বিপ্লবী কৃষ্ণাঙ্গ নারী যোদ্ধা আসাতা শাকুর আর নেই

প্রকাশিত: ৭:৪২ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৫

বিপ্লবী কৃষ্ণাঙ্গ নারী যোদ্ধা আসাতা শাকুর আর নেই

Manual5 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | হাভানা (কিউবা), ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : কিউবার রাজধানী হাভানায় নির্বাসিত জীবন কাটানো মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ বিপ্লবী আসাতা ওলুগবালা শাকুর আর নেই।

Manual8 Ad Code

দীর্ঘ রোগভোগের পর বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫) তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে কিউবায় চলে আসেন এই কৃষ্ণাঙ্গ মুক্তিযোদ্ধা। এরপর থেকে দেশটিতেই তিনি নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছিলেন।

Manual5 Ad Code

আসাতা শাকুর মূলত মার্কিন কৃষ্ণাঙ্গ মুক্তি আন্দোলনের এক কিংবদন্তি নাম। ১৯৭০-এর দশকে ব্ল্যাক প্যান্থার পার্টি ও পরবর্তীতে ব্ল্যাক লিবারেশন আর্মির সক্রিয় সদস্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। মার্কিন প্রশাসন তাঁকে কঠোরভাবে টার্গেট করে, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক কার্যক্রম স্তব্ধ করার চেষ্টা চালায়। ১৯৭৩ সালে নিউ জার্সিতে এক পুলিশ গুলিবিনিময়ের ঘটনায় হত্যার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ১৯৭৯ সালে কারাগার থেকে নাটকীয়ভাবে পালিয়ে যান তিনি।

Manual7 Ad Code

পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে কিউবা তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। সেই থেকে গত চার দশক তিনি কিউবায় অবস্থান করছিলেন এবং আন্তর্জাতিক প্রগতিশীল আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর সংগ্রামের পাশে দাঁড়াতেন। কিউবার সরকার তাঁকে “মুক্তির কণ্ঠস্বর” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

আসাতা শাকুর শুধু প্রতিরোধের প্রতীকই নন, তিনি ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গ নারী মুক্তির এক জ্বলন্ত উদাহরণ। তাঁর লেখা আত্মজীবনী Assata: An Autobiography বিশ্বজুড়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। রাজনৈতিক আশ্রয়ে থেকেও তিনি বর্ণবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও শোষণের বিরুদ্ধে লেখালেখি ও বক্তব্যের মাধ্যমে সক্রিয় থেকেছেন।

তাঁর সবচেয়ে পরিচিত উক্তি আজও আন্দোলনকারীদের কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয়:
“It is our duty to fight for our freedom. It is our duty to win. We must love each other and support each other. We have nothing to lose but our chains.”

আসাতা শাকুরের মৃত্যুতে কিউবায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শোক প্রকাশ করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কৃষ্ণাঙ্গ মুক্তি সংগঠন ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল তাঁর অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।

আসাতা শাকুরের জীবন ছিল সংগ্রামের প্রতিচ্ছবি—যেখানে নিপীড়িত মানুষের মুক্তি, স্বাধীনতা ও মর্যাদার জন্য লড়াই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে। তাঁর প্রয়াণে কৃষ্ণাঙ্গ মুক্তি আন্দোলন এক অনন্য সাহসী কণ্ঠস্বর হারালো, তবে তাঁর ডাক ও উত্তরাধিকার বিশ্বজুড়ে নিপীড়িতদের লড়াইয়ে বেঁচে থাকবে।

 

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code