভাবনা কে সুনজরে দেখেন না। কারন তাতে জনগণের সামনে আওয়ামী লীগের দৃশ্যমান বিকল্প নেতৃত্ব উপস্থাপিত হবে। যা শেখ হাসিনার পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির সাথে খাপ খায় না। বরং নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ নির্বাচনের বাইরে থাকলে অনুকুল কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের বৈধতার প্রশ্ন কে কাজে লাগিয়ে তিনি হয়তো ক্ষমতায় ফিরে আসার স্বপ্ন দেখছেন। কাজেই আওয়ামী লীগ কে নিষিদ্ধ ঘোষনা ও নিবাচনী রাজনীতির বাইরে রাখার এই একটি বিষয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন মহল ও তাদের আশির্বাদ পুষ্ট নবগঠিত রাজনৈতিক দল,সাম্প্রদায়িক ধর্মবাদী মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তি এবং শেখ হাসিনার মধ্যে রাজনৈতিক স্বার্থের পরোক্ষ অভিন্ন মেলবন্ধন পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার ঘুর্নাবর্ত থেকে দেশের বেরিয়ে আসার পথ যথেষ্ট পিচ্ছিল।
বাংলাদেশের জনগণের দুর্যোগ মুহুর্ত ও ভোগান্তির সময় কি আরো দীর্ঘ হচ্ছে?
#
মোজাম্মেল হক তারা
লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D