বিশ্ব হার্ট দিবস আজ : হৃদরোগে প্রতি পাঁচ মৃত্যুর একটি

প্রকাশিত: ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ : হৃদরোগে প্রতি পাঁচ মৃত্যুর একটি

Manual1 Ad Code

জনস্বাস্থ্য প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃদপিণ্ড। অথচ প্রতিদিনই নানা কারণে এই অঙ্গটি ঝুঁকির মুখে পড়ছে। সচেতনতার অভাব, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে হৃদরোগ এখন মৃত্যুর শীর্ষ কারণ হয়ে উঠেছে। মানুষকে এ বিষয়ে সতর্ক করতে প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর সারা বিশ্বে পালিত হয় বিশ্ব হার্ট দিবস।

এবারের প্রতিপাদ্য— ‘প্রতিটি হৃৎস্পন্দনের গুরুত্ব দিন’। বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, চিকিৎসক সংগঠন ও স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো আজ রাজধানীসহ সারাদেশে র‌্যালি, সেমিনার, স্বাস্থ্যপরামর্শ শিবির ও সচেতনতামূলক আলোচনার আয়োজন করেছে।

বাংলাদেশে হৃদরোগের ভয়াবহ চিত্র

Manual3 Ad Code

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস–২০২২ (এসভিআরএস–২০২২) অনুযায়ী, দেশে মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হলো হৃদরোগ। মোট মৃত্যুর প্রায় ২১ শতাংশ ঘটছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। এর মধ্যে একাই হার্ট অ্যাটাকের কারণে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ মৃত্যু ঘটছে। অন্যদিকে বিভিন্ন হৃদরোগে মারা যাচ্ছেন আরও ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ, গড়ে প্রতি পাঁচটি মৃত্যুর একটি হচ্ছে হৃদরোগজনিত।

শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর ৩১ শতাংশের জন্য দায়ী হৃদরোগ। চিকিৎসকরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান, মানসিক চাপ ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এ রোগের মূল ঝুঁকি। উদ্বেগের বিষয় হলো, এসব কারণে শুধু প্রাপ্তবয়স্কই নয়, শিশু-কিশোরদের মধ্যেও হৃদরোগের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

সচেতনতার জন্য বৈশ্বিক উদ্যোগ

হৃদরোগ প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি ও বিশ্বব্যাপী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ১৯৯৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব হার্ট ফেডারেশন যৌথভাবে বিশ্ব হার্ট দিবস পালনের উদ্যোগ নেয়। তারপর থেকে প্রতিবছর ২৯ সেপ্টেম্বর দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

Manual6 Ad Code

ঝুঁকি কমানোর উপায়

Manual2 Ad Code

চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, সহজ কিছু অভ্যাস হৃদরোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম, সুষম খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান পরিহার, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। একইসঙ্গে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও রক্তচাপ-ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখাও জরুরি।

Manual3 Ad Code

বিশেষজ্ঞের মতামত

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, রাজনৈতিক সংগঠক, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট ও সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “হৃদরোগ প্রতিরোধ ও হার্টের সুরক্ষায় শুধু ব্যক্তিগত উদ্যোগ নয়, সামাজিক ও জনআন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি। স্বাস্থ্য খাতে যথাযথ বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে এবং জাতীয় পর্যায়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। এতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে হৃদরোগের ভয়াবহতা থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে।”

উপসংহার

বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ এখন হৃদরোগ। অথচ সচেতনতা ও সামান্য জীবনধারার পরিবর্তনেই এই ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিটি মানুষ যদি নিজের হৃদপিণ্ডের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি পরিবার ও সমাজে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়, তবে হৃদরোগে মৃত্যুর হার অনেকটা হ্রাস পাবে।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code