সিলেট ১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৫
বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৮ অক্টোবর ২০২৫ : আগামীকাল ৯ অক্টোবর বিশ্ব ডাক দিবস।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডাক অধিদপ্তর এ দিবসটি পালন করবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ডাক ভবনে দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
এ বছরের বিশ্ব ডাক দিবসের প্রতিপাদ্য— ‘জনগণের জন্য ডাক : স্থানীয় পরিষেবা, বৈশ্বিক পরিসর’ (Post for People : Local Service, Global Reach)। যার উদ্দেশ্য হলো জনগণের সঙ্গে সরকারের সংযোগ বৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়নে ডাক সেবার ভূমিকা তুলে ধরা এবং আধুনিক ডাক ব্যবস্থার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বুধবার (৮ অক্টোবর ২০২৫) বিকেল চারটায় রাজধানীর ডাক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বক্তব্য রাখবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
এছাড়া দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনও তিনিই করবেন। এরসাথে আরও উপস্থিত থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান, আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডাক বিভাগের কর্মকর্তা–কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি।
আর দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির প্রথম দিন (৯ অক্টোবর) সকাল ৮টায় ডাক ভবন প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে, যা আগারগাঁও ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে ‘আগামীর ভাবনায় ডাক’ শীর্ষক সেমিনার, যেখানে ডাক সেবার ডিজিটাল রূপান্তর ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা মতবিনিময় করবেন।
এরপর দ্বিতীয় দিন (১০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে হবে সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবেন বলেও জানানো হয়েছে।
১৮৭৪ সালের ৯ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের বার্ন শহরে ২২টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গঠিত হয় ‘ইউনির্ভাসেল পোস্টাল ইউনিয়ন’। পরবর্তীতে এ সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে ১৯৬৯ সালে ৯ অক্টোবরকে বিশ্ব ডাক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ইউনিভার্সেল পোস্টাল ইউনিয়ন (ইউপিইউ) এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্য পদ লাভ করে। এরপর থেকে দেশে প্রতিবছর বিশ্ব ডাক দিবস পালিত হয়ে আসছে।
আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো চিঠিপত্রের যুগ শেষ হওয়ায় দুর্দশাগ্রস্থ ডাক সার্ভিসকে একটা ভাল অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ্যে সেটা অনেকটা পেরেছি। ই-কমার্সের জন্য ডাকঘর এখন একটা নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
দেশব্যাপী ডাকঘরের যে বিশাল অবকাঠামো ও জনবল আছে তা দেশের অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের নেই। হিমায়িত খাবার থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় ক্রেতার হাতে পৌঁছে দিতে ডাকঘরের বিকল্প নেই।
করোনাকালে কৃষকের ফল, সবজী পরিবহন থেকে শুরু করে চিকিৎসা সরঞ্জাম পৌঁছে দিতে ডাক সেবার অবদান উল্লেখ করা যায়। জরুরী সেবার আওতায় ডাকঘর একদিনের জন্যও বন্ধ রাখা হয়নি। ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রায় প্রেরক এবং গ্রাহকগণ ডাকদ্রব্যের সর্বশেষ অবস্থান বা বিতরণের তথ্য ট্রেক করেই জানতে পারছেন।
ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের অভিযাত্রার ধারাবাহিকতায় পয়েন্টস অব সেলস মেশিনের মাধ্যমে ডাকদ্রব্যে সংযুক্ত বারকোড স্ক্যান করে প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুটসহ প্রেরক প্রাপকের ঠিকানার ছবি সংযুক্ত করে বুকিং সম্পন্ন করার ফলে গ্রাহকগণ সহজেই বারকোড স্ক্যান করে তাদের ডাকদ্রব্যের অবস্থান শনাক্ত করতে পারছেন।
এছাড়াও গ্রাহকদের সুবিধার্থে ঢাকা জিপিওসহ গুরুত্বপূর্ণ ডাকঘরসমূহে ডিজিটাল সিরিয়াল সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
ডিজিটাল যুগের উপযোগী ডাক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ডাকঘর ডিজিটাইজেশনের পথ নকশা তৈরি করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই তা বাস্তবায়ন শুরু হবে। ইতোমধ্যে ১৪টি শর্টিং সেন্টার নির্মাণ ও ডিজিটাইজ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রেলে চিলিং বগি ও ডাকের অন্যান্য গাড়িতে চিলিং ভ্যান চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।
ডাক ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজ করার পাশাপাশি কর্মরত ৪৫ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারীকেও ডিজিটাল দক্ষতা প্রদানের মাধ্যমে ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে উৎপাদনমুখী কর্মকান্ডের ডিজিটালাইজেশনের ভিত তৈরি হয়েছে।
ডাক বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি করা এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহসাই ডাকসেবা কাঙ্খিত মানে উন্নীত হবে।
করোনাকালে দেশের সকল জিপিও, প্রধান ডাকঘর সমূহ জরুরি প্রয়োাজনে জনস্বার্থে সীমিত পরিসরে খোলা রাখার সিদ্ধান্তটি ছিল মানুষের অচল জীবনযাত্রা সচল রাখার অত্যন্ত কার্যকর একটি পদক্ষেপ। এসময় এ সকল ডাকঘর থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের লেনদেনের পাশাপাশি সীমিত আকারে ডিজিটাল-কমার্স, মোবাইল মানি অর্ডার এবং পার্সেল সেবা প্রদানের জন্য কাউন্টার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ রাজধানীর তেজগাঁও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম পিপিই, কিটস এবং গণসচেতনতা মূলক লিফলেট ইত্যাদি সামগ্রী বিনা মাশুলে দেশব্যাপী অতি দ্রুততার সাথে পাঠানো হয়।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি