মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলায় যে গ্যাস নষ্ট হয়েছে শুধু তা দিয়ে দেড়বছরের পুরো দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

প্রকাশিত: ১০:২৭ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২৫

মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলায় যে গ্যাস নষ্ট হয়েছে শুধু তা দিয়ে দেড়বছরের পুরো দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

আনু মুহাম্মদ |

“২৮ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৪ই জুন তারিখে সিলেটের মাগুড়ছড়া গ্যাসক্ষেত্রে বড় বিস্ফোরণে পুরো গ্যাসক্ষেত্র নষ্ট হয়ে যায়। এলাকায় অনেক সম্পদের পাশাপাশি প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয়। বাংলাদেশের আবিষ্কার করা এই গ্যাসব্লক দেয়া হয়েছিল মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টালকে। বিদেশি বড় কোম্পানিকে গ্যাসব্লক দিলে আরও উন্নত প্রযুক্তি আসবে, দক্ষতা বাড়বে, দেশের অর্থনীতির অভূতপূর্ব উন্নতি হবে সেইসব বহুলপ্রচারিত যুক্তিতে এসব চুক্তি করা হয়েছিল। উল্টো বড় দুটি গ্যাসক্ষেত্র নষ্ট হয়েছে প্রথমে মার্কিন ও পরে কানাডীয় কোম্পানির দায়িত্বহীনতা এবং খরচ কমিয়ে মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টায়। তারা কি এর জন্য ক্ষতিপূরণ দিয়েছে? না। অক্সিডেন্টাল কোম্পানি ক্ষতিপূরণ না দিয়ে পুরো গ্যাসব্লক আরেকটি মার্কিন কোম্পানি ইউনোকালকে দিয়ে চলে গেছে। ইউনোকাল এসে গ্যাস রপ্তানির অনেক ধান্দা করেছে। না পেরে ব্যবসা আরেকটি মার্কিন কোম্পানি শেভ্রনকে দিয়ে তারাও চলে গেছে। শেভ্রনের হাতে এখন বৃহৎ গ্যাসব্লক। তারাও এখনও ক্ষতিপূরণ দেয় নাই।

মাগুড়ছড়া ও টেংরাটিলায় যে পরিমাণ গ্যাস এসব কোম্পানির গাফিলতিতে নষ্ট হয়েছে শুধু তা দিয়ে প্রায় দেড়বছরের পুরো দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব ছিল। এর মধ্যে অনেক সরকার গেছে, কেউ এনিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি বরং হিসাবের ফাঁকি দিয়ে ক্ষতি কম দেখাতে চেষ্টা করেছে। বিশ্বব্যাংক আইএমএফ এদেশে দক্ষতা আর আয় বাড়ানো নিয়ে বহুরকম নির্দেশনা দেয়। কিন্তু বাংলাদেশের এই বিপুল পরিমাণ পাওনা আদায়ে তারা একটা বাক্যও ব্যয় করেনি। অনেক সরকার পার করে এখন অন্তর্বর্তী সরকার, পরিবর্তনের অনেক অঙ্গীকার তাদের। তাদের দায়িত্ব এখন এই বিষয়ে কথা বলা এবং এই পাওনা আদায়ের পথ তৈরি করা। এটা সংস্কারের অংশ।”
#

আনু মুহাম্মদ
অর্থনীতিবিদ, সর্বজনকথার সম্পাদক ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ