বিশ্ব শিক্ষক দিবস কাল : ‘সহযোগী পেশা’ হিসেবে শিক্ষকতাকে পুনর্গঠনের আহ্বান

প্রকাশিত: ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৪, ২০২৫

বিশ্ব শিক্ষক দিবস কাল : ‘সহযোগী পেশা’ হিসেবে শিক্ষকতাকে পুনর্গঠনের আহ্বান

Manual3 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ : আগামীকাল (৫ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস। ১৯৯৪ সাল থেকে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কোর উদ্যোগে প্রতিবছর এই দিবসটি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়। শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এ দিবসটি এখন বিশ্বের ১৬৭টি দেশে পালিত হচ্ছে।

এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য— “শিক্ষকতাকে একটি সহযোগী পেশা হিসেবে পুনর্গঠন” (Recasting teaching as a collaborative profession)— যা বাংলাদেশের চলমান শিক্ষা সংস্কার ও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপটে এক অত্যন্ত সময়োপযোগী আহ্বান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট

১৯৬৬ সালে প্যারিসে আয়োজিত শিক্ষকদের মর্যাদা সংক্রান্ত আন্তঃসরকার সম্মেলনে ইউনেস্কো এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) শিক্ষকদের অধিকার, দায়িত্ব ও মর্যাদা বিষয়ে একটি যুগান্তকারী যৌথ সুপারিশমালা প্রণয়ন করে। এতে শিক্ষকতার মর্যাদা, প্রশিক্ষণ, নিয়োগ ও পদোন্নতি, চাকরির নিরাপত্তা, পেশাগত স্বাধীনতা এবং শিক্ষানীতি প্রণয়নে অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
এই সুপারিশমালার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কোর ২৬তম অধিবেশনে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তৎকালীন মহাপরিচালক ড. ফ্রেডারিক এম. মেয়রের ঘোষণার মাধ্যমে ৫ অক্টোবর প্রথমবারের মতো বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালনের সূচনা হয়।

প্রতি তিন বছর পরপর আইএলও-ইউনেস্কো যৌথ বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত শিক্ষকদের জন্যও পৃথক সুপারিশমালা গৃহীত হয়, যা শিক্ষকতার মানোন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশে উদযাপনের প্রস্তুতি

দিবসটি উপলক্ষে দেশের সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের সম্মাননা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।

Manual6 Ad Code

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রমে “সহযোগী শিক্ষণ পদ্ধতি” বা কোলাবোরেটিভ টিচিং-এর ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে, যা এবারের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

Manual6 Ad Code

বিশেষজ্ঞ মতামত

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, ইংরেজি দৈনিক দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্ট ও সাপ্তাহিক নতুন কথা-এর বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন,
“শিক্ষক সমাজ একটি জাতির মেরুদণ্ড। কিন্তু তাদের সহযোগিতা, মর্যাদা ও নীতি-নির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব নয়। এবারের প্রতিপাদ্য আমাদের শিক্ষক সমাজকে আরও ঐক্যবদ্ধ, সৃজনশীল ও প্রভাবশালী করে তুলতে পারে।”

সামাজিক প্রতিক্রিয়া

দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থীরাও তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মুরারিচাঁদ কলেজের পদার্থবিজ্ঞান (সম্মান) বর্ষের শিক্ষার্থী সৈয়দা হাজেরা সুলতানা তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন—
“I’m truly blessed with my teacher’s prayers, love and wisdom. Thank you for inspiring me, believing in me when I doubted myself. ????
With all my love, respect, and gratitude to those beautiful souls who turned knowledge into inspiration and lessons into life.
Happy Teacher’s Day! ????????”

বিশ্বব্যাপী প্রভাব

Manual6 Ad Code

বর্তমানে এডুকেশন ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী ৪০১টি সদস্য সংগঠন এই দিবসটি পালনে মূল ভূমিকা রাখছে। সংগঠনটি বিশ্বের প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ শিক্ষকের প্রতিনিধিত্ব করে, যা শিক্ষকদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় বৈশ্বিক সংহতির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

উপসংহার

Manual8 Ad Code

শিক্ষক দিবস শুধু কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন নয়, এটি শিক্ষার ভবিষ্যৎ গড়ার আহ্বানও বটে। সহযোগিতামূলক পেশাগত সংস্কৃতি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অংশীদারিত্বমূলক শিক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষকতা পেশাকে আরও মর্যাদাপূর্ণ ও প্রভাবশালী করে তোলাই এবারের দিবসের মূল বার্তা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code